প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৪০
যদিও আইন হাতে তুলে নেয়া, তবুও-

দীর্ঘ চার দশক তথা ৪০ বছর পর চাঁদপুর সরকারি কলেজের ক্যাম্পাসে অবৈধভাবে দখল করে রাখা একটি বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। সোমবার (৮ ডিসেম্বর ২০২৫) দুপুর ১২টার দিকে কলেজের শিক্ষার্থীরাই সম্মিলিতভাবে এই উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেয় এবং তাদের প্রচেষ্টায় প্রায় ৪০ বছর ধরে বেদখল থাকা কলেজের সম্পত্তি উদ্ধার করা হয়। যার মধ্য দিয়ে কলেজের নতুন ভবন নির্মাণের পথ সুগম হলো। সোমবার বেলা ১২টার দিকে কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে ক্যাম্পাসের ভেতরে থাকা ‘খান সেন্টার ও বন্ধু কম্পিউটার’ নামের দোকানঘরটি উচ্ছেদ করেন। ইটের তৈরি পুরাতন এই দোকানটি প্রায় ৪০ বছর ধরে দখল করে রেখেছিলেন চাঁদপুর পৌরসভার কর্মকর্তা মো. শাহজাহান খান। দীর্ঘ সময় ধরে দখলে থাকা এই স্থাপনা কলেজের নতুন ছয়তলা ভবন নির্মাণের মূল প্রতিবন্ধকতায় পরিণত হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ কয়েক দফা নোটিস দিলেও দখলদার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীরাই মাঠে নেমে কলেজের মালিকানাধীন জমিটি উদ্ধার করে।
জানা যায়, সম্পত্তিটি কলেজের জন্যে প্রাপ্ত ‘ফিট গিফট’ এবং এটি দাগ নম্বর ৫০১, ৫০২, ৫০৫, ৫০৬ ও ৫৩৩-এর অন্তর্ভুক্ত। এ জমিতে নতুন ভবন নির্মাণ জরুরি হওয়ায় গত ১১/১১/২০২৫ তারিখে প্রথম নোটিস এবং ২৬/১১/২০২৫ তারিখে দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত নোটিস প্রদান করা হয়। নোটিসে ০৩/১২/২০২৫ তারিখের মধ্যে দোকান অপসারণের নির্দেশ থাকলেও দখলদার তা মানেননি। এরপরই শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে দখলমুক্ত অভিযানে অংশ নেয়। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর কলেজের গুরুত্বপূর্ণ জমি ফিরে পাওয়ায় এখন দ্রুত নতুন ছয়তলা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে কলেজ প্রশাসন। এই উচ্ছেদ কলেজের সৌন্দর্য বৃদ্ধি, শিক্ষার্থীদের চলাচল এবং ভবিষ্যৎ অবকাঠামো উন্নয়নে নতুন দিগন্ত খুলে দিলো। এ বিষয়ে চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর একেএম আব্দুল মাননান বলেন, চাঁদপুর সরকারি কলেজের নতুন ছয়তলা ভবন নির্মাণের জন্যে এ জায়গাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কলেজের জমিতে গড়ে ওঠা একটি বাণিজ্যিক স্থাপনা দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণ কাজের বড়ো বাধা তৈরি করছিল। তিনি বলেন, প্রথমে আমরা ১১/১১/২০২৫ তারিখে একটি নোটিস এবং পরে ১৮/১১/২০২৫ তারিখে চূড়ান্ত নোটিস প্রদান করি। দুঃখজনকভাবে দখলদার আমাদের নির্দেশ মানেননি। তাই শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জানার পর নিজেদের শিক্ষাঙ্গনকে দখলমুক্ত করতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসে এবং দোকানঘরটি উচ্ছেদ করে।
নোটিসের পর নোটিসে কোনো দখলদার উচ্ছেদ না হলে সাধারণত আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়। আদালতের নির্দেশে ম্যাজিস্ট্রেট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে উচ্ছেদ চালিয়ে থাকেন। চাঁদপুর সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষকে সে প্রক্রিয়ায় যাওয়া বাঞ্ছনীয় ছিলো। কিন্তু শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ততায় কলেজ কর্তৃপক্ষ সে প্রক্রিয়ায় যেতে পারে নি। এ ক্ষেত্রে বিক্ষুব্ধ অবৈধ দখলদার আইনি পদক্ষেপে গিয়ে আবার কোন্ সমস্যায় পড়ে সেটা দেখার বিষয়। তবে তিনি বুঝেশুনে যা-ই করেন না কেনো, তাকে মাথায় রাখতে হবে তিনি সর্বোপরি অবৈধ দখলদার। এ ব্যাপারে শহরবাসী, সুধী পর্যবেক্ষক শান্তির পক্ষেই অবস্থান নেবে বলে আমাদের বিশ্বাস।








