প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৫, ০৯:৩০
কন্যাশিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে অভিভাবকরা সচেতন হোন

ফরিদগঞ্জে দু শিশু শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মো. জসিম উদ্দিন ওরফে কলন্তর নামে এক শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১ মে ২০২৫) সন্ধ্যায় তাকে আটক করা হয়। এর আগে গত ১৮ এপ্রিল ২০২৫ (শুক্রবার) দুপুরে অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষক জসিম উদ্দিনের বসত ঘরে এ ঘটনা ঘটে। ওই দু শিশু পরস্পর সহোদরা। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন দুপুরে ঔ দু শিশু শিক্ষার্থী আরবী পড়তে বাড়ি থেকে বের হয়। নির্দিষ্ট সময়ে বাড়ি না ফেরায় শিশুর মা তাদেরকে খেঁাজাখুঁজির এক পর্যায়ে শিশুদের দাদাকে মুঠোফোনে এ বিষয়টি জানান। দাদাও তাদেরকে খুঁজতে বের হন। খেঁাজাখুঁজির এক পর্যায়ে শিশুদেরকে অভিযুক্ত ব্যক্তির বসতঘর থেকে দৌড়ে বের হতে দেখেন তিনি। এ সময় শিশুদের অভিযুক্তের বাড়ি যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তারা জানায়, অভিযুক্ত জসিম তাদেরকে ফুসলিয়ে তার বসতঘরে ডেকে নিয়ে যান। পরে সে তার মুঠোফোনে ধারণকৃত অশ্লীল ভিডিও চিত্র দেখিয়ে শিশুদের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে বিভিন্নভাবে স্পর্শসহ যৌন হয়রানি করে। এতে শিশুরা ভয় পেয়ে চিৎকার দিয়ে দৌড়ে তার ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। এ ঘটনার পর বুধবার (৩০ এপ্রিল ২০২৫) রাতে ঔ শিশুদের দাদা ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা (নং-০৩, তাং-৩০ এপ্রিল ২০২৫, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারাসহ ৫০৬/২) দায়ের করেন। এরপর বৃহস্পতিবার (১ মে ২০২৫) সন্ধ্যায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রাকিবুল হাসান তাকে আটক করেন। এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা দায়েরের পর বৃহস্পতিবার (১ মে ২০২৫) সন্ধ্যায় অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে।
|আরো খবর
উপরোল্লিখিত বিবরণটি গতকাল চঁাদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত একটি সংবাদের বিবরণ। সম্প্রতি কন্যাশিশুরা প্রায়শই এভাবে শিক্ষক নামের ২-৪ জন কুলাঙ্গার কর্তৃক যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে বলে গণমাধ্যমে চোখ রাখা ব্যক্তিমাত্রই স্বীকার করবেন। এর বাইরেও এরা বখাটে ও বৃদ্ধ বয়সী পুরুষ দ্বারা যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের শিকার হয়ে চলছে। মসজিদের ইমাম/মুয়াজ্জিনদের ২-১ জনের বিরুদ্ধেও কন্যাশিশুদের যৌন হয়রানি ও ধর্ষণ করার অভিযোগ উত্থাপিত হচ্ছে। এমতাবস্থায় অভিভাবকমাত্রকেই সতর্ক হতে হবে। শিশু বলে তার কন্যাকে চোখে চোখে না রাখলে যে কোনো অভিভাবকই তার পরিণাম ভোগের জন্যে থাকতে হবে প্রস্তুত। আজকাল অশ্লীল সিনেমা, নাটক ও বই পড়ে কোনো মানুষকে যৌনতায় বিপথগামী হতে হয় না। হাতে একটি স্মার্ট বা এন্ড্রয়েড ফোন এবং ওয়াইফাই ও ডাটা দ্বারা অনলাইনে সংযুক্ত থাকলেই হলো, কোনো ব্যক্তি ইচ্ছা করলেই অসংযত হয়ে যৌনতায় বিপথগামী হয়ে যেতে পারে এবং কেলেঙ্কারি ঘটিয়ে ফেলতে পারে। এটিই এখন বাস্তব। এই বাস্তবতাকে না বুঝে যারা কন্যাশিশুকে নিতান্তই বিশ্বাস করে একা কোথাও রাখবেন, যেতে দেবেন বা ছেড়ে দেবেন, এমন অভিভাবককে দুর্ঘটনা/বিপদ/ দুঃসংবাদের জন্যে অপেক্ষা করতেই হবে। প্রতিটি কন্যাশিশু, এমনকি ছেলেশিশুকেও যৌন হয়রানি থেকে বঁাচাতে হলে প্রতিটি অভিভাবকের তীক্ষè সচেতন হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। অভিভাবকের অসচেতনতায় শিশুরা শুধু যৌন হয়রানিই হয় না, পানিতে ডুবে মরে, সড়কে দুর্ঘটনা কবলিত হয়, বিদ্যৎস্পৃষ্ট হয়। এছাড়া বহু ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হয়। এক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে শিশুদের নিয়ে অভিভাবকদের সতর্ক করার বিষয়টি প্রচারের আবশ্যকতা রয়েছে।