ব‍্যাংক লুটেরা ও ফ‍্যাসিস্ট হাসিনার ডাকাত আমলাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে ----সারোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরী

বৈষম্যবিরোধী জুলাই গণআন্দোলনের হত্যাকারী ও এস আলমের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটের সহযোগী সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল)-এর কর্মকর্তা মাহফুজ আলম, মোস্তফা কামাল, ফারুক আহমেদ, কাজী ওসমান আলী, জাফর আলম, ফোরকান উল্লাহ, নাজমুস সাদাত, মিজানুল কবির ও জহির উদ্দিন কর্তৃক দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরীকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটির স্থায়ী সদস্য, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও ঢাকার সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এই প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাবেক সচিব কাসেম মাসুদ, জাতিসংঘের সাবেক বিচারক ড. মো. শাহজাহান সাজু, অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. সামছুদ্দিন, ড. প্রকৌশলী লুৎফর রহমান, উইং কমান্ডার মীর আমিনুল ইসলাম, নাগরিক ভাবনার আহ্বায়ক মো. হাবিবুর রহমান, মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ, আদিনা খান প্রমুখ।

বক্তারা ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে হত্যাচেষ্টাকারী শীর্ষ সন্ত্রাসী আরমান ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবি জানান।

সারোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরী জানান, ১৯৯৯ সাল থেকে তিনি এসআইবিএল’র প্রধান শাখায় ৫টি একাউন্ট পরিচালনা করে কোটি কোটি টাকা রপ্তানি করলেও ব্যাংক অবৈধভাবে প্রায় ৫-৬ কোটি টাকা মুনাফা আদায় করে।

তিনি আরও বলেন, থাইল্যান্ড থেকে অত্যাধুনিক মেশিন আমদানি করে তিনটি শিল্প কারখানা পরিচালনার সময় চীনা সরকারের নিষেধাজ্ঞায় প্লাস্টিক বর্জ্য আমদানি বন্ধ হলে ব্যাংকের সহায়তা না পাওয়ায় কারখানা বন্ধ হয়ে যায় এবং ৮ কোটি টাকার মেশিন ১৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে বাধ্য হন। বিদ্যুৎ ও ইউটিলিটি বিল এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন মেটাতে তাকে এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

পরবর্তীতে মানসিক দুশ্চিন্তা থেকে তিনি ব্রেইন স্ট্রোক করেন এবং ব্যবসা পরিচালনায় অক্ষম হন। এরপর ব্যাংকের বন্ধককৃত সম্পত্তি এস আলমের লোক তাসকিন এ খান ক্ষতিপূরণ ছাড়াই দখল করে নেয়। সুপ্রিম কোর্টের রায় থাকা সত্ত্বেও রেডেম্পশন না দিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া হয়।

তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৩ সাল থেকে ব্যাংক রিডেম্পশন না করায় ফারহা ট্রেড সেন্টারের সম্পত্তি জোর করে ধরে রাখা হয়েছে। সর্বশেষ ৩ নভেম্বর ২০২২ সালে রিডেম্পশনের আবেদন করলেও এস আলম তার লুটেরা বাহিনী দিয়ে তার উপর একাধিকবার হত্যা চেষ্টা চালায়।

সারোয়ার ওয়াদুদ বলেন, ১৯৮৪ সালে তিনি সাংবাদিক হিসেবে সাইফুল আলম মাসুদ ওরফে এস আলমকে অবৈধ সিগারেটসহ হাতেনাতে ধরলে সে জিআরপি পুলিশের সহায়তায় পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগিতায় এস আলম এসআইবিএল সহ আটটি ব্যাংকের মালিকানা দখল করে।

জুলাই আন্দোলনের হত্যাকারী ও ব্যাংক লুটেরাদের সহযোগী কর্মকর্তা ও জামাই বেলাল মিলে হাজার কোটি টাকা লুট করেছে। তারা সারোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরীর একটি খালি চেকের পাতায় ১ কোটি টাকা লিখে এনআই অ্যাক্টের আওতায় মামলা দিয়ে গ্রেফতার করায়। মামলার নং ১৮৯১৫/২২, বিজ্ঞ যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ, ৬ষ্ঠ আদালত; বাদী মোস্তফা কামাল; পক্ষে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লি.।

তিনি আরও জানান, ২৫ মে তার বাবা ভাষা সৈনিক মরহুম কমর উদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকীতে সেনাবাহিনীর পরিচয়ে ৩ জন তার বাসায় ঢুকে হত্যার চেষ্টা করে। তার ছেলে ভিডিও ধারণ করলে তারা পালিয়ে যায়। শীর্ষ সন্ত্রাসী আরমান বিভিন্ন নম্বর থেকে হত্যার হুমকি দিয়ে গেছে।

দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটি অবিলম্বে বৈষম্যবিরোধী জুলাই গণঅভ্যুত্থানের হত্যাকারী ও দুর্নীতিবাজ এস আলম গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছে।

ডিসিকে/এমজেডএইচ