রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ১১:১৪

নারীদের অনলাইনে প্রতারণা চক্রের মূল হোতা র‌্যাবের হাতে আটক

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

অনলাইনে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে নারীর অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের মূল হোতা র‌্যাব-১১ কর্তৃক গ্রেফতার করেছে

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-১১।

গত ০৫ নভেম্বর ২০২৫ প্রতারণার ফাঁদে পা দেওয়া কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানা এলাকার একজন ভুক্তভোগি নারী র‌্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লা ক্যাম্পে উপস্থিত হয়ে অজ্ঞাতনামা বিবাদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে, বিবাদীরা তার টিকটক আইডিতে নক করে তার সাথে যোগাযোগ করে তাকে অনলাইনে চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে রেজিস্ট্রেশনের কথা বলে কিছু তথ্য ও কিছু ছবি সংগ্রহ করে। সেসব ছবি এডিট করে নগ্ন ছবি ও ভিডিও তৈরি করে নারীটিকে দেখিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে বিকাশ, নগদ ও রকেট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে সর্বমোট ৭,০০,০০০/-(সাত লাখ) টাকা আত্মসাৎ করে। পরবর্তীতে আরো টাকার দাবিতে বিবাদীগণ ভিকটিমের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে ফেসবুকের প্রোফাইল পিকচারে তার নগ্ন ছবি আপলোড করে এবং নগ্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনার সাথে জড়িত মূল আসামীকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র‌্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে ও গোয়েন্দা নজরদারি চলমান রাখে।

গোয়েন্দা নজরদারি, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও প্রাপ্ত গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২১/১১/২০২৫ (শুক্রবার) রাতে র‌্যাব-১১, সিপিসি-২-এর একটি আভিযানিক দল ভোলা জেলার তজুমদ্দিন থানাধীন গোলকপুর এলাকা হতে এ প্রতারণার ঘটনায় জড়িত মূল হোতা মো. আব্বাস (৩৮) (পিতা-মৃত আবুল কালাম, মাতা-মৃত ছালেকা বেগম, সাং-দক্ষিণ আড়ালিয়া, থানা-তজুমদ্দিন, জেলা-ভোলা)কে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকালে আসামীর নিকট হতে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ২ টি মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী একজন সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী। গত ১৫/১০/২০২৫ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৭টায় প্রতারণার শিকার টিকটক আইডিতে ধৃত আসামী মো. আব্বাস (৩৮) নক করে বলে, অনলাইনে কাজ করে ঘরে বসে প্রতিদিন ১,০০০/- টাকা আয় করা সম্ভব। তিনি যদি আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে রেজিস্ট্রেশন করার জন্যে তার কিছু ছবি ও তথ্যের প্রয়োজন। ওই নারী সরল বিশ্বাসে ধৃত আসামীকে তার কিছু ছবি ও ব্যক্তিগত তথ্য দেন। তারপর ধৃত আসামী নারীটিকে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করার জন্যে একটি মোবাইল অ্যাপসের লিংক পাঠিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে বলে। নারী সে লিংকে প্রবেশ করে রেজিস্ট্রেশন করার পর তার ফেসবুক সহ যাবতীয় আইডি ধৃত আসামীর নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। পরবর্তীতে বিবাদীরা নারীটির ছবি এডিট করে নগ্ন ছবি ও ভিডিও তৈরি করে নারীকে দেখিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে টাকার জন্যে চাপ দিতে থাকে। ফলস্বরূপ প্রতারিত নারী লোকলজ্জার ভয়ে প্রতারকদেরকে বিকাশ, নগদ ও রকেট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে সর্বমোট ৭,০০,০০০/-(সাত লক্ষ) টাকা প্রদান করে। বিবাদীগণ উক্ত টাকা পাওয়ার পরও প্রতারিতের কাছে আরো টাকা দাবি করলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করায় প্রতারকরা নারীর পরিবারের লোকজনদের মোবাইলে উক্ত নগ্ন ছবি ও ভিডিও পাঠায় এবং নারীর ফেসবুক আইডি হ্যাক করে ফেসবুকের প্রোফাইল পিকচারে সে নগ্ন ছবি আপলোড করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটায়। আরও জানা যায় যে, ধৃত প্রতারক একটি সংঘবদ্ধ অনলাইন প্রতারক চক্রের মূল হোতা। সে তার চক্রের অন্যান্য সদস্যের সহায়তায় দীর্ঘদিন যাবৎ নারীদেরকে অনলাইনে চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে ব্যক্তিগত তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করে ফেসবুক ও অন্যান্য আইডি হ্যাকের মাধ্যমে পর্নগ্রাফি তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়