প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৫, ০৮:৩৬
প্রবাসীর স্বপ্ন আগুনে পুড়ে ছাই

গ্রীসপ্রবাসী রফিকুল ইসলাম প্রবাস জীবনের দীর্ঘ ১০ বছর পর প্রথমবারের মতো ছুটিতে দেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ১৮ মে তার ফ্লাইট নির্ধারিত ছিলো। আত্মীয়-স্বজনদের জন্যে উপহার কিনতে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে তার পাসপোর্ট, রেসিডেন্স কার্ড, এয়ার টিকিটসহ সব মালামাল। ভগ্ন হৃদয়ে রফিকুল বলেন, সবকিছু ঠিকঠাক চলছিলো। দেশে যাওয়ার জন্যে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু আগুনে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখন কীভাবে দেশে যাবো, কিছুই বুঝতে পারছি না।
বাংলাদেশী কৃষিশ্রমিকের অস্থায়ী বসবাসস্থানÑস্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘পারাঙ্গা’ নামে। আগুনে পাসপোর্ট, রেসিডেন্স কার্ড, এয়ার টিকিট, নগদ অর্থসহ প্রবাসীদের প্রয়োজনীয় সবকিছুই পুড়ে গেছে। ফলে অনেকেই খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের খাবার, পানি, চিকিৎসা ও আশ্রয়ের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
আশরাফুল ইসলাম নামের আরেক প্রবাসী বলেন, আমাদের থাকার জায়গা, খাবার, পাসপোর্ট, ডকুমেন্টস, সবকিছু পুড়ে গেছে। এখন খোলা আকাশের নিচে থাকতে হচ্ছে। সরকারি সাহায্য না পেলে কীভাবে বাঁচবো, জানি না।
প্রবাসী সুমন বলেন, বৈধতা পাওয়ার জন্যে কয়েক বছর ধরে বসবাসের বিভিন্ন ডকুমেন্ট সংগ্রহ করছিলাম। আগুনে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখন কী করবো কিছুই বুঝছি না।
টিপু আহমেদ নামের আরেক প্রবাসী বলেন, বছরের পর বছর ধরে সঞ্চয় করছিলাম দেশে ফেরার জন্যে। আগুনে পাসপোর্ট, পরিচয়পত্র, নগদ অর্থÑসব হারিয়েছি। এখন খোলা আকাশের নিচে দিন কাটছে।
ঘটনার পরের দিন গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব রাবেয়া বেগমের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজখবর নেন এবং নতুন পাসপোর্টসহ অন্যান্য সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তারা স্থানীয় মেয়র, ফায়ার সার্ভিস ও বিভিন্ন মালিক পক্ষের সঙ্গেও আলোচনা করেন এবং প্রবাসী শ্রমিকদের জন্যে স্থায়ী ও নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান।
এই অগ্নিকাণ্ডে প্রবাসীদের স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তাদের জন্যে জরুরি প্রশাসনিক সহায়তা ও মানবিক সহযোগিতা প্রয়োজন। বাংলাদেশ সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর উচিত দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যেন ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীরা পুনরায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারেন।