প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০০:৫৫
জুড়ীতে চা বাগান সর্দার হত্যার রহস্য উদঘাটন!
আলামতসহ আসামি গ্রেপ্তার

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ক্লিবডন চা বাগানের শ্রমিক সর্দার রামবচন গোয়ালা (৪০)-এর হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা পুলিশ। এ ঘটনায় হত্যার মূল আসামি গোলাপ সতনামী (৩৩)-কে হত্যায় ব্যবহৃত লাঠি, ভিকটিমের মোবাইল ফোন, জুতা, লাঠি বাঁধার গামছার টুকরাসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
|আরো খবর
গত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ সন্ধ্যায় রামবচন গোয়ালা বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। স্বজনরা খোঁজাখুঁজিতে ব্যর্থ হলে ২৭ সেপ্টেম্বর কুলাউড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরদিন সকালে জুড়ীর কাপনাপাহাড় চা-বাগান এলাকায় রক্তের দাগ ও স্যান্ডেল দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে বাবুনালা ছড়া থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার পর পুলিশ সুপার এম.কে.এইচ. জাহাঙ্গীর হোসেন, পিপিএম-সেবার নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা ও কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজমল হোসেনের তত্ত্বাবধানে ওসি মো. মুরশেদুল আলম ভূঁইয়ার নেতৃত্বে বিশেষ টিম তদন্ত শুরু করে।
গোপন তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ৩ অক্টোবর ভোরে কামিনীগঞ্জ বাজার থেকে গোলাপ সতনামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।
আসামি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সেদিন সন্ধ্যায় আসামি গোলাপ সতনামী রামবচনকে মদ খাওয়ার প্রস্তাব দেয় এবং মোটরসাইকেলে চা বাগানে যায়। সেখানে চন্দন নামের এক ব্যক্তিসহ তারা মদ পান করে। এ সময় চাকরি ফেরত চাওয়ার প্রসঙ্গ নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। রামবচন গোলাপকে গালিগালাজ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে সে হত্যার পরিকল্পনা করে।
২০১৭ সালে গোলাপও রামবচনের কারণে চাকরি হারিয়েছিল, তাই তার দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ছিলো। রাত আনুমানিক ১০টা ৪০ মিনিটে সাগরনাল চা বাগান থেকে ফেরার পথে বাবুনালা ছড়ার কাছে মোটরসাইকেল থামিয়ে গোলাপ কোদালের হাতল দিয়ে রামবচনের মাথায় একাধিক আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
হত্যার পর গোলাপ সোনারূপা চা বাগানে গিয়ে এক ব্যক্তিকে বিষয়টি জানায়। পরে দুজনে মিলে লাশ টেনে বাবুনালা ছড়ায় ফেলে দেয় এবং গাছপালা ও মাটি চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) মো. আজমল হোসেন। এসময় জুড়ী থানার ওসি মো. মুরশেদুল আলম ভূঁইয়া ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফরহাদ মিয়া উপস্থিত ছিলেন।