শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০২

জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা নীতিমালা ২০২৫ (সংশোধিত)’ জারি করেছে সরকার

অষ্টম শ্রেণির ২০-৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশ নিতে পারবে, অনিয়মে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

মো. জাকির হোসেন
অষ্টম শ্রেণির ২০-৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশ নিতে পারবে, অনিয়মে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
ছবি : সংগৃহীত

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ‘জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা নীতিমালা ২০২৫ (সংশোধিত)’ জারি করেছে।

গত ৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত এ নীতিমালা অনুযায়ী আগামী বছর থেকে সারা দেশে একযোগে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

নীতিমালার মূল উদ্দেশ্য— মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞানচর্চা, নৈতিকতা ও ইতিবাচক প্রতিযোগিতার মানসিকতা গড়ে তোলা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান,

“শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেধার বিকাশ ও সৃজনশীলতা বাড়াতে এই পরীক্ষাটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”

পরিধি ও অংশগ্রহণ

নীতিমালা অনুযায়ী, অনুমোদিত ও স্বীকৃত মাধ্যমিক/নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে ন্যূনতম ২০ শতাংশ এবং সর্বাধিক ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী

জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। অংশগ্রহণের যোগ্যতা নির্ধারণ করা হবে সপ্তম শ্রেণির সব প্রান্তিক পরীক্ষার সামষ্টিক ফলাফলের ভিত্তিতে। প্রয়োজনে জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি এই সংখ্যা পরিবর্তন করতে পারবে।

যেসব শিক্ষার্থী এক বিদ্যালয় থেকে অন্য বিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত হয়েছে, তাদেরও অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে।

তবে তাদের পূর্ববর্তী বিদ্যালয়ের মেধাক্রম বিবেচনায় নতুন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

অনিয়মে কঠোর ব্যবস্থা

নীতিমালায় স্পষ্ট বলা হয়েছে— যদি কোনো শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের না হয় এবং তবুও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে, তবে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একই সঙ্গে ওই শিক্ষার্থীর বৃত্তির প্রার্থিতা বা ফলাফল বাতিল করা হবে।

পরীক্ষার কাঠামো

জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় চারটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে— বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান। প্রতিটি বিষয়ে ২৫ নম্বর করে মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা হবে বহুনির্বাচনী (MCQ) পদ্ধতিতে, প্রতিটি বিষয়ের জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ মিনিট। সব মিলিয়ে পরীক্ষার মোট সময় হবে দুই ঘণ্টা।

জাতীয় পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের নির্ধারিত অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবই থেকেই প্রশ্ন করা হবে।

প্রশ্ন প্রণয়নের সময় শিক্ষার্থীদের বিশ্লেষণধর্মী ও সৃজনশীল চিন্তাশক্তি মূল্যায়নে গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

বৃত্তির ধরন ও সুবিধা

বৃত্তিপ্রাপ্তদের জন্য দুটি বিভাগ নির্ধারণ করা হয়েছে— মেধা বৃত্তিসাধারণ বৃত্তি

উপজেলা পর্যায়ে নির্দিষ্ট কোটা অনুযায়ী শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে, পাশাপাশি জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে বিশেষ মেধাবীদের জন্য অতিরিক্ত বৃত্তির সুযোগ থাকবে।

বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা মাসিক ভাতা ও বিশেষ সনদ পাবে।

মূল্যায়ন ও ফল প্রকাশ

পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের দায়িত্ব থাকবে জেলা শিক্ষা অফিসের অধীনে।

ফলাফল চূড়ান্ত করবে জাতীয় পর্যায়ে গঠিত স্টিয়ারিং কমিটি।

প্রকাশিত ফলাফল দেখা যাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে

www.shed.gov.bd

সম্ভাব্য সময়সূচি

ফর্ম পূরণ শুরু হবে নভেম্বর ২০২৫ থেকে।

পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ জানুয়ারি ২০২৬ এবং ফলাফল প্রকাশ করা হবে মার্চ ২০২৬-এ।

মন্ত্রণালয়ের মন্তব্য

শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ নীতিমালার মাধ্যমে পরীক্ষায় সুষ্ঠুতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে। এক কর্মকর্তা বলেন, “ডিজিটাল পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে পরীক্ষার সব ধাপ নজরদারিতে থাকবে। কোনো প্রকার অনিয়ম বা প্রভাব খাটানোর সুযোগ রাখা হবে না।”

নীতিমালাটি কার্যকর হলে জুনিয়র স্তরের শিক্ষার্থীরা নতুনভাবে নিজেদের মেধা ও দক্ষতা যাচাইয়ের সুযোগ পাবে বলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তারা মনে করছেন।

ডিসিকে/এমজেডএইচ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়