প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২৫, ০১:৫৮
জলমগ্ন চাঁদপুর সিজিএম আদালত প্রাঙ্গণ
বিচারপ্রার্থীদের চরম ভোগান্তি

ক্যাপশন: চীফ জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালতের টিনশেড ভবনের সামনের অংশের মাঠটি একটু বৃষ্টি হলে এভাবেই পানিতে ভরপুর হয়ে যায়।
ছবি : ইয়াসিন ইকরাম
বিচারিক সেবা নিতে চাঁদপুর জেলার আট উপজেলার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন আদালত প্রাঙ্গণে আসেন। আর সেই প্রাঙ্গণই জলমগ্ন অবস্থায়।
চাঁদপুর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজিএম) আদালতের টিনশেড ভবনের সামনের অংশের মাঠটি সামান্য বৃষ্টিতেই জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এতে বিচারপ্রার্থীদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। যার ফলে সেবা নিতে আসা লোকজন, আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আইনজীবীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
হেঁটে যাওয়া কিংবা দাঁড়ানোর সুযোগ নেই টিনশেড ভবনের সামনের অংশটুকুতে। সেবাপ্রার্থীদের দাবি, দ্রুত সময়ে যেন টিনশেড ভবনের সামনের অংশটুকু (খোলা মাঠ) মাটি দিয়ে উঁচু করে দেয়া হয়।
সরজমিনে আদালত (টিনশেড ভবনের সামনে) প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা গেছে এই দুর্ভোগের চিত্র। কথা হয় সেবা নিতে আসা বেশ কয়েকজনের সাথে। তারা জানালেন ভোগান্তির কথা।
টিনশেড ভবনের সামনের খালি জায়গাটি পুরোটাই পানিতে থাকে টইটম্বুর। চাঁদপুর সদরের চান্দ্রা এলাকা থেকে আসা নাছির উদ্দিন বলেন, “মামলার কাজে এসে দেখি আদালতের সামনে প্রায় হাঁটু সমান পানি। বৃষ্টি হলেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।” আদালতের সামনে এখন দাঁড়ানোর সুযোগ নেই।
হাজীগঞ্জ উপজেলা থেকে আসা আরেক বিচারপ্রার্থী মিজানুর রহমান বলেন, “এখানে প্রতিদিন শত শত মানুষ আইনি সেবা নিতে আসেন। বিচারিক কাজ সাধারণত বিলম্বিত হয়। এ সময় লোকজন সামনের খালি জায়গায় গাছের নিচে কিছুটা হলেও অপেক্ষা করতে পারে। কিন্তু বৃষ্টি হলে আর দাঁড়ানো সম্ভব হয় না।”
আদালত এলাকার বাসিন্দা মনজুরুল ইসলাম তালুকদারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ার ফলে এই মাঠটি পানিতে ভরে যায়। আদালতের আশপাশে বিভিন্ন ডোবা যখন পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়, তখন আর এখানকার পানি বের হওয়ার কোনো জায়গা থাকে না।
তাই পুরো প্রাঙ্গণটি জলমগ্ন হয়ে থাকে। চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের টিনশেড ভবনের সামনের অংশটুকু নিচু হওয়ার কারণেই এখানে পানি জমে থাকে। এছাড়া আদালতের আশপাশে বিভিন্ন বাড়িঘর ও বহুতল ভবন নির্মাণ হওয়ায় পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই। জলমগ্ন হওয়ার এটিও একটি কারণ।
জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাড. তোফায়েল হোসেন বলেন, “চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের টিনশেড ভবনের সামনের অংশটি পুকুরের মতো অবস্থা হয়ে আছে। এখানে বিচারপ্রার্থীরা এসে দাঁড়ানোর অবস্থা নেই। আসামী কিংবা বিচারপ্রার্থী সবারই এখন ভোগান্তি।”
তিনি আরো বলেন, “এই সামনের জায়গাটুকু বালু দিয়ে ভরাট করে একটু উঁচু করে দিলে বিচারপ্রার্থীরা এখানে এসে দাঁড়াতে পারবে এবং বিচারপ্রার্থীদের দাঁড়ানোর জন্যে একটা ঘর নির্মাণ করাও প্রয়োজন বলে মনে করি।”
চাঁদপুর জেলা জজ আদালতের নাজির শাহআলম বলেন, “টিনশেড ভবনটির সামনের অংশটি যদি বিল্ডিং করা হয়, তাহলে খালি জায়গাটি ভরাট হয়ে যাবে।” এছাড়া গণপূর্ত বিভাগ মাটি দিয়ে যদি এই সামনের অংশটুকু ভরাট করে দেয়, তাহলে বিচার প্রার্থীদের আর দুর্ভোগে থাকতে হবে না।
ডিসিকে/এমজেডএইচ