সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১৮:১৭

রোটারী ক্লাব অব চাঁদপুর হিলশা সিটির ৬ষ্ঠ অভিষেক অনুষ্ঠান

রোটারী ক্লাবগুলো নিজ নিজ অবস্থান থেকে মানুষের জন্যে কল্যাণমূলক কাজ করে যাচ্ছে ........রোটারিয়ান এম আতাউর রহমান পীর

কবির হোসেন মিজি।।
রোটারী ক্লাবগুলো নিজ নিজ অবস্থান থেকে মানুষের জন্যে কল্যাণমূলক কাজ করে যাচ্ছে  ........রোটারিয়ান এম আতাউর রহমান পীর

রোটারী ক্লাব অব চাঁদপুর হিলশা সিটির ৬ষ্ঠ অভিষেক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৬ আগস্ট ২০২৫) রাত সাড়ে ৮টায় চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী চৌরাস্তায় রেডচিলি কাবাব এন্ড গ্রিল রেস্টুরেন্টে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশে এই অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রোটারী ডিস্ট্রিক্ট ডি-৬৫-এর ডেপুটি কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর রোটারিয়ান পিডিজি এম. আতাউর রহমান পীর, এমপিএইচএফ, এমসি।

এসময় তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই এই ক্লাবের গৌরবময় ইতিহাস সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। চাঁদপুরের মতো একটি জেলা শহরে তিনটি রোটারী ক্লাবে প্রায় দেড়শ' সদস্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন, এটি সত্যিই প্রশংসনীয়। রোটারীর প্রতি আপনাদের ভালোবাসা ও আন্তরিকতাই এর মূল শক্তি। আপনারা যেভাবে অন্ধ মানুষের কর্মসংস্থানে সহযোগিতা ও প্রতিবন্ধী মানুষের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ করেছেন, সেটিই আসলে রোটারীর প্রকৃত কাজ। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো, তাদের কষ্ট লাঘব করা-- এটাই রোটারীর মূল লক্ষ্য। প্রত্যেক সদস্যের চিন্তা থাকতে হবে, আমি একদিন প্রেসিডেন্ট হবো। সেই লক্ষ্য ও দায়িত্ববোধ ছাড়া সামনে এগোনো সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, আজ যে তিনজন নতুন সদস্য শপথ গ্রহণ করেছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, আপনাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে, রোটারী ক্লাব মানে কেবল একটি সংগঠন নয়, এটি হলো সেবার এক বিশাল ক্ষেত্র। বিশ্বের কিছু দেশ ছাড়া অন্য সকল দেশে রোটারী ক্লাব রয়েছে, আর প্রতিটি ক্লাব তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে মানুষের জন্যে কল্যাণমূলক কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দায়িত্ব শুধু বড়ো কাজ করা নয়, ছোট ছোট কাজও সমাজের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, গাছ লাগানো। একটি গাছ মানুষের জন্যে অক্সিজেন সরবরাহ করে, পরিবেশ রক্ষা করে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যে আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়ায়। তেমনি দরিদ্র শিশুদেরও শিক্ষিত ও সুশৃঙ্খল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সবার। রোটারীর মাধ্যমে আমরা যদি মানুষের জীবনে আলো ছড়িয়ে দিতে পারি, সেটিই হবে আমাদের সবচেয়ে বড়ো সাফল্য।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডি-৬৫-এর অ্যাসিস্টেন্ট কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর, প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ রোটারিয়ান প্রফেসর ডা. তৃপ্তীশ চন্দ্র ঘোষ। অন্যান্য অতিথির মধ্যে ছিলেন রোটারী ক্লাব অব চাঁদপুর হিলশা সিটির প্রতিষ্ঠাকালীন অ্যাডভাইজার (জিএসআর), চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সাবেক সভাপতি রোটা. কাজী শাহাদাত, পিএইচএফ ও চাঁদপুর সেন্ট্রাল রোটারী ক্লাবের চার্টার মেম্বার ও সাবেক সভাপতি রোটা. শেখ মনির হোসেন বাবুল, পিএইচএফ। মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন রোটারী ক্লাব অব চাঁদপুর হিলশা সিটির চার্টার (প্রতিষ্ঠাতা) সভাপতি রোটা. রহিমা বেগম। এছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সভাপতি রোটা. মো. মোস্তফা ফুল মিয়া সহ ক্লাবের সাবেক সভাপতি (পিপি)বৃন্দ, চাঁদপুর সেন্ট্রাল রোটারী ক্লাবের সভাপতি রোটা. আব্দুল্লাহ আল মামুন, সেক্রেটারী রোটা. গিয়াস উদ্দিন মিলনসহ সাবেক সভাপতিবৃন্দ, হাজীগঞ্জ রোটারী ক্লাবের সভাপতি নবীন রহমান ও সেক্রেটারীসহ সাবেক সভাপতি রোটা. জাফর আহমেদ। চাঁদপুর শহরের দুটি রোটারী ক্লাবের উল্লেখযোগ্য রোটারিয়ানদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রোটা. পিপি অধ্যাপক মো. জাকির হোসোন, রোটা. পিপি জামাল হোসেন, রোটা. ইঞ্জিনীয়ার মো. আলমগীর হোসেন পাটোয়ারী, রোটা. পিপি মোস্তাক আহমেদ খান, রোটা. পিপি শরীফ মো. আশ্রাফুল হক, রোটা. পিপি ডা. মিজানুর রহমান, রোটা. পিপি নাসিরউদ্দিন খান, রোটা. পিপি খোরশেদ আলম পাটোয়ারী কাঞ্চন, রোটা. পিপি অ্যাড. মো. নজরুল ইসলাম, রোটা. পিপি ডা. ইফতেখার আলম, রোটা. পিপি সাখাওয়াত হোসেন শাকিল, রোটা. পিপি মাকসুদুর রহমান, চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক রোটা. ডা. রেজাউল করিম। আরো উপস্থিত ছিলেন ডা. রেজিয়া বেগম, ডা. আসমা বেগম, চাঁদপুর জেলা পুস্তক ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মিয়াজী, রোটার‍্যাক্টের সাবেক ডিআরআর সাজ্জাদ হোসেন, রোটা. উজ্জ্বল হোসাইন, সিনিয়র আইনজীবী জিপি অ্যাডভোকেট এ জেড এম রফিকুল হাসান রীপন প্রমুখ।

