মসজিদে মসজিদে হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের

সম্মুখ সারির অকুতোভয় যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনায় চাঁদপুরের মসজিদে মসজিদে শুক্রবার জুমার নামাজে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর ২০২৫) জুমার নামাজের মুনাজাতে এবং নামাজ শেষে চাঁদপুর জেলা শহরের বৃহৎ পুরাণবাজার ঐতিহাসিক বড় মসজিদসহ বিভিন্ন মসজিদে এ দোয়া হয়।

গুরুতর অসুস্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করেও দোয়া করা হয়।

আল্লাহ যাতে হাদির শোকসন্তপ্ত পরিবারকে ধৈর্য ধারণের শক্তি দেন--মোনাজাতে এই দোয়া করা হয়।

বিপুল সংখ্যক মুসল্লি এই দোয়ায় অংশ নেন।

জুমার নামাজের খুতবার আলোচনায় খতিবগণ সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠার তাগিদ দেন। তারা হত্যা, গুম ও অন্যের সম্পদ আত্মসাতের বিরুদ্ধে ইসলামের কঠোর হুঁশিয়ারির কথাও সকলকে স্মরণ করিয়ে দেন।

পুরাণবাজার বড়ো মসজিদের খতিব মুফতি ইব্রাহিম খলিল জুমার নামাজ শেষে মোনাজাতে বলেন, ওসমান হাদি জুলুমের বিপক্ষে ইনসাফ, ন্যায় ও ইসলামের পক্ষে ছিলেন। আল্লাহ যাতে ওসমান হাদির স্ত্রী, পিতা-মাতাসহ পরিবারের সদস্যদের এ শোক সইবার শক্তি দেন।

সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ১০টায় মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর মৃত্যুতে শুক্রবার সারাদেশে বাদ জুমা বিশেষ দোয়া ও কফিন মিছিলের আহ্বান করেছে জুলাই ঐক্য।

বৃহস্পতিবার রাতে এক বার্তায় জুলাই ঐক্য জানায়, ওসমান বিন হাদির মৃত্যুতে সারাদেশে সব মসজিদে বাদ জুমা বিশেষ দোয়া এবং কফিন মিছিলের আহ্বান করেছে জুলাই ঐক্য।

বার্তায় বলা হয়, শহীদ ওসমান বিন হাদি আমাদের জুলাইয়ের অস্তিত্ব। তাঁর প্রতি ফোঁটা রক্তের বদলা বাংলাদেশের মাটিতে নেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ। আমরা দেশের বিপ্লবী সব জনগণকে ধৈর্য ধারণ করার অহ্বান জানাচ্ছি।

হাদি আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকা-৮ আসনের একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। মতিঝিলে জুমার নামাজ পড়ে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ করেন তিনি।

এরপর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাওয়ার পথে ওই দিন দুপুর ২টা ২০ মিনিটে হাদিকে বহনকারী অটোরিকশা পল্টন মডেল থানার বক্স কালভার্ট এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেলে থাকা দুষ্কৃতকারীরা হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অপারেশন শেষে এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরবর্তী সময়ে উন্নত চিকিৎসার জন্যে তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়।