প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৫, ০১:৫৭
চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়নের বিরামপুর বাজারে সড়ক নির্মাণের কার্যাদেশের মেয়াদ শেষ, কাজ শুরুই হয়নি
১ কোটি ১৫ লাখ টাকার প্রকল্পে ঠিকাদারের গাফিলতি, স্থানীয়দের তীব্র ক্ষোভ

বৃহৎ জনসংখ্যা অধ্যুষিত ফরিদগঞ্জ উপজেলার একটি জনপদের গুরুত্বপুর্ণ বাজার চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়নের প্রসিদ্ধ বিরামপুর বাজার। উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের এই বড়ো বাজারের প্রধান সড়কটি আছে বেহাল দশায়। খুবই দুর্ভোগে আছে বাজার ব্যবসায়ী ও ক্রেতা-বিক্রেতারা। এর একমাত্র কারণ সড়কের দুর্দশা।
|আরো খবর
বাজারের ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ গ্রামীণ সড়ক মেরামত ও সংরক্ষণের আওতায় ১ কোটি ১৫ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে ৪শ' মিটার দীর্ঘ আরসিসি সড়ক নির্মাণের টেন্ডার দেয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাতেমা ট্রেডার্স গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর কাজের কার্যাদেশ পেয়ে ১০৫ দিনের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার কথা থাকলেও অদ্যাবধি কোনো কাজই করেনি তারা।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে গ্রামীণ সড়ক মেরামত ও সংরক্ষণের আওতায় প্রাক্কলিত মূল্য ১ কোটি ২১ লক্ষ ২৩ হাজার ২৭২ টাকা ব্যয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলার আরএন্ডএইচ (আইলের রাস্তা আর এন্ড এইচ)-রামপুর জিসি-শোল্লাখালী আরএন্ডএইচ সড়ক মেরামত ও প্রশস্তকরণের আওতায় বিরামপুর বাজারের ৪শ' মিটার আরসিসি সড়ক নির্মাণে টেন্ডার দেয় (ইজিপি বিজ্ঞপ্তি নং-২২/২০২৪-২৫। তাং- ২৩/১০/২০২৪)।
সে অনুযায়ী কাজটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফতেমা ট্রেডার্স , মনতলা, ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর ১ কোটি ১৫ লক্ষ ১৭ হাজার ১০৮ টাকা চুক্তিমূল্যে পায়। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ গত ২৪ ডিসেম্বর ঠিকাদারকে কাজের কার্যাদেশ প্রদান করে।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। উপজেলা প্রকৌশল অফিস ইতোমধ্যেই ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন করে টেন্ডার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অন্যদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে আফজাল হোসেন জানান, বর্ষার কারণে কাজ ধরতে বিলম্ব হয়েছে। কাজের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করে বর্ষা শেষে কাজ শুরু করা হবে।
এদিকে বছরের পর বছর ধরে বিরামপুর বাজার ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ শেষ হয়েও হচ্ছে না। বাজারের ৪শ' মিটার সড়ক পাকা হবে, এমন আশায় তারা কিছুটা আশ্বস্ত হলেও বছর ঘুরে গেলেও কাজ শুরুর নামগন্ধ না থাকায় তারা হতাশ।
বিরামপুর বাজারের ব্যবসায়ী মিজান, খোকন মিয়াসহ বেশ ক'জন জানান, বাজারের দুরবস্থা দেখে আমরা নিজেরা বিরামপুর বাজারের সড়কে কিছু ইট ফেলে কিছুটা চলাচলের ব্যবস্থা করেছি।
“কোনো প্রতিনিধিই আমাদের এই রাস্তার জন্যে কোনো কাজ করেনি। প্রতি বছর বাজার ইজারার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় হয়, সে টাকা কোথায় যায়!?” আমাদের থেকে ট্যাক্স নিয়ে আমাদের উন্নয়নে কোনো টাকা ব্যয় হয় না। এখন শুনেছি এই রাস্তা ঢালাই হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এক ট্রাক বালু ফেলতেও দেখিনি।
অটোরিকশা চালক ও চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়নের ওয়ার্ড বিএনপির সেক্রেটারি মনির হোসেন অনেক কষ্টে বিরামপুর বাজার পার হওয়ার পথে জানান, ভাই এই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালাতে কষ্ট হয়। বিরামপুর বাজারের বেহাল দশা আপানারা নিজেরাই দেখছেন। এছাড়া রামপুর বাজার থেকে সোলাখালী ব্রিজ পর্যন্ত পুরো সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচল করা যায় না।
এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আবরার আহম্মদ বলেন, গ্রামীণ সড়ক মেরামত ও সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় ১ কোটি ১৫ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে ৪শ' মিটার দীর্ঘ আরসিসি সড়ক নির্মাণের টেন্ডার দেয়া হয়েছিল।
“কিন্তু ঠিকাদার কাজের কার্যাদেশ নিয়েও কাজ করেননি। ইতোমধ্যেই গত ১৫ এপ্রিল কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। আমরা কার্যাদেশ বাতিল করার জন্যে চিঠি দিয়েছি। দ্রুত পুনরায় টেন্ডার দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবো।”
ডিসিকে/এমজেডএইচ