সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   এসএসসি সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ

প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

আনন্দ ভ্রমণ যেন ঐক্যের সেতুবন্ধন

মোঃ মঈনুল ইসলাম কাজল ॥
আনন্দ ভ্রমণ যেন ঐক্যের সেতুবন্ধন

১৯৯১ সালে গঠিত হয় শাহরাস্তি প্রেসক্লাব। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, আজ পর্যন্ত এ প্রেসক্লাবটির নিজস্ব কোনো কার্যালয় নেই। যতটা না প্রেসক্লাবের উন্নয়ন নিয়ে কাজ হওয়ার কথা ছিল তার থেকে বেশি হয়েছে নেতৃত্বে থাকার প্রতিযোগিতা। প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে একে একে অনেকেই নেতৃত্বের স্বাদ গ্রহণ করেন, কিন্তু প্রেসক্লাবের উন্নয়নে দৃশ্যমান কোনো কিছুই করেন নি। ২০১২ সালে প্রেসক্লাবের নামে সরকারি দুই শতক জমি লীজ নেয়া হলেও ৮ বছরের টাকা বকেয়া পড়ে। তবে প্রেসক্লাবের ইতিহাসে সবচেয়ে কালো অধ্যায় ছিল বিগত কমিটি। তিন বছরের জন্যে দায়িত্বভার গ্রহণ করলেও তারা ১০টি বছর পার করে দেন। তাদের সময় সাংবাদিকদের মাঝে বিভাজন তৈরি হয়। ৮ বছরের লীজের টাকা বকেয়া থাকে। ১০ বছরের মধ্যে সদস্যদের মাসিক চাঁদা ১ মাসের জন্যেও আদায় করা হয়নি। মাসিক সভা তো দূরের কথা, বছরে একটি সভাও হয়নি। শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র থাকলেও তা কখনোই মেনে চলতে দেখা যায়নি। এ সকল সমস্যার মাঝে সাংবাদিকদের মধ্যে তৈরি হয় বিভাজন। এরই প্রেক্ষিতে গত বছর নতুন করে ঘোষণা করা হয় নতুন কমিটি।

কমিটি ঘোষণার পর স্থানীয় সংসদ সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের জীবন্ত কিংবদন্তি মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের হাতে ফুল দিয়ে তাদের পথচলার শুভ সূচনা হয়। এরপর একে একে কয়েকটি কাজ হাতে নিয়ে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। দায়িত্বভার গ্রহণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম মহোদয়কে প্রধান অতিথি করে বিশাল ইফতার মাহফিল, শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের নিজস্ব ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে সম্পত্তি ক্রয়, বকেয়া থাকা লীজকৃত সম্পত্তির ৮ বছরের টাকা পরিশোধ, সাংবাদিকদের কল্যাণ তহবিল গঠন, নতুন সদস্যদের আবেদন গ্রহণ উল্লেখযোগ্য। সর্বশেষ গত ১ ফেব্রুয়ারি শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ৫ দিন যাবৎ সমুদ্র সৈকতে আনন্দ ভ্রমণের আয়োজন সকলের দৃষ্টি কেড়েছে। শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সদস্যদের পরিবার নিয়ে দুটি বাস যোগে প্রায় ১শ’ ১০ জনের এ আয়োজন ছিল মনোমুগ্ধকর। সদস্যদের জন্য ব্লেজার, টিশার্ট, ক্যাপ, কোটপিন, নারীদের জন্যে শাড়ি, আনন্দ ভ্রমণ খচিত মগ, সকলের জন্যে খেলাধুলার আয়োজন ও প্রায় অর্ধ লাখ টাকার পুরস্কার, এছাড়াও ছিল আকর্ষণীয় র‌্যাফেল ড্র।

একটি আনন্দ ভ্রমণ কীভাবে সফল করতে হয় তা আমার আগে জানা ছিল না। কিন্তু এ কঠিন কাজটা সহজ করে দিলো শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের এক ঝাঁক নিবেদিতপ্রাণ সদস্য। তাদের মাসব্যাপী নিরলস পরিশ্রমের সফল সমাপ্তি ঘটে ৫ ফেব্রুয়ারি। ঝিমিয়ে পড়া একটা সংগঠন কীভাবে উজ্জীবিত হয়ে উঠে সেটা না দখলে বিশ্বাস করা কঠিন। শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঐক্যবদ্ধ হয়ে এমন একটি আনন্দ ভ্রমণ সত্যিই অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। সমুদ্রের পানিতে ডুব দিয়ে যেন অতীতের সকল গ্লানি ধুয়ে মুছে ফেলতে চেয়েছিল শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সকল সদস্য। আমি সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। এটি সারা জীবন সদস্যদের মাঝে সেতুবন্ধন হয়ে থাকবে।

সুশৃঙ্খল, প্রাণবন্ত, ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করলে সফলতার উচ্চ শিখরে পৌঁছা যে সহজ তা প্রমাণ করেছে শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দ। এটি শুধু আনন্দ ভ্রমণই নয় এটি পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। এটি শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের ঐক্যের সেতুবন্ধন। ইনশাআল্লাহ এই বন্ধন থাকবে অটুট। আগামীতে শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

লেখক : সভাপতি, শাহরাস্তি প্রেসক্লাব।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়