প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:২০
রাস্তাগুলো সংস্কার ও বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি
রায়পুরে দুর্গাপূজার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে চলছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড়ো ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ১৩টি প্রতিমা তৈরি শেষে মন্দির সাজসজ্জায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সবাই। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর বোধন ও মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা আর শেষ হবে ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মাধ্যমে ।
|আরো খবর
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫) উপজেলা আইনশৃংখলা কমিটির সভায় বেহাল রাস্তাগুলো মেরামত, সিসিটিভি বসানো ও নিরাপত্তাসহ সকল সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন ইউএনওসহ সেনা অফিসার ও থানার ওসি।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিগার সুলতানা, ক্যাপ্টেন ইশতিয়াক, ওসি নিজাম উদ্দিন ভুইয়া, উপজেলা বিএনপির সভাপতি নাজমুল ইসলাম মিঠু, পৌর বিএনপির সভাপতি এবিএম জিলানি, সম্পাদক নজটুল ইসলাম লিটন, জামায়াতের আমির নাজমুল হুদা, ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি হেলাল উদ্দিন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ, উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তাবারক হোসেন আজাদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ।
সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরির শেষ মুহূর্তের কাজ। দেবী দুর্গার সঙ্গে কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতীর প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। আর দুর্গোৎসব নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। আয়োজকরা বলছেন, বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবছর বেশি মজুরি নিচ্ছেন কারিগররা। যে কারণে পূজার খরচ বেড়েছে বহুগুণ।
প্রতিমা শিল্পীরা জানান, পারিশ্রমিকের দিক থেকে তারা ন্যায্য পারিশ্রমিক না পেলেও মনের খোরাক যোগাতে তারা এই কাজ করেন। তবে নতুন প্রজন্মের অনেকেই এই পেশায় আসতে চায় না। আমরা প্রতি বছর বিভিন্ন উপজেলায় কাজ করে থাকি। গত বছরের তুলনায় এ বছর পূজা মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে। কমিটির লোকজনের চাহিদা অনুযায়ী এবার প্রতিমার আকার ও ডিজাইনে ভিন্নতা এসেছে। মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির শেষ করে রঙের কাজ করেছি। রঙের কাজ শেষ করে কমিটির লোকজনের কাছে প্রতিমা বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
রায়পুর পৌর শহরের শ্রীশ্রী মদন মোহন জিউর মন্দিরের পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি প্রদিপ কুমার রায় বলেন, প্রতিবছর শান্তিপূর্ণ ভাবে পূজা উদযাপন করি। কোন সমস্যা হয় নাই। এখন পর্যন্ত সব কিছু ঠিকঠাক আছে। আশা করি আগামি ৬দিন আমরা সুন্দরভাবে পূজা উদযাপন শেষ করতে পারবো।
পূজামণ্ডপ ও মণ্ডপের পাশের সড়কগুলোয় বিশেষ করে রাতের বেলায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে রায়পুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সম্পাদক বলরাম মজুমদার বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন, আর নির্বাচন এলেই এক শ্রেনির দুর্বৃত্ত সক্রিয় হয়ে উঠে। মনের ভিতরে একটু ভীতি কাজ করছে। এখন পর্যন্ত কোন সমস্যা হয়নাই। রায়পুরে ১৩ টি মন্দিরে পূজা উদযাপন হবে। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। এর মাধ্যমে ভাতৃত্বের বন্ধন আরও দৃঢ় হবে। এ আয়োজনকে সফল করতে সবার সহযোগীতা প্রয়োজন। কোনো রকম অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সে জন্য প্রশাসনের সহযোগীতা দরকার।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভুইয়া বলেন, ‘শারদীয় দুর্গোৎসব’ শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষে পুলিশ যাবতীয় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। রায়পুরে কোন ঝুঁকিপূর্ণ মন্দির নাই। প্রতিটি মণ্ডপে অফিসার-ফোর্স মোতায়েন করা হবে। কয়েকটি পূজামণ্ডপ মিলে থাকবে পেট্রোল টিম। তারা পূজামণ্ডপগুলো ও চলাচলের রাস্তা মনিটরিং করবে। এছাড়াও যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য আমরা প্রস্তুত।
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান খান বলেন, পূজা উদযাপন পরিষদ ও ১৩টি মন্দিরের পূজা উদযাপন পরিচালনা কমিটির সবাইকে নিয়ে আইনশৃংখলা কমিটির সভায় আলোচনা করেছি। তাদের সবার কাছ থেকে নানা রকম সমস্যার কথা শুনে সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেছি। এই উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে উপজেলা প্রশাসন সব সময় সহযোগিতা প্রদান করবে।