সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   এসএসসি সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ

প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

কক্সবাজারের সেরা রসনা বিলাসী রেস্তোরাঁ ‘শ্বশুর বাড়ি’ যেন এক টুুকরো চাঁদপুর

মোঃ আমিনুল ইসলাম ॥
কক্সবাজারের সেরা রসনা বিলাসী রেস্তোরাঁ ‘শ্বশুর বাড়ি’ যেন এক টুুকরো চাঁদপুর

শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের আয়োজনে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ বহর নিয়ে শেষ হলো আনন্দ ভ্রমণ-২০২৪। থাকা, খাওয়া, খেলাধুলো ও ঘুরে বেড়ানোই যেন এই সফরের মূল কাজ। অর্থাৎ সবাই মিলে এক হই,

সবাই যেন আনন্দে রই। ভ্রমণ বিলাসীদের রসনা বিলাস থাকাটাই স্বাভাবিক।

এই তো সেদিনের কথা। ২০২৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের পর্যটন কর্পোরেশনের মোটেল লাবণীতে উঠলাম। দিনটি ছিলো শুক্রবার। হোটেল কক্ষে প্রবেশের পর সবাই ইচ্ছে মত ঘুমিয়ে নিলেন। মোটেল লাবণীতে সেদিন সবাই সেরে নিলাম মধ্যাহ্ন ভোজ। পরের দিন দুপুরে খাবারের আয়োজন কলাতলী বিচ পয়েন্টে নতুন রূপে গড়ে ওঠা ভোজন বিলাসীদের জন্যে সেরা রেস্তোরাঁ শ্বশুর বাড়ি। যে কোনো আনন্দ ভ্রমণে এই শ্বশুর বাড়ি পরিদর্শন করাও আনন্দ ভ্রমণের অংশ হতে পারে। সেদিন সবাই মিলে গিয়েছিলাম সেখানে। খাবারের সময়টুকু ছিল মধ্যাহ্ন ভোজ। ভোজনবিলাসীর সংখ্যা ছিল শতাধিক। সবাই হয়তো একসাথে বসা সম্ভব ছিল না। তবুও মধ্যাহ্ন ভোজের অপেক্ষায় আনন্দ আড্ডা অব্যাহত রয়েছে ওয়েটিং পয়েন্টে। ফাঁকে ফাঁকে টেবিল খালি হলেই শূন্য জায়গাটি পূর্ণ হয়ে যায় ভোজন প্রত্যাশীদের দ্বারা। শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের মহা আয়োজনে সেদিন আমরা শতাধিক সদস্য বিলাসবহুল এই রেস্তোরাঁয় মধ্যাহ্নভোজে অংশগ্রহণ করেছি। হোটেলের চাকচিক্য আমাদের মুগ্ধ করেছে। বর্তমান সময়ে রুচিশীল রেস্তোরাঁগুলো এমন হওয়াই স্বাভাবিক। কক্সবাজার হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম পর্যটন এলাকা। সেখানে এমন রেস্তোরাঁ মানে কক্সবাজারে চাঁদপুরের এক টুকরো চাঁদ। শাহরাস্তি উপজেলার বিজয়পুর গ্রামের কৃতী সন্তান মোঃ শরীফ হোসেন শ্বশুর বাড়ির স্বত্বাধিকারী। সাথে রয়েছেন কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার জসিম। তাদের আচরণ, ব্যবহার ও আপ্যায়নে আমরা মুগ্ধ।

শাহরাস্তি প্রেসক্লাব আজ শরীফের জন্যে গর্বিত, শাহরাস্তির জন্যে গর্বিত, চাঁদপুরের জন্যে গর্বিত। কেন নয়, শরীফ মানে শ্বশুর বাড়ি, শরীফ মানে কক্সবাজারে চাঁদপুরের এক টুকরো চাঁদ।

দুটো বাস থেকে শতাধিক সদস্য ধীরে ধীরে নামতে শুরু করলাম। রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ আমাদের অপেক্ষা করতে বললেন। সবাই আমরা অপেক্ষায় রয়েছি। এরই মধ্যে ভিতরে প্রবেশের ডাক পড়ে। ধীরে ধীরে আমরা খাবার টেবিলের দিকে যাচ্ছি। আমাদের এই আনন্দ ভ্রমণে প্রত্যেকটা ইউনিটে কমিটি গঠন করা হয়েছে। আপ্যায়ন ইউনিটের দায়িত্বে ছিলো রাফিউ হাসান হামজার কাছে। তিনি আগে নারী সদস্য এবং শিশুদের মধ্যাহ্ন ভোজের টেবিলে যাওয়ার আহ্বান করেছেন। নারী সদস্য ও শিশুদের ভোজন শেষ হলে পুরুষ সদস্যদের শুরু হয় বসার পালা। শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সভাপতি মঈনুল ইসলাম কাজল পুরুষ সঙ্গীদের নিয়ে ভোজন টেবিলে বসতে শুরু করলেন। এরই মধ্যে ধীরে ধীরে সমস্ত খাবার আসতে শুরু করলো। আমরা আগ থেকেই অর্ডার দিয়ে রেখেছিলাম। আমাদের অর্ডার দেয়া খাবারগুলো তারা পরিবেশন করছিলেন। কক্সবাজার গেলে সামুদ্রিক মাছ না খেলে খাওয়াটাই কেমন জানি অতৃপ্তি বোধ হয়। সামুদ্রিক মাছের মধ্যে রূপ চাঁদা ও কোরাল মাছ অনেকেরই পছন্দের। তাই আমাদের পূর্ব থেকেই পছন্দের তালিকায় ছিল কোরাল মাছ ও রূপ চাঁদা। সেদিন খাবারের মেন্যুতে কোরাল মাছ ছাড়াও খাসি, গরু ও বিভিন্ন ধরনের ভর্তা ছিল। খাবার শেষে শ্বশুর বাড়ির পক্ষ থেকে তাদের নিজেদের তৈরি দধি সবার মাঝে বিতরণ করা হয়। হোটেলের মান ও রান্নার স্বাদ এতোটাই হৃদয় কেড়েছে যা অনেক দিন মনে থাকবে।

সেদিন রাফিউ হাসান হামজার সাথে আপ্যায়নে যারা ছিলেন তাদের কথা না বললেই নয়--শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সভাপতি মঈনুল ইসলাম কাজল, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল, মোঃ ফয়েজ আহম্মেদ, হাসানুজ্জামান ও আমি নিজে। যদিও এখানে থাকার কথা ছিল প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সেন্টুর। তিনি সেদিন মারাত্মক অসুস্থ ছিলেন। তিনি শ্বশুর বাড়ির সৌন্দর্য অবলোকন করতে পারেন নি। শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের আয়োজনে ওই আনন্দ ভ্রমণটি ছিল সাংবাদিকদের পারিবারিক সফর। যতটুকু জেনেছি, এখন পর্যন্ত চাঁদপুর জেলার কোনো উপজেলা পর্যায়ের প্রেসক্লাব প্রায় শতাধিক পারিবারিক সদস্য নিয়ে আনন্দ ভ্রমণ করতে পারেনি। যাতে বিরল এক উদাহরণ তৈরি করেছেন শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সভাপতি মঈনুল ইসলাম কাজল।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়