শুক্রবার, ০২ মে, ২০২৫  |   ৩২ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০২৫, ১১:২৯

কালের সাক্ষী দৃষ্টিনন্দন লোহাগড় মঠ

মো. মাসুদ হোসেন
কালের সাক্ষী দৃষ্টিনন্দন লোহাগড় মঠ

কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতাধীন প্রায় ৭০০ বছরের পুরনো লোহাগড় মঠ। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলা শহর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার উত্তরে প্রাচীণ জমিদার গ্রাম লোহাগড়। প্রতাপশালী জমিদার লোহ ও গহড় এর নামানুসারে গ্রামটির নামকরণ করা হয় লোহাগড়। এ গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ডাকাতিয়া নদীর দক্ষিণে ছোট বড় তিনটি মঠের অবস্থান। দৃষ্টিনন্দন এই মঠগুলো মনে করিয়ে দেয় জমিদার লোহ ও গহড়ের কথা। সুউচ্চ এসব মঠ একসময় জমিদারদের উপাসনালয় হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ঐতিহ্যবাহী জমিদার এবং তাদের নির্মিত দর্শনীয় মঠগুলো দেখতে প্রতিদিন ভিড় করেন অসংখ্য পর্যটক। সম্প্রতি ২০ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে মঠগুলোর মধ্যে বড় মঠটি সম্পূর্ণ ও বাকীগুলো আংশিক সংস্কার করেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। নতুন বরাদ্দ পেলে চলতি অর্থবছরেই বাকি দুটি মঠের পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের পাশাপাশি এর চারপাশে বাউন্ডারি দেয়াল, ফুলের বাগানসহ নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে এটি দৃষ্টিনন্দন হবে এবং ভ্রমণপিপাসুদের তৃষ্ণা মিটবে।

স্থানীয়দের ধারণা মতে, ইতিহাস ঐতিহ্যে ঘেরা এ মঠগুলোর নির্মাতা দুই সহোদর লোহ ও গহড় ছিলেন অত্যাচারী রাজা। তাদের বাড়ির সামনে দিয়ে বয়ে যাওয়া ডাকাতিয়া নদীতে নৌকা চলাচল করতে হতো নিঃশব্দে। প্রায় ৭০০ বছর আগে লোহাগড় জমিদার বাড়ির জমিদাররা এই এলাকাটিতে রাজত্ব করতেন। মঠের মত বিশালাকার দুটি প্রাসাদ। এই প্রাসাদেই জমিদাররা তাদের বিচারকার্য সম্পাদন করতেন। ডাকাতিয়া নদীর তীরে তাদের বাড়ির অবস্থানের নির্দেশিকাস্বরূপ সুউচ্চ মঠগুলো ছিল তাদের গৌরব ও প্রভাব-প্রতিপত্তির প্রতীক। আর সেই প্রতিপত্তির কথা জানান দিতে তারা মঠের শিখরে একটি স্বর্ণদণ্ড স্থাপন করা হয়। তবে দুঃখের বিষয় হলো- বর্ষ মৌসুমে বিলে পানি থাকায় দূর থেকেই এই মঠটি দেখার সুযোগ থাকে। গ্রীষ্মের সময় কাছে গিয়ে এটি দেখা যায়। এদিকে সুউচ্চ এই মঠকে ঘিরে চলতি বছরের গত ৪ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় ফরিদগঞ্জ শহীদ মিনারে মঞ্চস্থ হয়েছে প্রত্ন-নাটক ‘লোহাগড় মঠ’-এর দ্বিতীয় প্রদর্শনী। নাটকটি পরিবেশনা করেছেন চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি রেপার্টরি নাট্যদল। রেজা আজিজ রচিত এ নাটকের নির্দেশক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক মোস্তাফা কামাল। এছাড়াও এই উপজেলায় রয়েছে রূপসা জমিদার বাড়ি সহ জমিদারদের কয়েকটি দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলী।

কিভাবে যাবেন- দেশের যেকোন স্থান থেকে রেলপথ, নৌপথ কিংবা সড়কপথে চাঁদপুর জেলা শহরে আসা যায়। সেখান থেকে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১নং পশ্চিম বালিথুবা ইউনিয়নের চান্দ্রা বাজারে এসে সেখান থেকে দেড় কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ডাকাতিয়া নদীর তীরে লোহাগড় মঠে যাওয়া যায়। কোথায় খাবেন- চান্দ্রা বাজারে রয়েছে কয়েকটি খাবারে হোটেল। তাছাড়া ফরিদগঞ্জ উপজেলা শহরেও রয়েছে ভালোমানের খাবারের ব্যবস্থা। এছাড়াও এ বাজারে গেলে খেতে পারবেন আউয়ালের বিখ্যাত মিস্টি। কোথায় থাকবেন- চাঁদপুর জেলা শহরে থাকার জন্য রয়েছে অত্যাধুনিক ব্যবস্থা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়