মঙ্গলবার, ০৬ মে, ২০২৫  |   ৩৪ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

প্রকাশ : ০৬ মে ২০২৫, ০৯:০৩

মোলহেডে নিয়মিত উচ্ছেদ ও ট্যুরিস্ট পুলিশ চাই

অনলাইন ডেস্ক
মোলহেডে নিয়মিত উচ্ছেদ ও ট্যুরিস্ট পুলিশ চাই

চাঁদপুর জেলা শহরের একমাত্র পর্যটন এলাকা রেলওয়ে বড় স্টেশন মোলহেড থেকে সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। রোববার (৪ মে ২০২৫) বিকেল ৫টায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিনের নির্দেশে পৌর প্রশাসনের সহযোগিতায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রহমত উল্লাহর নেতৃত্বে দুই শতাধিক ভাসমান দোকান ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদকৃত মালামাল পৌরসভার গাড়ি বোঝাই করে নিয়ে যেতে দেখা যায়। উচ্ছেদ অভিযান চলাকালীন এলাকার শত শত মানুষ এসে ভিড় জমায়। যারা প্রশাসনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে দোকানপাটগুলো সরায়নি, তাদেরগুলো নদীতে ফেলে দেয়া হয়। এছাড়া রেলের জায়গায় অবৈধভাবে দীর্ঘদিন যাবৎ গড়ে তোলা বিভিন্ন খেলনাসহ রাইডগুলো সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রহমতউল্লাহ জানান, চাঁদপুরের এই স্থানটি পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে প্রতিদিন প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম হয়। অথচ এর প্রবেশমুখে ও ভেতরে ভাসমান অবৈধ দোকান বসিয়ে সৌন্দর্য বিনষ্ট করা হয়েছে। চাঁদপুর শহরে তিন নদীর মিলনস্থলের দর্শনীয় এই জায়গাটি পর্যটনের জন্যে সম্ভাবনাময় স্থান। এখানে যে যার মতো করে রেলওয়ের জায়গা দখল করে নিয়েছে। তাদের উচ্ছেদ করার উদ্যোগ নেয়া হলে নানা ছলছুতো তৈরি করে সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করা হয়। অভিযান চলাকালে রেলওয়ের চাঁদপুর স্টেশন মাস্টার মারুফ হোসেন, চাঁদপুর পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মফিজ উদ্দিন হাওলাদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অভিযানে অংশ নেয়া সংশ্লিষ্টরা জানান, পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এই উচ্ছেদ অভিযানে সহায়তা করেছে। উপরোল্লিখিত বিবরণীটি হচ্ছে গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে ‘চাঁদপুর মোলহেডে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ’ শিরোনামের সংবাদ।

প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করতে হয়, চাঁদপুর রেল স্টেশন তথা বড়ো স্টেশনস্থ মোলহেডটিতে পর্যটন মন্ত্রণালয় ও পর্যটন কর্পোরেশন প্রয়োজনীয় স্থাপনা নির্মাণ করে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পটে পরিণত করার আগ্রহ প্রকাশ করে প্রয়োজনীয় উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করতে চেয়েছিলো। কিন্তু জায়গার বড়াইয়ে বাধ সাধে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তারপর রেলওয়ে পর্যটনবান্ধব স্থাপনা নির্মাণের নামে যে প্রহসন করেছে, সেটা জেদ করে পাগলামির নামান্তর হয়েছে বললে অত্যুক্তি হবে না। বর্তমানে মোলহেডের অবস্থা হচ্ছে বাপ-মা ছাড়া কিংবা উদাসীন বাপ-মায়ের সন্তানের মতো। রেলওয়ের নিজস্ব জনবল দিয়ে মোলহেড সংরক্ষণ তো করতে পারছেই না, অবৈধ দখলদারিত্বও ঠেকাতে পারছে না। এমনকি ঠিকমতো উচ্ছেদও করতে পারছে না। বারবার জেলা প্রশাসন ও চাঁদপুর পৌরসভা এখানে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে হয়। এই মোলহেড ও মিনি কক্সবাজারে যাতায়াত এবং নদীতে ভ্রমণকেন্দ্রিক বড়ো স্টেশন এলাকাটি চাঁদপুর জেলার ভ্রমণপিপাসু ও সন্নিহিত জেলাগুলো থেকে আগত পর্যটকদের কারণে জনপ্রিয় পর্যটন স্পটে পরিণত হয়েছে। অথচ এখানে সরাসরি কোনো কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধান নেই। জেলা প্রশাসন ও পৌরসভা যা করেছে ও করছে, সেটা ‘ক্রাইয়িং নীডে’র কারণেই করছে। এমতাবস্থায় এই মোলহেডে পর্যটকদের স্বস্তি ও নিরাপত্তার স্বার্থে নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান এবং উচ্ছৃঙ্খল ফটোগ্রাফার ও বখাটেদের দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণ, সর্বোপরি পর্যটকদের সতর্ক করা, প্রয়োজনীয় নির্দেশনা মানা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম শুরুর তীব্র প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষ চাঁদপুর রেল স্টেশনস্থ মোলহেড নিয়ে ইতিবাচক ভাবনা ও পদক্ষেপে সক্রিয় হবে--আমরা সেটাই প্রত্যাশা করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়