প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫৪
জনমানুষের নেতা দেলোয়ার হোসেন মিয়াজী

২১ জুলাই শাহরাস্তির জনমানুষ আজও গভীর শ্রদ্ধা আর বেদনায় স্মরণ করছে এক সময়ের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, মহান রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষানুরাগী, সমাজহিতৈষী দেলোয়ার হোসেন মিয়াজীকে। আজ তাঁর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। দু মেয়াদে (৯ বছর, মেয়াদ শেষ হওয়ার ১ বছর আগে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন) শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এই নেতা শুধু একটি দলের পরিচয়ে সীমাবদ্ধ ছিলেন না, ছিলেন সর্বস্তরের মানুষের অভিভাবক। দীর্ঘ ১৮ বছর উপজেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করলেও তাঁর রাজনৈতিক জীবন কখনো দলীয় সংকীর্ণতায় আবদ্ধ হয়নি। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তাঁর আচরণে ছিলো না দাম্ভিকতার লেশমাত্র, আর বিরোধী দলে থেকেও তিনি রক্ষা করেছেন দলের সম্মান, নেতাকর্মীদের সাহস ও সংগঠনের ঐক্য।
রাজনৈতিক প্রভাবকে কখনোই নিজের স্বার্থে ব্যবহার করেননি তিনি। বরং মানুষের দুঃখ-কষ্ট লাঘবে তিনি ছিলেন সব সময় দৃঢ় ও সহানুভূতিশীল। অসুস্থদের চিকিৎসা সহায়তা থেকে শুরু করে কন্যাদায়গ্রস্ত বাবার পাশে দাঁড়ানো, দরিদ্র শিক্ষার্থীর বই বা ফরম ফি দেওয়ার মতো অসংখ্য জনকল্যাণমূলক কাজে তিনি নিজের অর্থ ব্যয় করেছেন নীরবে।
শুধু তাই নয়, এলাকার বিভিন্ন মসজিদে ইট সরবরাহ থেকে শুরু করে আধুনিকায়নের পেছনে ছিলো তাঁর নীরব অবদান। যাঁরা কাছ থেকে তাঁকে দেখেছেন, তারা জানেন—এই মানুষটির মধ্যে ছিলো না কোনো অহংকার, ছিলো শুধু মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা।
রাজনৈতিক শুদ্ধাচার, দানশীলতা, শিক্ষা-সমাজ উন্নয়নে তাঁর অবদান আজও এলাকাবাসীর মনে অম্লান হয়ে আছে। তাঁর মৃত্যুতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা পূরণ হয়নি এখনো। কারণ, তিনি ছিলেন শুধু একটি নাম নয়, ছিলেন এক প্রেরণার উৎস, আদর্শ রাজনীতির প্রতীক।
আজ এই দিনে আমরা তাঁকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি। তাঁর কর্ম ও আদর্শ নতুন প্রজন্মের রাজনীতিকদের জন্যে হোক পাথেয়। শাহরাস্তির আকাশে বাতাসে তিনি বেঁচে থাকবেন—সততা, উদারতা ও জনসেবার এক উজ্জ্বল মানচিত্র হয়ে।
লেখক : গণমাধ্যম, সমাজ ও সংস্কৃতিকর্মী।