মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫  |   ২৯ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫, ০৯:০০

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি বনাম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুর সুরক্ষা

মাহফুজুর রহমান মানিক
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি বনাম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুর সুরক্ষা

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার ক্ষত এখনও আমাদের তাড়িত করে। শিশুদের হতাহতের ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুর সুরক্ষার বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে। শিশুদের জন্য নিজ ঘরকে সবচাইতে নিরাপদ মনে করা হয়; সেখানে মা-বাবার কাছে থাকে তারা। শিক্ষার জন্য শিশুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। সে জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেও নিরাপদ হতে হয়। এ বিমান দুর্ঘটনায় তাই প্রশ্নটি আবার উঠছে, আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কতটা নিরাপদ? বিমান দুর্ঘটনায় ইতোমধ্যে অনেক নিষ্পাপ শিশুর প্রাণ ঝরেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অনেক শিশু। বৃহস্পতিবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, এখন পর্যন্ত যে ২৯ জন নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে, তাদের পরিচয় ও বয়স শনাক্ত করা গেছে এমন ১৮ শিক্ষার্থীর সবার বয়স ১৫ বছরের নিচে। নিহত ও চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের বয়স বিবেচনা করলে দেখা যায় ১২ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি, ৩৬। এদের মধ্যে আবার ১০ বছরের কম বয়সের শিক্ষার্থী ২১ জন।

উত্তরার ঘটনা কতটা গুরুতর তা এমনকি সমকাল অনলাইনে প্রকাশিত বিমান বিধ্বস্ত হয়ে আছড়ে পড়ে স্কুলে, বিশ্বে আরও যত ঘটনা শীর্ষক সংবাদে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের ঘটনায়ই সবচাইতে বেশি শিশু হতাহত হয়েছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এর অবস্থানটিও গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের সময় আবাসিক এলাকা বা জনবসতি থেকে একটি উপযুক্ত দূরত্ব বজায় রাখা উচিত। কিন্তু রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনে বিষয়টি তেমন আমলে নেওয়া হয়নি। বিমানবন্দর-লাগোয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনুমোদনের বিষয়টিই বিস্ময়কর।

এর আগে আমরা নীলফামারী, খাগড়াছড়ি ও সাতক্ষীরায় স্কুল গেট পড়ে শিশুর মৃত্যু দেখেছি। খাগড়াছড়ির ঘটনায় ঢোকার সময় স্কুলের গেট ভেঙে পড়ে। পাঁচ বছরের শিশুটির ক্লাসে আর ঢোকা হয়নি। উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত সংস্কার, টিউবওয়েল মেরামত, লাইট-ফ্যান ঠিক রাখা, চেয়ার-টেবিল মেরামতসহ এ ধরনের কাজে প্রতিবছর বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর বাইরেও জরুরি হলে স্থানীয় শিক্ষা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে মেরামত করার ব্যবস্থা দরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি শিশুর নিরাপদ আশ্রয় না হয়; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে অভিভাবকরা যদি স্বস্তিতে থাকতে না পারেন, তার চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে। মাইলস্টোনের ঘটনা আমাদের অপরাধী করে গেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আর কোনো শিশুর জন্য যাতে এভাবে মৃত্যুর কারণ না হয়, সে শিক্ষা নিতেই হবে। বিশেষ করে বিদ্যালয়ের অবস্থান বিবেচনা জরুরি। এ ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রশাসনের তৎপরতা গুরুত্বপূর্ণ। যাতে তারা এমন স্থানে প্রতিষ্ঠানের অনুমতি না দেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়