রবিবার, ০৩ আগস্ট, ২০২৫  |   ৩০ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:৪৭

জীবিকা নির্বাহে পিতা ও পুত্র কমিউনিটি পুলিশিংয়ের নৈশকালীন টহল সদস্য

বিএ পড়ুয়া তামজীদ উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে চায়

সেলিম রেজা
জীবিকা নির্বাহে পিতা ও পুত্র কমিউনিটি পুলিশিংয়ের নৈশকালীন টহল সদস্য
কমিউনিটি পুলিশিংয়ের নৈশকালীন টহল সদস্য জাহাঙ্গীর (পিতা) ও একই পদে কর্মরত তার পুত্র তামজীদ।

চাঁদপুর সরকারি কলেজে বিএ পড়ুয়া তামজীদ হোসেন জিহাদ জীবিকা নির্বাহে, বিশেষ করে লেখাপড়ার খরচ জোগাতে কাজ করছেন কমিউনিটি পুলিশিং নৈশকালীন টহল সদস্য হিসেবে। অর্থ কষ্টে দিনাতিপাত করা তামজীদ কমিউনিটি পুলিশিং চাঁদপুর অঞ্চল-৫-এ কর্মরত। অত্যন্ত ধর্মভীরু তামজীদের পিতা মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনিও একই অঞ্চলের সিনিয়র নৈশকালীন টহল সদস্য।

রিকশাচালক পিতাকে সাহায্য করতে তামজিদ তার পিতার আগ্রহে কমিউনিটি পুলিশে চাকুরি নেয়। প্রায় ২ বছর অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে তিনি তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। মিথ্যা কথা বলা ও ডিউটি ফাঁকি দেওয়া তার মধ্যে নেই। কমিউনিটি পুলিশিং টহল সদস্যদের কারো কারো বদনাম থাকলেও তামজীদ এ বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক। মাহে রমজান মাসের রোজা রাখা, ধর্মীয় বিভিন্ন দিবসে রোজা রাখা এবং নিয়মিত নামাজ আদায় করাসহ নিরিবিলি থাকা তার স্বভাব। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে তামজীদ তৃতীয়। তার বড়ো বোনের বিয়ে হয়েছে। মেজো বোন চাঁদপুর সরকারি কলেজে অর্থনীতিতে অনার্স পড়ছে। ছোট বোন পড়ছে পৌর পীর মহসীন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণিতে। আর ছোট ভাই পড়ছে গণি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে।

লাজুক প্রকৃতির তামজীদ এতো কষ্ট করে জীবনযাপন করলেও টহল সদস্য হিসেবে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করেন না। আর কারো কাছে সাহায্য নেয়ার কথাও কখনও বলেন না ।

তামজীদ কোনো কাজকে ছোট করে দেখছেন না। তাই কমিউনিটি পুলিশিং নৈশকালীন টহল সদস্যের কাজ করতে তার কোনো খারাপ লাগে না। সংসারের হাল ধরা, ভাইবোনদের ও নিজের পড়াশোনার খরচ জোগাতে কমিউনিটি পুলিশে চাকুরি নেওয়া তামজিদের লক্ষ্য উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করা।

তামজীদের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে তাকে একটি চাকুরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্যে কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি এগিয়ে আসলে সে উপকৃত হবে। এতে তার ভাই-বোনদের লেখাপড়াও হবে এবং পুরো পরিবারের কষ্ট কম-বেশি লাঘব হবে।

এ বিষয়ে কমিউনিটি পুলিশিং চাঁদপুর অঞ্চল-৫-এর সভাপতি রোটা. কাজী শাহাদাত বলেন, তামজীদ তার পিতা জাহাঙ্গীরের মাধ্যমে চাকুরির জন্যে আমার কাছে আসে প্রায় ২ বছর আগে। তখন তার কথা শুনে তাকে চাকুরি দিয়ে দেই। চাকুরিটা সে করতে পারবে কিনা সে ব্যাপারে ছিলো সংশয়। কেননা ইতঃপূর্বে এসএসসি/এইচএসসি পাস কাউকে কাউকে টহল সদস্য পদে স্বল্প বেতনের কষ্টকর চাকুরি দিলেও তারা সে চাকুরি করতে পারে নি। এক্ষেত্রে তামজিদ ব্যতিক্রম। সে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে তার দায়িত্ব পালন করছে। আমরা তার উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের ইচ্ছা পূরণে নিজস্ব তহবিল থেকে সম্ভাব্য সহযোগিতার বিষয়টি ভেবে দেখছি। এ ব্যাপারে চাঁদপুর জেলা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের প্রধান উপদেষ্টা পুলিশ সুপার মহোদয়ের সম্ভাব্য সহযোগিতাও প্রত্যাশা করছি

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়