প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০২৫, ০১:৫৭
যেখানে স্মৃতিরা হঁাটে খালি পায়ে

কাজী নজরুল ইসলাম নজু
যেখানে স্মৃতিরা হঁাটে খালি পায়ে
একটা সময় ছিল,
যখন সন্ধ্যা মানেই মানুষের শব্দ, হাসির ভিড়,
কোনো না কোনো দরজা খুলে যেত চায়ের নিমন্ত্রণে।
এখন সন্ধ্যা নামে শব্দহীন।
ঘরভর্তি আলো থাকলেও,
মনের ভেতর কোথাও একটা অন্ধকার লেগেই থাকে।
কারও নাম মনে পড়ে, মুখ নয়Ñ
কারও মুখ মনে পড়ে, নাম নয়।
সবকিছু আবছা হয়ে গেছে,
যেন অনেক দূরের স্বপ্ন দেখেছিলাম একদিন।
আসলে আমি কোথায় ছিলাম, কার মধ্যে ছিলামÑ
জানি না।
শুধু মাঝে মাঝে মনে হয়,
একটা উঠোন ছিল,
একটা গাছ ছিল,
একটা বিকেল ছিল
যেখানে আমি হঁাটতাম।
এখন হঁাটি,
কিন্তু ঠিক কোথা থেকে কোথায়,
জানি না।
এক সময় আমাদের বাড়ির উঠোন ছিলো মুখরিত।
সকাল হতো চিৎকারে, বিকেল কাটতো দৌড়াদৌড়িতেÑ
টিনের চালে ফুটে ওঠা রোদ,
নালার ধারে মারামারি,
জেঠি আম্মার ঘরের পেছনের সেই ডুমুর গাছটাÑ
যেটার ডালে ডালে পেকে যেতো ছোট ছোট ডুমুর ফল,
ঝরে পড়তো নীরবে, মাটিতে রয়ে যেতো অজস্র চিহ্ন
আমার ফেলে আসা শৈশবের।
পাশেই সেই বঁাশঝাড়,
যার ভেতর থেকে দিনে কিংবা রাতে
ভেসে আসতো এক অদ্ভুত, রহস্যময় শব্দ।
কখনো হাওয়া, কখনো পাখার ডানা,
আবার কখনো মনে হয় কেউ ডেকে উঠলো দূরে কোথাও।
সময় পেরিয়ে গেছে,
কিন্তু সেই গাছ, সেই আওয়াজÑ
আজও কি রয়ে গেছে ঠিক আগের মতোই?
ওখানে এখনও বিকেল নামে সন্ধ্যে নামে
শুধু আমি নেই সেখানে
আমি যেনো আজও শুনি,
ডুমুর ঝরার শব্দ আর বঁাশঝাড়ের গোপন ডাকÑ
শৈশবকে ছুঁয়ে আসার এক নিঃশব্দ উপায় যেন।