রবিবার, ১১ মে, ২০২৫  |   ৩১ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

প্রকাশ : ২০ জুন ২০২৩, ১০:০৪

যে মৃত্যুতে সান্ত্বনা দেয়া অনেক কষ্টকর

অনলাইন ডেস্ক
যে মৃত্যুতে সান্ত্বনা দেয়া অনেক কষ্টকর

বাস, ট্রাক, ট্রাক্টর, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশা নয়, ইজিবাইক বা অটোবাইক কিংবা রিকশা দুর্ঘটনায় কারো প্রাণ হারানোটা তার স্বজনদের জন্যে সত্যিই অনেক কষ্টকর। এমন একটি প্রাণ হারানোর ঘটনাই ঘটেছে গত ১৬ জুন শুক্রবার। হাইমচরে অটোবাইক দুর্ঘটনায় খোকন সিকদার (৪৫) নামে একজন মৎস্য ব্যবসায়ী মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারিয়েছেন। ওইদিন ভোর ৬টায় চরভৈরবী ইউনিয়নের সাবু মাস্টার মোড়ে ব্যাটারিচালিত একটি অটোবাইক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত খোকন চাঁদপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের যমুনা রোড নিবাসী মরহুম নূরু মিয়া সিকদারের ছেলে। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, খোকন সিকদার প্রতিদিনের মত ভোরে পাইকারী মাছ কেনার জন্যে অপরাপর ব্যবসায়ীদের সাথে অটোবাইকে করে চাঁদপুর থেকে হাইমচরের চরভৈরবী মাছ ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথিমধ্যে হাইমচর-চরভৈরবী সড়কের সাবু মাস্টার মোড় এলাকায় অটোবাইকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গেলে খোকন সিকদার ছিটকে গিয়ে অটোবাইকের নিচে চাপা পড়েন। সেখান থেকে অটোবাইকের ড্রাইভার দেলোয়ারসহ অন্যরা মিলে তাকে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের স্ত্রী নাজমুন নাহার বলেন, ফজরের আজানের সময় সে আমার বাসা থেকে বের হয়ে মাছ কিনতে যায়। আমরা তার মৃত্যুর খবর পেয়ে হাইমচর হাসপাতালে ছুটে যাই।

খোকন সিকদার তার মৃত্যুকালে স্ত্রী ও শিশু-কিশোর ছেলেমেয়েদের রেখে যান। তার আদরের ছোট্ট মেয়ে সুমাইয়া সিকদার নোভা চাঁদপুর শহরের রেলওয়ে কিন্ডারগার্টেনে পঞ্চম শ্রেণীতে পরীক্ষা চলাকালীন তার বাবাকে চিরদিনের জন্যে হারিয়েছে। যে বাবা পরীক্ষার হলে মেয়েকে দিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতেন পরীক্ষা শেষে বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্যে। রোববার বাবা দিবসে সেই মেয়েটি বাবাকে ছাড়াই পরীক্ষার হলে এসেছে এবং শোকাহত অবস্থায় পরীক্ষা দিয়েছে। এভাবে বাবাকে ছাড়াই তার বাকি শিক্ষা জীবন সহ জীবনের দীর্ঘটা সময় কাটাতে হবে। একজন ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ীর পরিবার তার অকাল মৃত্যুতে কতোটা সঙ্কটে পড়তে পারে এবং কতোটা কষ্টকর ও সংগ্রামমুখর হতে পারে তাদের জীবন, সেটা সহজেই অনুমেয়। রোগাক্রান্ত হয়ে যদি কেউ অকালে মারা যায়, তাহলে তার পরিবার সেই মৃত্যুর শোকটাকে যতোটা সহজভাবে নেয়, কোনো দুর্ঘটনায় কারো অকাল মৃত্যুকে সেভাবে নিতে পারে না। এমন মৃত্যুতে নিহতের আত্মীয় স্বজন, শুভাকাক্সক্ষী, প্রতিবেশীরা শোকাহত পরিবারকে সান্ত্বনা জানানোর কাজটা হয়ে দাঁড়ায় অনেক কষ্টকর। যথাযথ সান্ত্বনা দিতে না পেরে অনেকে অশ্রু সংবরণ করতে পারে না।

আমরা অটোবাইক দুর্ঘটনায় অকালে প্রাণ হারানো খোকন সিকদার সহ এভাবে বিভিন্ন স্থানে অকালে প্রাণ হারানো মানুষের জন্যে গভীর শোক প্রকাশ করছি, শোক সন্তপ্ত প্রতিটি পরিবারকে জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা এবং মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর দরবারে এই আরজি জানাচ্ছি যে, তুমি শত্রুকেও এমন মৃত্যু দিও না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়