মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৯ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০

অগ্নিকাণ্ডটি কি নাশকতা না অন্য কিছু?

অনলাইন ডেস্ক
অগ্নিকাণ্ডটি কি নাশকতা না অন্য কিছু?

চাঁদপুর জেলায় খুব বেশি শিল্প কারখানা নেই বললেই চলে। কোনো কোনো উদ্যোক্তা নিজ এলাকার প্রতি দরদ দেখাতে গিয়ে প্রত্যন্ত গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেছেন ব্যয়বহুল শিল্প প্রতিষ্ঠান। যেমনটি আমরা মতলব দক্ষিণে দেখতে পাই। সেখানে উপজেলা সদর থেকে দূরবর্তী অবস্থানে গত ক’বছর আগে গড়ে উঠেছে জুট মিলস্। এজন্যে উদ্যোক্তা কারো কারো নাক সিঁটকানোর সম্মুখীন যে হননি, এমনটি কিন্তু নয়। তারপরও দৃঢ় মনোবলে শেষ পর্যন্ত গড়ে তুলেছেন জুট মিলস্। এতে স্থানীয়ভাবে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়। কিন্তু গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে দেখতে পেলাম, সেই মিলটি আগুনে পুড়ে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

‘ঘটনাস্থল মতলব দক্ষিণ : মধ্যরাতে জুট মিলে আগুন ॥ ৩০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি’ শিরোনামের সংবাদে মুহাম্মদ আরিফ বিল্লাহ লিখেছেন, মতলব দক্ষিণে হাসেম খান ডাইভারসিফাইড জুট মিলস্ লিমিটেডে আগুন লেগে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আগুনে মালামালসহ প্রায় ১৫৫টি মেশিন পুড়ে গেছে। ২৬ ডিসেম্বর সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে খাদেরগাঁও ইউনিয়নের ঘিলাতলী সাইনবোর্ড এলাকায় অবস্থিত জুট মিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মতলব দক্ষিণ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সোমবার দিবাগত রাতে হাসেম খান ডাইভারসিফাইড জুট মিলে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পুরো আগুন প্রায় ৩ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এ অগ্নিকাণ্ডে মঙ্গলবার মতলব দক্ষিণ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন জুট মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ওয়াসিফ খান। তিনি জানান, সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে আমাকে কল দিয়ে জানানো হয়, মিলে আগুন লেগেছে। পাটের মালামাল থাকার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঢাকা থেকে এসে দেখি, আগুনে মালামালসহ মিলের ১টি সাপনার, ২টি ব্রেকার, ২টি টিচার কার্ড, ৫টি ড্রইং, ৮টি স্পিনিং, ৩টি রোলার, ৩০টি পিসিশান, ২টি টুইস্ট, ৬৫টি তাঁত, ১০টি রিপেয়ার তাঁত, ১টি বৈদ্যুতিক সাব স্টেশন, ১টি জেনারেটরসহ প্রায় ১৫৫টি ছোট-বড় মেশিন কম-বেশি পুড়ে গেছে। এতে আমাদের প্রায় ৩০/৩৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মিলের নামে অগ্রণী ব্যাংক শেরাটন শাখায় ২০ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। এ দুর্ঘটনায় আমার সব শেষ হয়ে গেছে।

আমরা মতলব দক্ষিণের হাসেম খান ডাইভারসিফাইড জুট মিলস্ লিমিটেডে সংঘটিত ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিতে দুঃখ, সমবেদনা ও উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আমরা এই অগ্নিকাণ্ডকে সরলভাবে নিতান্তই সাধারণ অগ্নিদুর্ঘটনা বলতে নারাজ। সেজন্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি, যাতে এটি নাশকতা না অন্য কিছু সেটি বেরিয়ে আসে। যদি এই জুট মিলস্ টিকে ধ্বংস করার জন্যে পরিকল্পিতভাবে অগ্নিকাণ্ডটি সংঘটিত হয়ে থাকে, তাহলে সেটি এই মিলস্-এর উদ্যোক্তাকে শুধু নয়, দেশের নতুন অনেক উদ্যোক্তাকে নিরুৎসাহিত করবে। এতে অনেক সম্ভাবনার অপমৃত্যু হবে, যেটি হবে দুর্ভাগ্যজনক।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়