প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৫, ২২:৩০
পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ দিয়েও স্বস্তি মেলেনি
ফরিদগঞ্জে সম্পত্তিগত বিরোধে এক ভাইয়ের সীমানা প্রাচীর ভাঙ্গলো অপর ভাই

১৯৮১ সাল থেকে প্রবাসে ছিলেন কালু মিজি। দীর্ঘ ৪৪ বছরের প্রবাস জীবনে উপার্জিত অর্থে নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি এবং ক্রয়কৃত আংশিক সম্পত্তির ওপর বিল্ডিং ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে গেলে বাধা দেন আপন ভাই আ. রশিদ। প্রথম দফায় আক্রমণ করার পর সেনাবাহিনীর ক্যাম্প ও পুলিশের কাছে অভিযোগ দেয়ার পরও ফের আক্রমণ করেন ভাই রশিদ। প্রবাস থেকে দুই মাসের জন্যে বাড়িতে এলেও মুহূর্তের জন্যেও স্বস্তি মিলেনি তার।
|আরো খবর
প্রবাস ফেরত কালু মিজি জানান, আমার কোনো ছেলে না থাকায় আমার তিন মেয়ের নামে সম্পত্তি লিখে দিয়েছি। এরপর থেকেই শুরু হয় ভাইদের নানা রকম টালবাহানা। তারা আমাকে শান্তিতে বসবাস করতে দেবে না। এ কারণে বিভিন্ন সময় কারণে-অকারণে আমার পরিবারকে হয়রানি করে তারা। আমার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর পরিবারের কোনো সদস্য না থাকায় তিন মেয়ের ছোট মেয়ে বাড়িতে বসবাস করছিলো। চলতি বছরের জুলাইয়ের ৩০ তারিখ তারা আমার বাড়িঘরে হামলা করে। পরে আমার ছোট মেয়ে ফারজানা বাদী হয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় ও সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দেয়। এরপরও মঙ্গলবার (১২ আগস্ট ২০২৫) সারাদিন আমার ঘরের পাশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করার পর সন্ধ্যার আগে একদল সন্ত্রাসী বাড়ির দুদিক থেকে হামলা করে দিনভর তৈরি করা দেয়ালটি চুরমার করে দেয়। তাদের মূল লক্ষ্যই হলো আমাকে শান্তিতে থাকতে দেবে না। আমি কেনো মেয়েদের নামে সম্পত্তি লিখে দিলাম।
কালু মিজির বড়ো মেয়ে রুজিনা আক্তার জানান, গত মাসের ৩০ তারিখ তারা আমাদের বাড়িঘরে আক্রমণ করে। পরে বিষয়টি যাতে সমাধান হয় সেজন্যে আমার ছোট বোন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি মীমাংসার জন্য উভয় পক্ষকে ডাকা হলেও তারা যায়নি। সর্বশেষ আমরা দেয়াল নির্মাণ করলে তারা দেয়াল ভেঙ্গে দেয় এবং আমাদের ওপর হামলা করে।পার্শ্ববর্তী ঘরের বাসিন্দা আনোয়ারা বেগম জানান, সেদিন সারাদিন মিস্ত্রিরা দেয়াল তৈরির কাজ করেন, সন্ধ্যার পূর্ব মুহূর্তে বাড়ির দু দিক দিয়ে একদল সন্ত্রাসী হামলা করে দেয়ালটি ভেঙ্গে দিয়ে যায়।
কালু মিজির অপর ভাই নূর মোহাম্মদ মিজি অভিযোগ করে বলেন, তারা আমাকেও ঠিক মতো থাকতে দেয় না। সম্পত্তিগত কারণে বিভিন্ন সময়ে আমাকে হামলার হুমকি ও নানাভাবে হয়রানি করে।
কালু মিজির ভবনের নির্মাণ শ্রমিক আলমগীর শেখ জানান, তারা শুধু এখন নয়, কালু মিজির বিল্ডিং করার সময়ও তারা কলামের রড খুলে ফেলে। এদিন আমরা সারাদিন কাজ করে দেয়াল তৈরি করে বিকেলে গোয়ালভাওর বাজারে যাই। কিছুক্ষণ পর শুনি তারা দেয়াল ভেঙ্গে ফেলেছে।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আ. রশিদ মিজির বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। বাড়িতে থাকা পরিবারের নারী সদস্যের কাছে নাম্বার চাওয়া হলে নাম্বার দিতে তারা অস্বীকৃতি জানান। এ বিষয়ে কথা বলতে অপর অভিযুক্ত মো. আরিফ মিজির মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি মুঠোফোন রিসিভ করেননি।ফরিদগঞ্জ থানার এএসআই জুনায়েদ হোসেন জুয়েল জানান, এ বিষয়ে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।