সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   এসএসসি সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ

প্রকাশ : ০৭ মে ২০২৪, ০০:০০

হেপাটাইটিস প্রতিকারে দেরি নয়

ডাঃ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
হেপাটাইটিস প্রতিকারে দেরি নয়

২০০৮ সালের ২৮ জুলাই হেপাটাইটিস বি ভাইরাস আবিষ্কারক নোবেল বিজয়ী আমেরিকান চিকিৎসক ব্লুম বার্গের জন্মদিনকে সম্মান জানিয়ে এবং রোগটি নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে হেপাটাইটিস দিবস পালনের উদ্যোগ নেয় বিশ্ব হেপাটাইটিস অ্যালায়েন্স। এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘আমরা আর অপেক্ষা করতে পারি না’।

লিভার তথা যকৃতের প্রদাহ হলো হেপাটাইটিস। হেপাটাইটিস হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। বিভিন্ন ধরনের হেপাটোট্রপিক ভাইরাসের কারণে এটি হয়। এ ধরনের ভাইরাস সরাসরি যকৃতকে সংক্রমিত করে এবং যকৃতেই বংশবৃদ্ধি করে। হেপাটাইটিস এ, বি, সি, ডি, ই, জি হলো বিভিন্ন ধরনের হেপাটোট্রপিক ভাইরাস।

বিশ্বে প্রতিদিন প্রায় চার হাজার মানুষ ও প্রতি ৩০ সেকেন্ডে একজন হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসের কারণে মারা যাচ্ছে। দেশে প্রতিবছর ২০ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে এ রোগে। তবে এ রোগ টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য।

হেপাটাইটিস এ : এটি সবচেয়ে পরিচিত হেপাটাইটিস রোগ। দূষিত খাদ্য ও বর্জ্যের মাধ্যমে এর সংক্রমণ ঘটে। এটি স্বল্পমেয়াদি। উপসর্গগুলো সাধারণত তিন মাসের মধ্যে চলে যায়। হেপাটাইটিস এ হলে ইবুপ্রোফেন জাতীয় পেইনকিলার দেওয়া ছাড়া নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। টিকা দিয়ে হেপাটাইটিস এ প্রতিরোধ করা যায়।

হেপাটাইটিস বি : এটি সাধারণত অসুরক্ষিত যৌন মিলন বা সিরিঞ্জের মাধ্যমে রক্তের মধ্যে সংক্রমিত হয়। মাদক ব্যবহারকারীদের মধ্যে সাধারণত এটি বেশি ছড়ায়। এর সংক্রমণ দীর্ঘমেয়াদি হয়। টিকা দিয়ে এটি প্রতিরোধ করা যায়। এটি যকৃতকে আক্রমণ করে। অনেক সময় সংক্রমণের প্রথম দিকে কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। অনেক ক্ষেত্রে বমি বমি ভাব, চামড়া হলুদ হওয়া, ক্লান্তি, পেটব্যথা, প্রস্রাব হলুদ হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়। এগুলো কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হয়।

হেপাটাইটিস সি : রক্ত থেকে রক্তের সংস্পর্শে রোগটি ছড়ায়। লক্ষণ অনেকটা ফ্লুয়ের মতো। হেপাটাইটিস সি ভাইরাস শনাক্ত এবং নিরাময় কৌশল আবিষ্কারের জন্য ২০২০ সালে চিকিৎসা শাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিজ্ঞানী। ঠিক সময়ে শনাক্ত এবং চিকিৎসা না হলে এতে লিভার সিরোসিস ও ক্যান্সার হতে পারে।

অ্যালকোহলজনিত হেপাটাইটিস : প্রচুর মদ্যপান করলে এটি দেখা যায়। মদ্যপানে যকৃত ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ফলে এটি ক্রমেই হেপাটাইটিস ডেকে আনে। এর কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। রক্ত পরীক্ষায় ধরা পড়ে। আক্রান্ত হওয়ার পরও মদ্যপান চালিয়ে গেলে ঝুঁকি বেড়ে যায়।

হেপাটাইটিস ডি : যাদের হেপাটাইটিস বি হয়েছে তাদের মধ্যে এটি দেখা দিতে পারে। কারণ একমাত্র হেপাটাইটিস বি’র সঙ্গেই হেপাটাইটিস ডি বাঁচতে পারে।

হেপাটাইটিস ই : এটি স্বল্পস্থায়ী ও তীব্রতা কম। ব্যক্তি থেকে ব্যক্তির সংক্রমণও কম। সংক্রমিত খাবার ও পানির মাধ্যমে এটি ছড়ায়।

অটোইমিউন হেপাটাইটিস : এ ক্ষেত্রে শ্বেত রক্তকণিকা যকৃতের মধ্যে আক্রমণ ঘটায়। যকৃতের কার্যকারিতা বন্ধ হওয়ার মতো বিপদও ঘটতে পারে। রোগটির সঠিক কারণ জানা যায়নি। উপসর্গগুলোর মধ্যে আছে ক্লান্তি, তলপেটে ব্যথা, জন্ডিস ও সিরোসিস।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়