রবিবার, ০৪ মে, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

শিশুর ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা প্রতিরোধে করণীয়

শিশুর ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা প্রতিরোধে করণীয়
অধ্যাপক আবদুল মান্নান

শীতের সকাল খুব ঠাণ্ডা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা বাড়ে। আবার সন্ধ্যা বা রাতে জেঁকে বসে শীত। কখনো হয়তো শুষ্ক-দমকা বাতাসে হুট করেই বেড়ে যায় শীতের তীব্রতা। আবহাওয়ার এমন তারতম্যের সঙ্গে যে কারও খাপ খাওয়ানো কঠিন। শিশুদের ক্ষেত্রে তো আরও সমস্যা। এ কারণে এই সময়ে শিশুদের কমন কোল্ড বা সাধারণ ঠা-া লাগা খুবই স্বাভাবিক। যে ঠা-া থেকে হতে পারে জ্বর, গলাব্যথাসহ অন্যান্য অনেক জটিলতা। এসব সমস্যা থেকে শিশুদের নিরাপদে রাখার জন্য ঠাণ্ডার কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়গুলো জানা দরকার।

ঠাণ্ডাজনিত সমস্যার প্রকারভেদ

১. কাশি

শিশুরা ঠা-াজনিত যে কয়েকটি সমস্যায় ভোগে, কাশি তার মধ্যে অন্যতম। ক্রুপ কাশি, শুকনা কাশি, হুপিং কাশিসহ কয়েক রকম কাশি রয়েছে।

ক্রুপ কাশি : এই কাশিতে শিশুর ট্রাকিয়া বা শ্বাসনালি ফুলে যায়। স্বরতন্ত্র ফুলে যাওয়ার কারণে কাশির সময় একধরনের আওয়াজ হয়।

শুকনা কাশি : এটি সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণের জন্য হয়ে থাকে। এ ধরনের কাশি ঘুমের সময় বা উষ্ণ তাপমাত্রায় শিশুদের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।

সিক্ত কাশি : শ্বাসনালিতে শ্লেষ্মা জমে যাওয়ার কারণে এই কাশি হয়।

হুপিং কাশি : শিশুর হুপিং কাশি হলে বারবার কাশি হতে থাকে। অনেক সময় কাশি শুরু হলে একবারে ৫ থেকে ১৫টি কিংবা আরও বেশি কাশি হতে পারে। মূলত রাতের দিকে এ ধরনের কাশি বাড়ে। এই কাশি হলে শ্বাস নেয়ার সময় শব্দ হয়।

শিশুদের কাশির কারণ

বিভিন্ন কারণে শিশুদের কাশি হতে পারে। তবে এগুলোর মধ্যে প্রধান হচ্ছে ফ্লু বা ঠা-া লাগা। গলায় জমে থাকা শ্লেষ্মা এবং গলা ও শ্বাসনালি ফুলে যাওয়ায় সৃষ্ট অস্বস্তির কারণে কাশি হয়ে থাকে।

২. সর্দি বা ঠা-া লাগা

শিশুদের সর্দি লাগার ফলে নাক বন্ধ হয়ে যায়। নাক ও চোখ থেকে পানি পড়ে। প্রচ- মাথাব্যথা হয়। এমনকি কখনো কখনো সর্দির কারণে জ্বরও আসতে পারে।

৩. ফ্লু

ফ্লুর সংক্রমণ হলে সাধারণ সর্দি কাশির মতোই লক্ষণ দেখা দেয়। এ অবস্থায় শিশুর নাক দিয়ে পানি পড়ে। কখনো কখনো জ্বর এমনকি ডায়রিয়া বা বমিও হতে পারে। ফ্লুর কারণে কাশি সাধারণত শুষ্ক হয়ে থাকে।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন

ঠা-া লাগা, জ্বর, সর্দি, কাশি-এগুলো শিশুদের খুবই সাধারণ সমস্যা। তাই অধিকাংশ সময়ই এসব সমস্যায় চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। যথাযথ যতœ ও বিশ্রামেই শিশু সুস্থ হয়ে ওঠে। তবে যদি নি¤েœাক্ত লক্ষণগুলো দেখা দেয়, সেক্ষেত্রে শিশুকে চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে।

* সাতদিনের বেশি সময় ধরে শিশু যদি শুকনা কাশিতে ভোগে।

* যদি কাশির সঙ্গে সর্দি ও জ্বর থাকে।

* শ্বাস নেয়ার সময় যদি কোনো ধরনের আওয়াজ হয় এবং বার বার কাশি হতে থাকে।

* যদি আক্রান্ত শিশুর ক্ষুধা এবং ওজন কমে যায়।

* কাশির কারণে যদি শিশু ঘুমাতে না পারে।

* শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে, যেমন-দ্রুত শ্বাস বা বুকের নিচের অংশ ভিতরের দিকে ঢুকে যেতে থাকলে।

ঠা-াজনিত সমস্যা প্রতিরোধের উপায়

নি¤œলিখিত উপায়ে আপনার শিশুকে ঠা-াজনিত সমস্যার প্রকোপ থেকে রক্ষা করতে পারেন।

* ঠা-া আবহাওয়ায় শিশুর শরীর চাদর বা গরম জামাকাপড় দিয়ে ঢেকে রাখুন।

* হাঁপানির কারণে যদি বারবার কাশি হয়, তবে হাঁপানির জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

* শিশুকে সংক্রমণ প্রতিরোধের টিকা দিন।

* সাধারণ পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। যেমন-নিয়মিত বিরতিতে হাত ধোয়া, নাকে-মুখে হাত না দেয়া ইত্যাদি।

শিশুর কাশিতে বাড়িতে করণীয়

* বুকের দুধসহ স্বাভাবিক খাবার চালিয়ে যাওয়া।

* শিশুকে গরম রাখার জন্য পর্যাপ্ত কাপড় পরিধান করানো।

* হালকা গরম শর্ষের তেল বা অলিভ-ওয়েল দিয়ে শরীর ম্যাসাজ করা।

* ভিটামিন সি-জাতীয় খাবার বেশি খাওয়ানো।

* চিকিৎসাঙ্গন বিভাগে লেখাসহ স্বাস্থ্যবিষয়ক যে কোনো প্রশ্ন পাঠান।

ই-মেইল : [email protected]

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়