সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৯ জুন ২০২৫, ২২:০২

চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের ন্যায্যমূল্যের দোকানের মুখোশ খুলে গেলো

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জরিমানা

স্টাফ রিপোর্টার
চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের ন্যায্যমূল্যের দোকানের মুখোশ খুলে গেলো

শুনলে অবাক হতে হয়।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকানে এমন এক ঘটনা ঘটেছে, যা রোগীর যন্ত্রণার চেয়েও বেশি যন্ত্রণাদায়ক।

রোববার (২৯ জুন ২০২৫) বিকেলে হাসপাতালের গেটের পাশে ন্যায্যমূল্যে ঔষধ বিক্রির দোকানে ভিড় লেগেছিলো। রোগীরা ভরসা করে যান সেখানেই, কারণ সেখানে তো সরকার নির্ধারিত দামে ওষুধ পাওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবটা ছিলো ঠিক তার উল্টো।

ওই দোকানের মালিক রামু দত্ত দীর্ঘদিন ধরে অসহায় রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। সরকারের নির্দেশ ছিল ১৬.৫১ শতাংশ ছাড়ে ওষুধ বিক্রি করতে হবে। কিন্তু তিনি করছিলেন তার উল্টো। প্রতিটি ওষুধে নিচ্ছিলেন বেশি দাম!

শুধু তাই নয়। অভিযোগ উঠেছে, মেয়াদোত্তীর্ণ ও সরকারি বরাদ্দের ওষুধও বিক্রি হচ্ছিল লোকচক্ষুর আড়ালে। যেন এক অদৃশ্য বাণিজ্য চলছে জনসেবার আড়ালে।

একজন কমিউনিটি পুলিশের সদস্য সেলিম গাজী গিয়েছিলেন ‘সাইনোভিয়া’ ইনজেকশন কিনতে। অন্য দোকানে যার দাম মাত্র ১০ টাকা, সেই ইনজেকশন রামু দত্ত চাইছিলেন ২৫ টাকা!

এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতেই সেলিম গাজীর সঙ্গে শুরু হয় তুমুল বাদানুবাদ। আর সেখানেই শুরু হয় নাটকীয় মোড়। সেলিম গাজী সরাসরি অভিযোগ করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরানের কাছে।

তিনি সঙ্গে সঙ্গেই অভিযানে নামেন। দোকানে গিয়ে সত্যতা পান সব অভিযোগের। অতিরিক্ত দামের জন্যে জরিমানা করা হয় চার হাজার টাকা।

এই জরিমানা শুধু একটা সংখ্যা নয়, এ যেন হাসপাতালের ন্যায্যতার মুখোশ ছিঁড়ে ফেলার এক সাহসী পদক্ষেপ।

তারা আরও জানায়, এই দোকানটি বহুদিন ধরে অবৈধ পন্থায় পরিচালিত হচ্ছে। হাসপাতালের কিছু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করেই রামু দত্ত রাখছেন এই দোকানের নিয়ন্ত্রণ।

আর তার ফলে প্রতিদিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সেসব গরিব রোগী, যারা শেষ আশ্রয় মনে করে আসেন সরকারি হাসপাতালে।

ওষুধের গন্ধের সঙ্গে মিশে গিয়েছিল প্রতারণার গন্ধ।

আশার মুখোশের আড়ালে লুকিয়েছিলো লোভ, ছিলো বিশ্বাসভঙ্গ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়