বৃহস্পতিবার, ০৮ মে, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

প্রকাশ : ০৭ মে ২০২৫, ১০:০০

দিনের আলোতে গরু চুরি এবং শহরের বাজারে বিক্রি!

অনলাইন ডেস্ক
দিনের আলোতে গরু চুরি এবং শহরের বাজারে বিক্রি!

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি গরু চুরির ঘটনা বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। গরুর কর্তিত মাথা নিয়ে গরুর মালিকের করুণ চাহনির ছবি প্রায় সবাইকে সংবেদনশীল করেছে। এই ঘটনাটি নিয়ে গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তাতে লিখা হয়েছে, চাঁদপুরের বিভিন্ন জায়গা থেকে গরু চুরি করে হাটবাজারে বিক্রি করছে চোর চক্র। চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুরচন্ডী এলাকা থেকে সাদা রংয়ের একটি গরু চুরি করে নিয়ে এসে চাঁদপুর শহরের বিপণীবাগ বাজারে বিক্রি করে দিয়েও শেষ রক্ষা হয় নি চোরের।

জানা যায়, বিপণীবাগ বাজারের মাংস বিক্রেতা কালা বেপারী চুরি করে আনা গরুটি সোহাগ নামে এক চোরের কাছ থেকে ক্রয় করেন। তরপুরচন্ডী এলাকার মৃত ডেঙ্গু মিজির ছেলে মতিন মিজি তার গরুটি না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন। পরে তিনি বিপণীবাগ বাজারে গরুর মাংস বিক্রেতা কালা বেপারীর দোকানের সামনে এসে তার চুরি হওয়া গরুর কাটা মাথা দেখে শনাক্ত করেন। গরুটি ক্রয় করার সময় দোকান মালিক কালা বেপারী তার মুঠোফোনে চোরের টাকা গোণার ভিডিও ধারণ করে রাখেন, যাতে সমস্যা হলে বাঁচতে পারেন। চোরাই গরু বিপণীবাগ বাজারে বিক্রি হওয়ার ঘটনা ফাঁস হবার পর চোর সোহাগ গা ঢাকা দেয়। এ সময় বিপণীবাগ বাজার ইজারা নেওয়া কাইয়ুম খান চোর সোহাগকে ধরে এনে গরু বিক্রির টাকা উদ্ধার করেন। চোরাই গরু মাংসের দোকানে বিক্রির ঘটনা এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাটি বেশ আলোচিত হয়। অবশেষে সেই চোর সোহাগকে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন বিপণীবাগ বাজার ইজারাদার কাইয়ুম খান। তিনি চোরের কাছ থেকে গরু বিক্রি টাকা উদ্ধার করে গরুর মালিকের কাছে হস্তান্তর করেন।

গরুর মালিক মতিন মিজি জানান, তরপুরচন্ডী এলাকায় নিজ বাড়ির সামনে রাস্তার ওপর ঘাস খাওয়ার জন্যে গরুটি বেঁধে রাখা হয়। কিন্তু চোর চক্র দিনে দুপুরে গরুটি চুরি করে নিয়ে আসে। রাস্তায় গরুটি দেখতে না পাওয়ায় আনন্দবাজার, ওয়্যারলেস বাজার সহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করার পর অবশেষে বিপণীবাগ বাজারে এসে গরুর কাটা মাথা দেখে শনাক্ত করেন মালিক মতিন মিজি। এ সময় গরুটির ক্রেতা গোশত ব্যবসায়ী কালা বেপারী গা ঢাকা দেয়। বিপণীবাগ বাজারের ইজারাদার কাইয়ুম খান জানান, গরুটি বাজারে বিক্রি করতে আসলে মুঠোফোনে তার টাকা গোণার ভিডিও ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে সেই ভিডিও দেখে সোহাগকে টাকাসহ ধরে নিয়ে আসা হয় এবং পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। এদিকে এর পূর্বেও বিপণীবাগ বাজারে চোরাই গরু বিক্রির সময় বেশ কয়েকবার পুলিশ প্রশাসন হাতেনাতে চোরকে ধরেছে। চাঁদপুরে গরু চুরি বন্ধের জন্যে সংঘবদ্ধ চোর চক্রকে ধরে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাগ্রহণ করার জোর দাবি জানান ক্ষতিগ্রস্তরা।

আমরা বিপণীবাগ বাজারের ইজারাদারকে ধন্যবাদ জানাই এজন্যে যে, তিনি গরু চোর সোহাগকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছেন ও গরু বিক্রির টাকা গরুর মালিকের হাতে তুলে দিতে পেরেছেন। কথা হলো, চোরাই গরুর ক্রেতা কালা বেপারীকে ছাড় দিলেন কেন? নিশ্চয়ই কালা বেপারীর মতো মাংস বিক্রেতারা সুযোগ পেলেই চোরাই গরু কিনেন। কালা বেপারীকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে নিশ্চয়ই সোহাগের মতো আরো কিছু গরু চোরের সন্ধান পাওয়া যাবে। বিপণীবাগ বাজারে চোরাই গরু কিনে সেটা জবাই করে মাংস বিক্রির ঘটনা যেভাবে একের পর এক ঘটছে, তাতে সচেতন মাংস ক্রেতাদের সন্দেহ দিন দিন ঘনীভূত হবে। এটা বাজারটির জন্যে ক্ষতিকর হবে। এজন্যে বাজার কমিটি ও ইজারাদার মিলে মাংস বিক্রেতাদেরকে চূড়ান্তভাবে সতর্ক করতে হবে, যাতে আর কখনো চোরাই গরু এই বাজারের কোনো কসাই বা মাংস বিক্রেতা কিনতে না পারে। আমরা এই বাজারসহ অন্যান্য বাজারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোয়েন্দা নজরদারির জন্যে আহ্বান জানাবো। আমাদের বিশ্বাস, তাতে গরু চোর শনাক্ত করার কাজটি সহজ হবে এবং গরু চুরির প্রবণতা অনেক কমে আসবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়