রবিবার, ০৩ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২৫, ২১:৪৬

শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত হলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক

ফরিদগঞ্জ ব্যুরো ॥
শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত হলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক

ফরিদগঞ্জ উপজেলার গৃদকালিন্দিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যের ছেদ ঘটিয়ে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে অপদস্থ এবং কমিটির কতিপয় সদস্যের হাতে বিদ্যালয়ের রেজুলেশন ও নোটিস বই দিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি করার দায়ে অভিযুক্ত হয়ে সাময়িক বরখাস্ত হলেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইসমাইল হোসেন।

জানা গেছে, রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নস্থ গৃদকালিন্দিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২৪ সালের ২৩ মে প্রধান শিক্ষক, কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর ও আয়া পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শেষে নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা প্রতি পদে একজন করে নিয়োগের জন্যে সুপারিশ করেন। এই নিয়োগ কার্যকর তথা রেজুলেশনভুক্ত করতে ওই সময়ের বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ সেই সময়ের বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইসমাইল হোসেনকে ওই বছরের ৭ জুন তারিখে কমিটির সভা আহ্বান করতে বলেন। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইসমাইল হোসেন বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান খান ও ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ খানের প্রচোরণায় সভা না ডেকে তাদের হাতে বিদ্যালয়ের নোটিস বই ও রেজুলেশনের খাতা তুলে দেন। এক পর্যায়ে ১৮ জুন সুপারিশকৃত নিয়োগ অনুমোদনের জন্যে সাবেক সভাপতি পরিচালনা পর্ষদের সভা আহ্বান করলে পরিচালনা পর্ষদ ও অভিভাবক সদস্য মোহাম্মদ মিজানুর রহমান খান পর্ষদের সদস্য ও সকল শিক্ষকের প্রতিনিধি এবং বিদ্যালয়ের কর্মচারীগণের সামনে সাবেক সভাপতিকে অপমান করেন। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্মান বিবেচনায় বাধ্য হয়ে তিনি সকল সদস্যের সম্মতিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেন। আর বিষয়টি সুরাহার জন্যে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কাছে ব্যবস্থাগ্রহণে আবেদন জানান। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণের জন্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক চাঁদপুরকে দায়িত্ব প্রদান করেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মোস্তাফিজুর রহমান তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে তিনি এ ঘটনার জন্যে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইসমাইল হোসেনকে দায়ী করেন এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণের সুপারিশ করেন।

তদন্ত প্রতিবেদনের সারাংশে তদন্ত কর্মকর্তা লিখেন, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য মো. মিজানুর রহমান ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. শরীফ হোসেন স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন নিয়োগ অন্যায় ও অবৈধ প্রক্রিয়ায় বন্ধ করার দায়ে এবং মো. ইসমাইল হোসেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার নিমিত্তে উল্লেখিত দুজন অপরাধীর যোগসাজশে তার কাছে রক্ষিত নিয়োগ সংক্রান্ত নম্বর ফর্দ, রেজুলেশন ও অন্যান্য কাগজপত্র বিনা বাধায় মো. মিজানুর রহমানকে প্রদান করে দায়িত্বে চরম অবহেলা করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়। বিদ্যালয়টির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পলাশ চন্দ্র কুরী বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কার্যালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে গত রোববার (২২ মে ২০২৫) স্কুলে একটি সভা হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ও তদন্ত প্রতিবেদনে সত্যতা পাওয়ায় রেজুলেশনের মাধ্যমে গত ৩ জুন ২০২৫ তারিখে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বোর্ডে প্রেরণ করা হয়েছে।

এসব বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মো. ইসমাইল হোসেনের বক্তব্যের জন্যে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নি। বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা রাজিয়া জানান, তদন্ত প্রতিবেদন মোতাবেক ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়