রোটারী ক্লাব অব চাঁদপুর হিলশা সিটির ষষ্ঠ অভিষেকের চেয়ারম্যান রোটা. মো. তাজুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে, ক্লাবের বিদায়ী সভাপতি (২০২৪-২৫) মো. রকিবুল হাসান রুমন ও ক্লাব অর্গানাইজার মফিজ উদ্দিন সরকারের পরিচালনায় মূল পর্বে সভাপতিত্ব করেন নবাগত সভাপতি রোটা. এসএম মোরশেদ সেলিম। বিদায়ী বছরের প্রতিবেদন তুলে ধরেন বিদায়ী সেক্রেটারী রোটা. অ্যাড. মাহমুদ হাসান কবির। তারপর বিদায়ী সভাপতির বক্তব্যের পর তিনি নবাগত সভাপতিকে কলার পরিয়ে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। একইভাবে বিদায়ী সেক্রেটারী নবাগত সেক্রেটারী ইলিয়াস মজুমদারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। নবাগত সভাপতি তাঁর বোর্ডের সকল সদস্যকে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেন এবং প্রধান ও বিশেষ অতিথি সহ অন্য অতিথিবৃন্দ বোর্ডের সদস্যকে ফুলেল শুভেচ্ছায় অভিষিক্ত করেন। রোটা. পিপি আসিফ উল ইসলামের সম্পাদনায় অভিষেক স্মরণিকা 'রূপালী সিটি'র মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে একজন অসহায় প্রতিবন্ধীকে হুইল চেয়ার ও অন্ধ হাফেজকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। এর আগে এদিন দুপুরে চাঁদপুর শহরের শপথ চত্বর এলাকায় গরীব, অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে স্কুলব্যাগ ও ছাতা প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন রোটা. পিপি কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া ও গীতা পাঠ করেন রোটা. বিজন কুমার পাল। অনুষ্ঠানে বিগত রোটারী বর্ষে ক্লাবের কর্মকাণ্ডে সক্রিয়তার স্বীকৃতিস্বরূপ রোটা. সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া, রোটা. আলী আহমদ ভূঁইয়া ও রোটা. জাহাঙ্গীর আলম হৃদয়কে 'বেস্ট পারফরমেন্স অ্যাওয়ার্ড' প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে সকল অতিথি ও ক্লাব কর্মকর্তাদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেয়া হয়। অতিথি রোটারিয়ানদের উপহার প্রদান করা হয়। প্রধান ও বিশেষ অতিথি, বিদায়ী ও নবাগত সভাপতি-সেক্রেটারী, চার্টার প্রেসিডেন্ট, প্রোগ্রাম চেয়ারম্যান, ক্লাব অর্গানাইজার ও ক্লাবের বিদায়ী ফার্স্ট লেডীকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। নবাগত সেক্রেটারী রোটা. ইলিয়াস মজুমদারের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের পর র‍্যাফেল ড্র, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৈশভোজের মাধ্যমে অভিষেক অনুষ্ঠানের সফল সমাপ্তি ঘটে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়