মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৯ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

কতোটা সুন্দর মন থাকলে এমনটি করতে পারেন!

অনলাইন ডেস্ক
কতোটা সুন্দর মন থাকলে এমনটি করতে পারেন!

সোমবার চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় বক্স আইটেমে নাতিদীর্ঘ সচিত্র প্রতিবেদন লিখেছেন শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সভাপতি, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের ব্যুরো ইনচার্জ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোঃ মঈনুল ইসলাম কাজল। তার প্রতিবেদনের শিরোনাম হয়েছে ‘প্রকৃতিপ্রেমী রেজওয়ানা চৌধুরীর অফিস আঙ্গিনা শাক সবজি ও ফুলে ভরা’।

প্রতিবেদনটিতে তিনি লিখেছেন, এটি যেন একটি খামার বাড়ি! শাক সবজি ও ফুলে ভরে উঠেছে চারপাশ। যে কোনো সেবা গ্রহীতা এখানে আসলেই যেন মনপ্রাণ ভরে উঠে। জরুরি কাজে আসা লোকজন নিজের কাজ সারার আগেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে উঠেন। নিজের ক্লান্তি কিছুটা দূর করে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে বাড়ি ফিরেন। একটি প্রশাসনিক কার্যালয়ের আঙ্গিনা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে কতোটা দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠতে পারে তা দুনয়নে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। নিজের মায়া মমতা ও ভালোবাসা দিয়ে অফিস আঙ্গিনা সাজিয়েছেন শাহরাস্তি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেজওয়ানা চৌধুরী। গত বছরের ২ মে তিনি শাহরাস্তি উপজেলায় যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে শাহরাস্তি উপজেলার সাহপুর এলাকায় অবস্থিত সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ শুরু করেন। বিশেষ করে শীত মৌসুম শুরু হওয়ার সাথে সাথে তিনি অফিস আঙ্গিনায় খালি পড়ে থাকা জমিতে শাক সবজি চাষ শুরু করেন। তাঁর হাত ধরে লাল শাক, পালং শাক, সরিষা, লাউ, কুমড়া, মুলা, ঢেঁড়স, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, পেঁপেসহ তার বাগানে বিভিন্ন রকমের শাক সবজি শোভা পাচ্ছে। অফিসের মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করলেই দেখা মিলবে মনোমুগ্ধকর ফুলের বাগান। অপরূপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন সেবা গ্রহীতারা। কাজের ফাঁকে সুযোগ পেলেই বাগানে ছুটে যান রেজওয়ানা চৌধুরী। নিজ হাতে পরিচর্যা করেন বাগানের। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সাধারণ মানুষ সুযোগ পেলেই ঘুরতে আসেন এখানে। অনেকেই সেলফি তুলে মনের সাধ পূরণ করেন। এছাড়াও সেবা গ্রহীতা নারীদের জন্যে নামাজের সুব্যবস্থা করেছেন। ভূমি অফিসে জনগণের ভোগান্তি কমাতে নিয়েছেন নানা উদ্যোগ। কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেদিক বিবেচনা করে যথা সময়েই মামলা নিষ্পত্তি, খারিজ ও মিস কেস সম্পন্ন করেন।

রাজস্ব আদায়ে রেজওয়ানা চৌধুরী দেখিয়েছেন বিশাল সাফল্য। প্রায় ৯৫ ভাগ রাজস্ব আদায় করতে পেরেছেন তিনি। শুধু শাক সবজি ও ফুলই নয়, প্রাণীদের জন্যেও রয়েছে দুর্বলতা। আদর করে পোষ মানিয়েছেন একটি বিড়াল ছানা, নাম রেখেছেন শুশী। তিনি অফিসে প্রবেশের সাথে সাথে ছুটে আসে সে। কখনো চেয়ারে আবার কখনো কোলে উঠে বায়না ধরতে দেখা যায়। এছাড়াও কর্তব্যপরায়ণ পরিশ্রমী রেজওয়ানা চৌধুরী দিনরাত মোবাইল কোর্টের প্রয়োজনে ছুটে যান উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। অফিসে এবং বাইরে সমানতালে দক্ষতা দেখিয়ে ইতঃমধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা রেজওয়ানা চৌধুরী

জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিনি তার অফিস আঙ্গিনা সাজিয়েছেন। তা দিয়ে শুধু তিনিই উপকৃত হবেন না, এটি দেখে অনেকেই উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেকে তৈরি করবেন। তিনি জানান, প্রতিটি মানুষ যদি তাদের অনাবাদী জমি কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ফসলাদি উৎপাদন করেন তাহলে দেশ উপকৃত হবে। মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করা গেলে আমাদের দেশে অভাব দূর হবে। তাই প্রত্যেকের উচিত তাদের অনাবাদী জমিগুলোকে কাজে লাগানো। একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার এমন উদ্যোগ সেবা গ্রহীতা ও সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ জুগিয়েছে।

আমরা মনে করি, অনেক বড়ো কিংবা অসামান্য সুন্দর মনের অধিকারী হতে পারলেই একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা তাঁর নির্দিষ্ট দায়িত্বের বাইরে বাড়তি কাজগুলো করতে পারেন, যেগুলো সাড়া জাগায়, উৎসাহ ও প্রেরণা সঞ্চার করে সাধারণ্যে, আর সুধীজনের দৃষ্টি কাড়ে ব্যাপকভাবে। শাহরাস্তি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তথা এসি ল্যান্ড রেজওয়ানা চৌধুরী তেমনই একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা। তিনি কোন্ বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা কতোটুকু গ্রহণ করেছেন সেটা জানার আগ্রহ যে কোনো কৌতূহলী মানুষের মিটে যায়, যখন দেখেন তাঁর কর্মদক্ষতা, সুশিক্ষার জোর ও নিখাদ দেশপ্রেম। আমরা এমন একজন কর্মকর্তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি। আমাদের আশাবাদ, প্রশাসনের অনেক উপরের পর্যায়ে ভালো পদে তাঁকে দেখা যাবে পর্যায়ক্রমে বারবার, যেখানে তিনি সুনাম-সুবাস ছড়াতে সক্ষম হবেন কেবলই । মহান সৃষ্টিকর্তা তাঁর প্রতি সদয় ও সহায় হোন-এই প্রার্থনা করছি নিরন্তর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়