রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৫, ০২:০৮

রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে গেছে ২০১৯ সালে বসানো সব ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা

পুলিশের লাগানো সব সিসি ক্যামেরা নষ্ট : চাঁদপুর শহরের নিরাপত্তা বিঘ্নিত

চাঁদপুর কণ্ঠ রিপোর্ট
পুলিশের লাগানো সব সিসি ক্যামেরা নষ্ট : চাঁদপুর শহরের নিরাপত্তা বিঘ্নিত

< কমিউনিটি পুলিশিংয়ের নৈশকালীন টহল কার্যক্রমের কারণে চাঁদপুরের এক পুলিশ সুপার বখতিয়ার আলম তাঁর পর্যবেক্ষণশেষে মন্তব্য করেছিলেন 'দিনের চাঁদপুরের চেয়ে রাতের চাঁদপুর অধিক নিরাপদ'

এমতাবস্থায় দিনের চাঁদপুরকেও নিরাপদ করতে ২০১৯ সালে পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নেন। এতে প্রধানত অর্থায়ন করে চাঁদপুর পৌরসভাচাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স

এই উদ্যোগে শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়। বিশেষ করে দিনের বেলা অপরাধ প্রবণতা কমে আসে। কিন্তু বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে জটিলতা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে একে একে সব সিসি ক্যামেরা নষ্ট হয়ে যায়

ফলে শহরে বাড়ছে অপরাধ। রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও অপরাধীরা থেকে যাচ্ছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে

টেলিভিশনের অনলাইন সংবাদ থেকে জানা যায়, পুলিশ পুনরায় সিসি ক্যামেরা বসাতে যাচ্ছে এবং রক্ষণাবেক্ষণেও নেওয়া হবে বিশেষ উদ্যোগ

চাঁদপুর শহরে প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। ২৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই পৌরসভায় বাড়ছে ভবনের সংখ্যা। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ২০১৯ সালে শহরে ৬০টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল।

কিন্তু এক বছরের মধ্যেই রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রায় সব ক্যামেরা বিকল হয়ে পড়ে। ফলে শহরে পুলিশের নজরদারি দুর্বল হয়ে পড়ে

সম্প্রতি স্ট্র্যান্ড রোড এলাকার মেহেদী এন্টারপ্রাইজ থেকে ২০ লাখ টাকার পণ্য ও ৮.৫ লাখ নগদ টাকা চুরি হয়। চারজন সন্দেহভাজন আটক হলেও চুরি যাওয়া পণ্য উদ্ধার করা যায়নি

চাঁদপুর মডেল থানার ওসি মো. বাহার মিয়া বলেন, “সিসি ক্যামেরা থাকলে অপরাধীদের গতিবিধি সহজে শনাক্ত করা যেত।" নিজ উদ্যোগে পাল বাজার এলাকায় ২টি ক্যামেরা বসিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

সিসি ক্যামেরার অভাবে শহরে কিশোর গ্যাং ও ইভটিজিংয়ের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বড় স্টেশন এলাকায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন অনেক তরুণ-তরুণী ও পরিবার।

তরুণী তৃষা বলেন, “আগে সিসি ক্যামেরার কারণে নিরাপদ মনে করতাম, এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগি।”

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, “অল্প বয়সী ছেলেরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়, সিসি ক্যামেরা থাকলে সাহস পেত না।”

সুজন আহমেদ বলেন, “ক্যামেরার কারণে অপরাধীরা ভয় পেত। এখন শনাক্ত করাই কঠিন হয়ে পড়েছে।”

চাঁদপুর চেম্বারের সহ-সভাপতি তমাল কুমার ঘোষ জানান, ২০ লাখ টাকায় বসানো হয়েছিল এসব ক্যামেরা। নতুন বাজারের পাশাপাশি পুরাণবাজার এলাকাও ক্যামেরার আওতায় আনার পরিকল্পনা ছিল

পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আব্দুর রকিব বলেন, “সিসি ক্যামেরা অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রেখেছিল। এবার রক্ষণাবেক্ষণসহ নতুন করে বসানো হবে।"

সচেতন নাগরিকরা মনে করেন, শুধু ক্যামেরা বসালেই চলবে না, প্রয়োজন নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ। এতে চাঁদপুর শহর আরও নিরাপদ হয়ে উঠবে

ডিসিকে/এমজেডএইচ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়