প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০২৫, ০২:১৭
আড়িয়াল বিলের শামুক: মাছের খাদ্য, শ্রমিকের জীবিকা
শামুকের খোঁজে: আড়িয়াল বিলের বুকে নতুন জীবন

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর: আড়িয়াল বিলের শামুক দেশের বিভিন্ন জেলার মাছের খামার ও চিংড়ি ঘেরে যাচ্ছে। মাছের খাদ্য প্রস্তুতকরণে শামুকের চাহিদা বিপুল। এতে আড়িয়াল বিল পাড়ের অনেকেই বিনা পুঁজিতে জলাশয়ে শামুক কুড়িয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
|আরো খবর
মৌসুমে প্রায় শতাধিক শ্রমজীবী আড়িয়াল বিলের শামুক বিক্রি করে আয় করছেন। ডিঙ্গি কোষা নৌকা নিয়ে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিলের বিভিন্ন স্থান থেকে শামুক সংগ্রহ করা হয়। এসব শামুক পাইকারদের কাছে বিক্রি করে তারা সংসারের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণ করছেন।
বর্ষা মৌসুমে কয়েক মাস কৃষিতে কাজ না থাকায় এই অঞ্চলের কৃষি শ্রমজীবীরা বেকার হয়ে পড়েন। তাই নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ বছরের কয়েক মাস আড়িয়াল বিলে শাপলা, শামুক কুড়িয়ে এবং মাছ শিকার করে জীবন নির্বাহ করেন। বিলের পানি কমতে থাকায় শাপলার মৌসুম প্রায় শেষের দিকে। ফলে শামুক কুড়িয়ে প্রতিদিন যে আয় হচ্ছে, তা দিয়ে তাদের সংসার চলছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাঁসাড়া ইউনিয়নের আলমপুর সড়কের পাশে নৌকা থেকে কুড়ানো শামুক নামানো হচ্ছে। ৫০ কেজি ওজনের প্রতিবস্তা শামুক বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়। লস্করপর এলাকার তাছলেম মোড়ল বলেন, "সূর্য আলো ফোটার আগে নৌকা নিয়ে আড়িয়াল বিলে শামুক সংগ্রহের জন্য যাই। শাপলার মৌসুম শেষে এখন শামুক কুড়িয়ে বিক্রি করছি। আড়িয়াল বিলে প্রতিদিন কয়েক ঘন্টা শ্রমের বিনিময়ে ৩-৪ বস্তা শামুক সংগ্রহ করছি।"
বাড়ৈখালীর সাবেক ইউপি সদস্য মো. হেলালও শামুকের ব্যবসা করছেন। শামুক কুড়ানোর সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন শ্রমজীবী জানিয়েছেন, গত দুই বছর ধরে তারা নিয়মিত এই কাজ করছেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের বাজার মূল্য বৃদ্ধির কারণে বর্ষাকালে কাজ না থাকায় সংসার চালানো কঠিন হয়ে যায়। তাই আর্থিক সংকট দূর করতে ও সংসারের অর্থের যোগান দিতে শামুক কুড়ানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। শফিকুল ইসলাম বলেন, "দৈনিক শামুক সংগ্রহের পাইকার হেলালের কাজ করি।"
আড়িয়াল বিলে এখনও ৪-৫ ফুট পানি রয়েছে। বিল থেকে শামুক সংগ্রহ করছেন স্থানীয়রা। তাদের কাছ থেকে প্রতিদিন শত শত বস্তা শামুক কিনছেন হেলাল। এসব শামুক পরে বিক্রি করা হচ্ছে খুলনার চিংড়ি ঘেরগুলোতে। ঘের সংশ্লিষ্টরা মাছের খাদ্য হিসেবে এসব শামুক প্রক্রিয়াজাত করছেন।
ডিসিকে/এমজেডএইচ