সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৫, ১৮:২৯

বিয়ের জন্যে কনে দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় ঘটককে হত্যা

অনলাইন ডেস্ক
বিয়ের জন্যে কনে দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায়  ঘটককে হত্যা

মতলব উত্তর উপজেলার সাদুল্লাহপুর ইউনিয়নের গোপালকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের একটি পুকুর থেকে গত শুক্রবার (১১ জুলাই ২০২৫) উদ্ধার করা হয় হাবিবউল্লাহ নামে এক ব্যক্তির মরদেহ। এই ঘটনার ২১ ঘণ্টার মধ্যে ১৩ জুলাই রোববার অভিযান চালিয়ে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে আটক করা হয় অভিযুক্ত কামাল মিয়াকে।

পুকুরে মরদেহের পাশে ভাসছিলো মুঠোফোন। আর সেই মুঠোফোনের কল লিস্ট দেখেই শনাক্ত করা হয় খুনিকে।

মূলত বিয়ে করা নিয়ে বাকবিতণ্ডার জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।

পুলিশের হাতে আটক কামাল মিয়া স্বীকার করে বলেন, হাবিব উল্লাহ দুই দফায় তার কাছ থেকে মোট ১০ হাজার টাকা নেন। তাকে বিয়ে করাবে বলে টাকা নেয় হাবিব। পরে নারায়ণগঞ্জ থেকে মতলব উত্তরে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যান হাবিব উল্লাহ। কিন্তু কনে না দেখিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। এক পর্যায়ে কথা কাটাকাটির জেরে হাবিব উল্লাহ কামাল মিয়ার হাতের আঙ্গুল কামড় দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হাবিব উল্লাহর অণ্ডকোষ চেপে ধরেন কামাল। এক পর্যায়ে মৃত্যু হলে পুকুরের পানিতে মরদেহ ফেলে গা ঢাকা দেয় কামাল মিয়া।

কামাল মিয়া পেশায় নারায়ণগঞ্জের একটি ছাপাখানার কর্মচারী। কামাল মিয়ার বাড়ি বরিশালের চরমোনাইয়ের রাজারচর গ্রামে। তার বাবার নাম খালেক মিয়া (৫৬)। আর ঘটনার শিকার হাবিব উল্লাহর (৫০) বাড়ি নারায়ণগঞ্জের পূর্ব মদনপুরে। পেশায় অটোবাইক চালক ছিলেন তিনি। তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে মতলব উত্তর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

আলোচিত এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে রোববার দুপুরে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব গণমাধ্যমের সামনে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পুকুরে ভাসমান মরদেহ অজ্ঞাত হিসেবে উদ্ধার করা হলেও পরে সেখানে থাকা একটি মুঠোফোনের সূত্র ধরেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসে।

পুলিশ সুপার বলেন, কামাল মিয়ার প্রথম স্ত্রী চলে যান। তারপর দ্বিতীয় বিয়ের জন্যে সে ঘটক ধরেন হাবিব উল্লাহকে। হাবিব উল্লাহ কনে খুঁজে দেওয়ার কথা বলে প্রথমে ৬ হাজার এবং পরে আরো ৪ হাজার টাকা নেন কামালের কাছ থেকে। একপর্যায়ে মতলব উত্তরে তার শ্বশুর বাড়িতে কনে পাওয়া গেছে বলে জানান হাবিব উল্লাহ । এমন কথা বলে নারায়ণগঞ্জ থেকে কামাল মিয়াকে শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে যান হাবিব উল্লাহ। কিন্তু সেখানে কনে না দেখতে পেয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হয়। পরে হাতাহাতি এবং মারামারি হয়। এক পর্যায়ে হাবিব উল্লাহ কামাল মিয়ার হাতের আঙ্গুলে কামড় দেয়। আর এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কামাল মিয়া হাবিব উল্লাহর অণ্ডকোষ চেপে ধরেন। এতে মৃত্যু হয় হাবিব উল্লাহর।

এদিকে আসামি কামাল মিয়াকে গ্রেফতার করে রোববার দুপুরে চাঁদপুরের আদালতে হাজির করা হয়। এসময় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল হাসানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন কামাল মিয়া। পরে তাকে চাঁদপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়