সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   এসএসসি সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ

প্রকাশ : ০১ মে ২০২৪, ২১:৩১

৫ বছরেও শেষ হয়নি হাইমচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনের কাজ

রোগীদের ভোগান্তী চরমে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত

মোঃ সাজ্জাদ হোসেন রনি
৫ বছরেও শেষ হয়নি হাইমচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনের কাজ

পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নতুন ভবনের কাজ। যার ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগীদের। চিকিৎসা সেবা ব্যহত হচ্ছে চরম ভাবে। একদিকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ অন্য দিকে বেডও পাচ্ছেন না রোগীরা। তীব্র গরমে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা অসুস্থতা নিয়েই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মান কাজ শেষ করার মেয়াদ ৬ বার বাড়ানো হলেও এখনো শেষ হচ্ছে না কাজ। কাজের শেষ পর্যায়ে এসে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে রেখেছে ঠিকাদার।

স্বাস্থ কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায় ১৯৯৫ সালের ১৯ জুন হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১৯৯৮ সালের ২৩ মে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর অব. মো. রফিকুল ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতালটি উদ্বোধন করেন। এ সময় সংযোজন করা হয় অত্যাধুনিক এক্স-রে মেশিন, অপারেশন থিয়েটার, শক্তিশালী জেনারেটরসহ চিকিৎসা সহায়ক বিভিন্ন সুবিধাদি। পরবর্তী সময়ে পরিবেশগত কারণে এ সকল সুবিধা থেকে পুরোপুরিভাবে বঞ্চিত হয় সাধারণ মানুষ। এক্স-রে মেশিন, অপারেশন থিয়েটার, শক্তিশালী জেনারেটর অকেজো হয়ে যায়

২০১৯ সালে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নতুন ভবনের কাজ শুরু হয়। ২০২১ সালে কাজ শেষ করে হস্তান্তর করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার। যার ফলে অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে পুরানো ভবনে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পুরাতন ভবনে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা যেমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন তেমনি চিকিৎসকগনও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা সেবা দিতে তাদেরও কষ্ট হচ্ছে। গত বছরের শেষের দিকে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখনও কাজ শেষ করছেন না ঠিকাদার। নতুন ভবনে চিকিৎসা সেবা শুরু হলে রোগীরা যেমন স্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা পেত তেমনি ডাক্তারগনও চিকিৎসা সেবা দিতে সুযোগ পেতো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্টাফ জানান, হাসপাতালের পুরাতন জরাজীর্ণ ভবনে অস্বাস্থকর পরিবেশে চিকিৎসা সেবা গ্রহন ও প্রদান দুটোই কষ্টকর। তীব্র গরমে চিকৎসা নিতে আসা রোগীদের প্রথমে একটি বেড প্রয়োজন হয়। রোগীতো বেড দিতে পারি না, চিকিৎসাতো পরের বিষয়। এ হাসপাতলে রোগী ও ডাক্তার একই পরিবেশে থাকতে হয়। গত এক সপ্তায় ৪ জন ডাক্তার বদলী হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। এমন পরিবেশ অব্যাহত থাকলে হাইমচরবাসীর জন্য সামনে আরও খারাপকিছু ঘটতে পারে। স্বাস্থকর পরিবেশে চিকিৎসা সেবা দিতে হলে নতুন ভবনে চিকিৎসা সেবা শুরু করতে হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আরএমও ডাক্তার মামুন রায়হান জানান, নতুন ভবন টেন্ডার হওয়ার পর আমাদের হাসপাতালের পুরনো ভবনের একাংশ ভেঙ্গে ফেলা হয়। আমরা অবশিষ্ট পুরনো ছোট ভবনে আমাদের চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছি। এক রুমে চার জন ডাক্তার বসে দৈনিক পাঁচশত রোগী দেখতে হয়। এতে আমাদের যতটা কস্ট হয় তার চাইতে বেশি চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের কস্ট পেতে হয়। রোগীরা যে বেডে থাকে তা অনেক অমানবিক। চিকিৎসা সেবা নিয়ে একজন রোগীকে সুস্থ হতে একটি সুস্থ পরিবেশ প্রয়োজন যা এ হাসপাতালে নেই।

এতে করে আমরা আমাদের সেবাটুকু সঠিকভাবে দিতে পারছি না। সাধারণ মানুষ ও অনেক কষ্ট সহ্য করে হসপিটালে থেকে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। ২০২১ সালে নতুন ভবন হস্তান্তর করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত ঠিকাদার তার কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি। আমরা আশা করেছিলাম ২০২৪ সালের নতুন বছর নতুন ভবনে স্বাস্থ কমপ্লেক্সের সেবা প্রদান করতে পারবো। এবছরও নতুন ভবনে চিকিৎসা সেবা চালু করতে পারবো কি না সন্দিহান।

হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ৬ বার মেয়াদ বাড়ানোর পরও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নতুন ভবনের কাজ শেষ করছে না ঠিকাদার। এখন আবার তারা জুন মাস পর্যন্ত সময় নিয়েছে। যেটুকু কাজ বাকি আছে তা ঠিকাদার চাইলে এক মাসেই শেষ করে দিতে পারে। বর্তমানে কাজ বন্ধ করে রেখে দিয়েছে। রোগী ও ডাক্তারদের ভোগান্তী কমাতে হলে নতুন ভবনে চিকিৎসা সেবা চালু করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়