সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫  |   ৩১ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে বিএনপি অফিস ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মামলায় সাবেক এমপি প্রতিনিধি নিরু আটক

প্রকাশ : ৩০ জুন ২০২৫, ০২:১৩

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে পানি নিষ্কাশন খালে ময়লার ভাগাড় : প্রতি বছরই জলাবদ্ধতা

মাহবুব আলম লাভলু
মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে পানি নিষ্কাশন খালে ময়লার ভাগাড় : প্রতি বছরই জলাবদ্ধতা
মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে ছেংগারচর বাজার এলাকায় পানি নিষ্কাশন খালে ময়লার ভাগাড়।

মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের পানি নিষ্কাশন খাল এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। নিয়মিত পরিষ্কার এবং খনন না করায় খালগুলো পানি ধারণ ও প্রবাহের সক্ষমতা হারিয়েছে। যার কারণে বৃষ্টির পানিতে প্রতি বছর মারাত্মক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে থাকে।

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের পানি নিষ্কাশন খাল ডি-৩ সহ অধিকাংশ খাল দখল ও ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। খালগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে খনন নেই। এতে প্রতি বছরের মতো এবারের বর্ষায়ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। দখলদারদের আগ্রাসনে মতলব উত্তর উপজেলার অনেক পুরানো খালের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। যে খাল দিয়ে এক সময় নৌযান চলাচল করতো, সেই খাল এখন সরু ড্রেনে পরিণত হয়েছে।

বর্ষায় কৃষকের প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভারী বর্ষণের পানি সরতে না পেরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সেচ প্রকল্পের ডি-৩ প্রধান খালসহ অধিকাংশ খাল মানুষের দখল ও ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে। ডি-৩ খাল ছেংগারচর বাজার এলাকায় বর্জ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। পানি প্রবাহিত হতে না পারায় ছেংগারচর পৌরসভা, কলাকান্দা, মোহনপুর, গজরা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।

বৃষ্টির পানিতে অল্পতে ডুবে যায় ফসলের জমি। জলাবদ্ধতায় অনাবাদি থাকে অনেক জমি।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার এবং খনন না করায় কচুরিপানায় এ খাল দিয়ে পানিপ্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। খালের অধিকাংশ স্থানে ময়লা-আবর্জনা জমে আছে। কচুরিপানা ও আবর্জনায় পানি চলাচল প্রায় বন্ধের পথে। সম্প্রতি কিছু খালে নামকাওয়াস্তে কচুরিপানা পরিষ্কার করা হয়েছে। ফলে স্বল্প সময়ে কচুরিপানায় আবার পূর্বের মতোই হয়ে যাচ্ছে।

পাউবো কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৮০ কি.মি. খাল সংস্কারের জন্যে টেন্ডার করা হয়েছে। তবে এ টেন্ডারের কাজ নিয়েও মানুষের মাঝে নানা প্রশ্ন রয়েছে।

এ বিষয়ে কলাকান্দা ইউপির সদস্য সাইদুর রহমান শিবলু জানান, বহু যোগাযোগের মাধ্যমে ডি-৩ খালটি সংস্কারের আওতায় আসলেও মূল জায়গায় সংস্কার হয়নি। ছেংগারচর বাজার এলাকায় ময়লার ভাগাড় এখনও রয়ে গেছে। কিছু দিন আগের বৃষ্টিতে আমাদের আবাদি জমি তলিয়ে আছে।

হানির পাড়ের কৃষক লাল মিয়া জানান, খালগুলো পরিষ্কার না করায় পানি সরে না। বৃষ্টি হলে আমাগো জমিতে পানি জমে থাকে। করা ফসল নষ্ট হয় এবং খালি জমিতে ফসল করতে পারি না।

ছেংগারচর বাজার বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি আ. মান্নান লস্কর জানান, ডি-৩ খালটি বাজার সংলগ্ন এলাকায় ময়লার স্তূপে বন্ধ হয়ে আছে। আমি দোকানদারদের বলেছি খালে যাতে ময়লা আবর্জনা না ফেলে। পাউবো কর্তৃপক্ষের কাছে খালের মাটি ও ময়লা আবর্জনা অপসারণের দাবি করছি।

উপজেলা কৃষি অফিসার ফয়সাল মোহাম্মদ আলী জানান, খালগুলো পরিষ্কার না থাকায় বৃষ্টির পানি সরতে পারে না। যার ফলে নিম্নাঞ্চলে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে ফসলের জমি নষ্ট হচ্ছে এবং জমি অনাবাদী থাকছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ছেংগারচর পৌরসভার প্রশাসক মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, আমি ডি-৩ খালটি কয়েকবার পরিদর্শন করেছি। এ খালটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের। তাদের সাথে কথা বলেছি। এ উপজেলার অনেক খাল সংস্কারের অভাবে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে বলে কৃষকের কাছ থেকে অভিযোগ পাচ্ছি। নিজের পক্ষে যতোটুকু সম্ভব সমাধানের চেষ্টা করছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলছি।

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী সলিম শাহেদ বলেন, খাল সংস্কার (কচুরিপানা পরিষ্কার) কার্যক্রম চলমান। ডি-৩ খালটির ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কাজের ক্ষেত্রে অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডিসিকে/এমজেডএইচ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়