প্রকাশ : ২৩ জুন ২০২৫, ১৭:১৫
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কাঁপছে ইসরায়েল
আকাশে বিস্ফোরণ, বেজে চলছে সাইরেন!
তেল আবিব থেকে হাইফা পর্যন্ত আতঙ্ক ছড়াল; আন্তর্জাতিক মহলে চরম উদ্বেগ

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ ফের চরমে। ইরান থেকে ছোড়া একাধিক ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্যবস্তু হয়েছে ইসরায়েল। এর জেরে দেশটির একাধিক শহরে সতর্কতা সাইরেন বেজে ওঠে, আকাশে দেখা যায় বিস্ফোরণের আলোর ঝলকানি।
|আরো খবর
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ (IDF) জানায়, ইরান থেকে ছোড়া বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্র আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিহত করা হয়েছে। তবে কিছু হামলা সুরক্ষা বলয়ের বাইরে গিয়ে আঘাত হেনেছে, যেটি প্রাণহানির আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে।
“আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। প্রতিটি আক্রমণের যথাযথ জবাব দেওয়া হবে,” বলেন আইডিএফ মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি।
বিস্ফোরণে কাঁপল তেল আবিব, আশদোদ ও হাইফা
শনিবার গভীর রাতে তেল আবিব, হাইফা, আশদোদ ও আশকেলনে বিস্ফোরণের শব্দে থমকে যায় রাতের নিস্তব্ধতা।
সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, আকাশে ইসরায়েলের ডিফেন্স সিস্টেম ‘আয়রন ডোম’ বিস্ফোরণ প্রতিহত করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। বহু এলাকায় মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
ক্ষয়ক্ষতি ও আহতের সংখ্যা
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আধুনিক প্রযুক্তির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পরও বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্র শহরাঞ্চলে আঘাত হানে। এতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে কিছু এলাকা। এখন পর্যন্ত আহত হয়েছেন অন্তত ২১ জন।
ইরানের অবস্থান: এটি "প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ"
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ‘আল-আলাম’ জানায়, “শত্রুপক্ষের আগ্রাসনের জবাবে আমরা প্রয়োজনীয় সামরিক পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছি।”
তবে ইরান সরকার একে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ নয়, বরং প্রতিরক্ষামূলক অভিযান বলে দাবি করছে। ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের (IRGC) এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যদি ইসরায়েল হামলা বন্ধ না করে, তাহলে এর চেয়েও কঠোর জবাব প্রস্তুত আছে।”
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনলে তা সহজেই পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধে রূপ নিতে পারে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া: উদ্বেগ ও সমর্থনের ঘোষণা
যুক্তরাষ্ট্র:
হোয়াইট হাউস প্রেস সেক্রেটারি বলেন, “আমরা ইসরায়েলের পাশে আছি। যেকোনো শত্রুতার জবাব দিতে আমাদের প্রতিরক্ষা মিত্র প্রস্তুত।”
জাতিসংঘ:
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক বিবৃতিতে বলেন, “উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাই। শান্তিপূর্ণ সমাধানই একমাত্র পথ।”
যুদ্ধের ছায়া: ইতিহাস কি আবার ফিরে আসছে?
১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধের পর এই প্রথম সরাসরি এমন আক্রমণের মুখোমুখি হলো ইসরায়েল। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি কেবল একটি সামরিক সংঘর্ষ নয়, বরং একটি বৃহৎ আঞ্চলিক উত্তেজনার উদ্বোধন।
সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এই পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হলে পরিণতি হতে পারে দ্বিতীয় বড় আঞ্চলিক যুদ্ধ।
জনজীবনে তীব্র প্রভাব
- ✈ বিমান চলাচল স্থগিত
- স্কুল-কলেজ বন্ধ
- খাবার ও পানীয় মজুতে হিড়িক
- আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড়
তথ্যসূত্র: The Guardian | The Times of Israel | Economic Times | WSJ | CBS News | Al Alam (Iran) | UN Press
ডিসিকে/এমজেডএইচ