সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:১৭

হাজীগঞ্জের বহুল পরিচিত হোটেল-বেকারীর এমন হাল!

অনলাইন ডেস্ক
হাজীগঞ্জের বহুল পরিচিত হোটেল-বেকারীর এমন হাল!

‘হাজীগঞ্জে দুটি হোটেল ও এক বেকারীকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা’ শিরোনামের সংবাদটি পড়ে চাঁদপুর জেলা ও সন্নিহিত অঞ্চলের ভোজনরসিক মানুষমাত্রই বিস্মিত ও ব্যথিত হয়েছে। কেননা মুখরোচক খাবারের জন্যে হাজীগঞ্জ বাজারে আগত ক্রেতা-বিক্রেতা ও আগন্তুকরা যেসব হোটেল ও বেকারীকে তাদের পছন্দের তালিকায় এগিয়ে রাখে, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনটিই জরিমানার শিকার হয়েছে। এ নিয়ে গত শুক্রবার চাঁদপুর কণ্ঠে উপরোল্লিখিত শিরোনামের সংবাদটি লিখেছেন কামরুজ্জামান টুটুল। তিনি লিখেছেন, হাজীগঞ্জে দুটি হোটেল ও একটি বেকারীকে জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চাঁদপুর কার্যালয়। এ সময় সব মিলিয়ে মোট ৮০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়েছে। অভিযানে সহযোগিতা করেন যৌথবাহিনীর বিশেষ টিম। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর ২০২৫) দুপুরে উপজেলা শহরে এ অভিযান চলে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান বলেন, অভিযান পরিচালনাকালে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য, পচা-বাসি খাবার ফ্রিজে সংরক্ষণ করা, অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে খাবারদ্রব্য তৈরির অপরাধে যথাক্রমে প্রিন্স হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট মালিককে ৫০ হাজার টাকা, পচা-বাসি খাবার সংরক্ষণ করার অপরাধে নিউ শেরাটন রেস্টুরেন্ট এন্ড কমিউনিটি সেন্টার কে ১০ হাজার টাকা এবং ক্ষতিকর রং ব্যবহার ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার দ্রব্য তৈরির অপরাধে মা মনি ব্রেড এন্ড কনফেকশনারি মালিককে ২০ হাজার টাকা মিলিয়ে মোট ৮০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহ পুনরায় এই ধরনের অনিয়ম করলে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহকে সতর্কতা প্রদান করা হয়। হাজীগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য পরিদর্শক মো. জসিম উদ্দিন এবং যৌথ বাহিনীর একটি টিম এ অভিযানে সার্বিক সহাযোগিতা করেন। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা। সুসজ্জিত, সুদৃশ্য ও সুপরিসর হোটেলের জন্যে চাঁদপুর জেলা সদরের চেয়েও বেশি যে উপজেলা সদরটি বহুল পরিচিতি পেয়েছে, সেটিই হচ্ছে হাজীগঞ্জ বাজার। এ বাজারটি হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে জেলার প্রসিদ্ধ পুরাণবাজারের খ্যাতিকে ছাড়িয়ে গেছে বহু আগেই। বলা যায়, জেলার সবচে’ বড়ো বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে এই হাজীগঞ্জ বাজার। বড় মসজিদের আকর্ষণে এই বাজারে ব্যাপক লোক সমাগমের কারণে প্রয়োজনের নিরিখেই এখানে গড়ে উঠেছে বড়ো বড়ো খাবার হোটেল। বৈচিত্রময় সুস্বাদু খাবারের কারণে এই হোটেলগুলোর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। উপচেপড়া ভিড়ে হোটেলগুলোতে বেচাকেনার হিড়িক লেগেই থাকে। কাস্টমাররা থাকেন শশব্যস্ত। তেলে জালে মুখরোচক খাবার খেয়ে বিল দিয়ে যেতে পারলেই যেন বাঁচেন। নিরাপদ বা বিশুদ্ধ খাবার খেলো কিনা সেটা নিয়ে ভাববার, জিজ্ঞেস করবার কিংবা চ্যালেঞ্জ করবার ফুরসত নেই কাস্টমারদের। সে সুযোগে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য, পচা-বাসি খাবার ফ্রিজে সংরক্ষণ, অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে খাবার তৈরির সুযোগ বহুল পরিচিত হোটেলগুলোর কর্তৃপক্ষই নিচ্ছে বলে গুঞ্জন চলছিলো। যে কারণে চাঁদপুর থেকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ছুটে যান হাজীগঞ্জ বাজারে এবং গুঞ্জনের সত্যতা খুঁজে পান। শুধু কি হোটেল, হাজীগঞ্জের তথাকথিত নামকরা বেকারিতে গিয়ে ক্ষতিকর রং ব্যবহার করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য তৈরির আলামত খুঁজে পান। তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন। কথা হলো, এ বাজারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বিক্ষিপ্ত অভিযানে হোটেল-বেকারির এমন করুণ হাল কি পাল্টে যাবে? নিশ্চয়ই নয়। আমরা মনে করি, এই বাজারে এমন অভিযান ধারাবাহিকভাবে হওয়া দরকার। যদি না হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে, বিক্ষিপ্ত অভিযানে ভয় দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ম্যানেজড্ হয়ে গেছে, সেজন্যে চুপসে গিয়ে গোপনীয়ভাবে লাভবান হবার পাঁয়তারা করছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়