সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   এসএসসি সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ

প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

সাগরকন্যার ঢেউয়ে হৃদয়ের স্নান

স্বপন কর্মকার মিঠুন ॥
সাগরকন্যার ঢেউয়ে হৃদয়ের স্নান

কতো দুঃখ, কতো ব্যথা সাগর জলে ভেসে গেলো। সাগরকন্যার প্রতিটা ঢেউ হৃদয়ে এনে দিয়েছে হাজারো আনন্দ। দুই নয়নে শুধু সাগর কন্যার ঢেউয়ের খেলা দেখে মুহূর্তের মধ্যে ভুলে গেলাম সাথে আসা সহকর্মী আর স্ত্রী-সন্তানদের। সাগর কন্যার ঢেউয়ের জল চরণে স্পর্শ মাত্রই হৃদয়ে চেতনা ফিরলে হঠাৎ সহকর্মী ও স্ত্রী-সন্তানদের মনে পড়ে। ছুটে আসি সহকর্মীদের ভিড়ে। তাদের পরিবার সদস্য এবং আমার স্ত্রী-সন্তানদের সাগর কন্যার ঢেউয়ে নিজেদের বিলিয়ে দিতে দেখে আমারও বাসনা হলো ঢেউয়ের জল নিয়ে আনন্দ করতে। নিজেকে সামলাতে না পেরে তাদের সঙ্গে নিজেও সাগর কন্যার জলরাশির শান্ত ঢেউয়ের সঙ্গে মিতালি করতে ঝাঁপিয়ে পড়লাম। এতে কী আনন্দ, সুখ, তৃপ্তি রয়েছে যারা এমন আনন্দে গিয়েছে শুধু তারাই অনুভব করতে পারবে। সাগর কন্যার লোনা জলরাশি আমাদের করেছে বিমোহিত। ছোট ছোট বালি কণা নিয়ে শিশুদের নানান রকমের খেলা করতে দেখে আমারও শৈশবে ফিরে যেতে ইচ্ছে হচ্ছিল। কিন্তু সময় শেষ, দুপুর বেলার খাবার ডাক পড়েছে।

শাহরাস্তি প্রেসক্লাব থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পাঁচদিনের আনন্দ ভ্রমণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এতে প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য, সহযোগী সদস্য ও দাতা সদস্যরা সপরিবারে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে ভ্রমণ সফল করেন।

লাবণী বিচ সংলগ্ন লাবণী মোটেলে সহকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উঠলাম। তারপর লাবণী বিচে স্নান, পরের দিন সন্ধ্যায় স্যান্ডি বিচ রেস্টুরেন্টে রাতের ডিনারের জন্যে যাওয়া হয়। স্যান্ডি বিচ রেস্টুরেন্টের এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আনন্দ উপভোগ করেন প্রেসক্লাবের পরিবারের সদস্যরা। রাত দেড়টায় ডিনার শেষে স্যান্ডি বিচ থেকে রাতে সাগর কন্যার ঢেউ আর কথা শুনতে শুনতে পায়ে হেঁটে পৌঁছে গেলাম সুগন্ধা বিচে। সেখানে সহকর্মীদের পরিবারের সদস্যরা বার্মিজ মার্কেটে কেনাকাটা শেষে ক্লান্ত শরীর নিয়ে বিশ্রামের জন্যে লাবণী মোটেলে স্ব স্ব কক্ষে অবস্থান করেন। তারপরের দিন দুপুরের খাবারের জন্যে যাওয়া হয় কলাতলি শ্বশুর বাড়িতে। না, এটা আমাদের আসল শ্বশুর বাড়ি নয়। হোটেলের নামই শ্বশুর বাড়ি। হোটেল কর্তৃপক্ষের দুজন আমাদের চাঁদপুরের সন্তান। তাদের আদর-যত্নে কোনো ঘাটতি ছিলো না। বিকেলে স্ব স্ব উদ্যেগে ঘোরাফেরা আর আনন্দ উপভোগের মধ্য দিয়ে কেটে গেলো দিন গড়িয়ে রাতের অর্ধেক সময়। আবার বিশ্রামে হোটেল কক্ষে ফেরা। পরের দিন সকালের নাস্তা শেষে মোটেল লাবণী মাঠে শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের ফ্যামিলি ডে পালন উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে নানা ইভেন্টের খেলাধুলা। স্বতঃস্ফূর্তভাবে সদস্যসহ পরিবারের সকলের অংশগ্রহণে তা সম্পন্ন হয়। এছাড়া র‌্যাফেল ড্র ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মাঝে তুলে দেয়া হয় পুরস্কার।

এবার দুপুরের খাবার ও বাড়ি ফেরার তাগিদ। মন চায় না সাগর কন্যাকে একা ফেলে চলে যেতে। তারপরও মেঘাছন্ন হৃদয়ে প্রেসক্লাবের সহকর্মীদের নিয়ে লাবণী মোটেলে ও সাগর কন্যাকে বলে আসলামণ্ড-তোমাদের সঙ্গে এই দেখা শেষ দেখা নয়, জলরাশির নিচে বালির স্তরে রেখে আসলাম আমাদের পদচিহ্ন, রেখো যত্ন করে, দেখা হবে আবার।

শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ২০২৪ আনন্দ ভ্রমণের আয়োজন করা হয়েছিলো। তা বাস্তবায়নে প্রেসক্লাবের সকল সদস্যই খুব আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। এতো বড় আয়োজনে ভুলত্রুটিগুলো আমি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মাথায় বহন করে নিলাম, আর সফলতা আপনাদের মাঝে উৎসর্গ করলাম। যেহেতু শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের উদ্যোগে এই প্রথম বিনোদনমূলক আনন্দ ভ্রমণের আয়োজন করা হয়েছে, আজকের ভুল থেকে আগামী দিনের পথ চলা সুগম হবে। ঐক্যের বিকল্প নেই।

লেখক : সাধারণ সম্পাদক, শাহরাস্তি প্রেসক্লাব।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়