প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:৫৭
সনাতনীদের ঘরে ঘরে লক্ষ্মী পূজা ও প্রসাদ বিতরণ

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে কোজাগরী পূর্ণিমা তিথিতে লক্ষ্মীপূজার আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে ধন, ঐশ্বর্য, সুখ ও সমৃদ্ধির জন্যে আরাধনা করা হয়। এই পূজায় দেবী লক্ষ্মীর পায়ে আল্পনা আঁকা, বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরি এবং প্রসাদ বিতরণ করা হয়, যা প্রতিটি পরিবারে উৎসবের আমেজ নিয়ে আসে।
পঞ্জিকার তিথি অনুযায়ী প্রতিবছর আশ্বিনী পূর্ণিমায় সনাতন ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী এ লক্ষ্মী পূজাটি ঘরে ধন, ঐশ্বর্য ও শান্তির প্রত্যাশায় করা হয়ে থাকে।
সোমবার (৬ অক্টোবর ২০২৫) চাঁদপুর শহরসহ গ্রাম গঞ্জে, পাড়া মহল্লার ঘরে ঘরে মেয়েরা দেবী লক্ষ্মীর পায়ের ছাপের আল্পনা আঁকায় ব্যস্ত ছিলো।
চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার যুগীপট্টির বাসিন্দা উত্তম মল্লিক জানান, তার ঘরে সোমবার দুপুরে লক্ষ্মী পূজা করা হয়।
শহরের পুরাণবাজার নতুন রাস্তা, বাকালীপট্টি, বারোয়ারী মণ্ডপ ও নতুনবাজার কালীমন্দির প্রাঙ্গণে দেখা গেছে, নতুন পাটির ঝাঁপি, ধান, চাল, কলা, নারকেল, চিনি, মিষ্টি, আতপ চাল, ফুল, প্রদীপসহ পূজোর উপকরণগুলোর ব্যাপক বিক্রি হচ্ছিলো। কেউ প্রতিমা কিনলেও অনেকে কলা বউ কিনে যাচ্ছিলেন।
লক্ষ্মী পূজাকে কেন্দ্র করে গত দুদিন ধরে চাঁদপুরের বড়ো বাজারগুলোতে ছিলো উৎসবের আমেজ। মিষ্টির দোকানগুলোয় ছিলো রসগোল্লা, সন্দেশ, পায়েস, নাড়ু ও ছানার নানা রকমের মিষ্টিজাত পণ্যের বেচাকেনা। ফুলের দোকানগুলোতেও ছিলো ভিড়। বিশেষ করে গাঁদা ও শিউলি ফুলের চাহিদা বেড়েছিলো কয়েক গুণ।
পাটের ঝাঁপি, বাঁশের চালুনি, ধানের ছড়া, মাটির প্রদীপ ও নতুন ধান-চালের ব্যবসায়ীরাও ছিলেন ব্যস্ত। বিক্রেতা মৃণাল কান্তি দাস বলেন, প্রতিবছরই এ সময় লক্ষ্মী পূজার জন্যে ভালো বিক্রি হয়। এবার দাম কিছুটা বেড়েছিলো, কিন্তু বিক্রি তেমন কমেনি। সবাই চায় দেবীর আরাধনায় কোনো ঘাটতি না থাকুক।
গৃহবধূ যমুনা রাণী বলেন, লক্ষ্মীদেবী আসেন পরিচ্ছন্ন ঘরে। তাই আমরা দিনভর ঘরসহ পুরো বাড়ি পরিষ্কার করেছি। এরপর নতুন চাল, নতুন ধান দিয়ে পূজা দিই। বিশ্বাস করি, এই পূজার মাধ্যমে ঘরে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে।
পূজোর পুরোহিত অভিজিৎ আচার্যী বলেন, লক্ষ্মী পূজা হচ্ছে একটি শুভ শক্তির আরাধনা। এটি মানুষকে শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবন, পরিশ্রম ও সততার মাধ্যমে সমৃদ্ধির পথে চলার বার্তা দেয়।