প্রকাশ : ২৩ জুন ২০২৫, ০৯:৪৪
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন সংকট! আক্রান্ত রোগীদের ভোগান্তি
'প্রতিদিন ৩০-৪০ জন রোগী ভ্যাকসিন নিতে এসে ফেরত যায়'

আড়াই শ' শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী ভ্যাকসিন নেই। গত ২১ মে থেকে এ সংকট শুরু হলেও এখন পর্যন্ত কোনো ভ্যাকসিন আসেনি। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের পাশে থাকা জলাতঙ্ক কক্ষের দরজায় টানানো একটি নোটিসে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, কুকুর, বিড়ালসহ ও অন্যান্য প্রাণীর আক্রমণে আহত রোগীদের জন্যে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী ভ্যাকসিন সরবরাহ শেষ হয়ে যাওয়ায় ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নতুন ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত এ অবস্থা অব্যাহত থাকবে বলেও উল্লেখ করা হয় ওই নোটিসে।
|আরো খবর
চাঁদপুর শহরের ওয়্যারলেস এলাকার বাসিন্দা আমজাদ হোসেন বলেন, আমার ছোট ছেলেটিকে কুকুর কামড় দেয়। সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখি, দরজায় নোটিস টানানো--ভ্যাকসিন নেই। পরে বাহির থেকে কিনে ভ্যাকসিন দিতে হয়েছে। কিন্তু সব মানুষের তো আর ভ্যাকসিন কেনার টাকা সাথে থাকে না। এদিকে ভ্যাকসিন সরবরাহ না থাকায় হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্তরাও রয়েছেন অনেক চাপে।
হাসপাতালের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ভ্যাকসিন সরবরাহ বন্ধ থাকায় আমরাও অসহায়। নতুন করে ভ্যাকসিন এলেই কার্যক্রম চালু হবে। ভ্যাকসিন বিতরণের সরাসরি দায়িত্বে থাকা হাসপাতালের ব্রাদার মো. সাদেক হোসেন বলেন, আগের তুলনায় বর্তমানে শহর এবং গ্রামে অনেকেই শখ করে বিড়াল পুষছেন। যার ফলে তাদের আদর করতে গিয়ে কামড়ানোর ঘটনাও বেড়েছে। বিড়ালের কামড়ের ক্ষেত্রেও জলাতঙ্কের ঝুঁকি থাকে। তাই প্রতিদিনই গড়ে অন্তত ৩০/৪০ জন মানুষ ভ্যাকসিন নিতে আসেন। এই কারণে আমাদের কাছে থাকা ভ্যাকসিনগুলো সময়ের আগেই দ্রুত শেষ হয়ে যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলাতঙ্ক একটি ভয়াবহ ও প্রাণঘাতী রোগ। আক্রান্ত হওয়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন না পেলে মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি ভ্যাকসিনের জেলার সর্ববৃহৎ একটি হাসপাতালে দীর্ঘ সময় অনুপস্থিত থাকা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষ, সুশীল সমাজ ও সচেতন নাগরিকরা দ্রুত নতুন করে পর্যাপ্ত পরিমাণে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন সরবরাহ নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।