নদীর পাঙ্গাশের কেজি ৯০০ টাকা

দেশের অন্যতম প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাটে নদীর পাঙ্গাশ প্রতি কেজি ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীদের মতে, এসব পাঙ্গাশ চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদী থেকে জেলেরা ধরেছেন। তবে ক্রেতাদের চাহিদা থাকলেও সরবরাহ কম থাকায় সেই চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না। ফলে অনেক ক্রেতাকেই খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে।

ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গরিবের মাছ হিসেবে পরিচিত পাঙ্গাশের দাম এখন আকাশছোঁয়া। একজন ক্রেতা বলেন, আমরা মধ্যবিত্ত মানুষ, পাঙ্গাশ মাছ খেয়ে কোনো রকমে জীবনযাপন করি। এখন সেই মাছের দামও হাতের নাগালের বাইরে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মা ইলিশ রক্ষায় গত ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত জেলেদের নদীতে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিলো। সরকারি সেই নিষেধাজ্ঞা শেষে ২৬ অক্টোবর থেকে জেলেরা নদীতে নামেন। তখন থেকেই তাদের জালে মাঝারি ও বড় আকারের পাঙ্গাশ ধরা পড়ছে।

রোববার (৯ নভেম্বর ২০২৫) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ইলিশের পাশাপাশি বড়ো ও মাঝারি আকারের পাঙ্গাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে। সেদিন প্রায় ২২০ কেজি পাঙ্গাশ উঠেছে ঘাটে, যেগুলোর ওজন ছিলো ৫ থেকে ১৫ কেজি পর্যন্ত। তবে দাম ছিলো বেশ চড়া।

কুমিল্লা থেকে আসা ক্রেতা বিল্লাল ও তারেক বলেন, শুনেছিলাম নদীর পাঙ্গাশ বিক্রি হচ্ছে, তাই কিনতে এসেছি। কিন্তু এসে দেখি, দাম অনেক বেশি, কিনতে পারিনি।

আরেক ক্রেতা জুবায়ের বলেন, ইলিশ কিনতে এসেছিলাম, কিন্তু দাম অনেক বেশি দেখে ভাবলাম পাঙ্গাশ কিনবো। কিন্তু সেটার দামও হাতের নাগালের বাইরে। আমরা মধ্যবিত্তরা পাঙ্গাশ মাছ খেয়ে বেঁচে থাকি, এখন সেটার দামও আকাশছোঁয়া।

চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাটের আড়তদার নবীর হোসেন বলেন, আজ নদীর পাঙ্গাশ ভালোই উঠেছে। কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছগুলোর ওজন ১০ থেকে ১৫ কেজি। পাশাপাশি পদ্মা-মেঘনার এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩ হাজার ৫০০ টাকায়, আর উপকূলীয় অঞ্চলের একই ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৭০০ টাকায়।

ঘাটের মাছ বিক্রেতা মনির হোসেন বলেন, দু দিন আগে পাঙ্গাশের আমদানি কম থাকায় দাম বেশি ছিলো। তখন কেজি ১০০০ থেকে ১১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আজ আমদানি বেড়েছে, তাই দাম কিছুটা কমে ৮০০ টাকা কেজি।

আরেক আড়তদার নূর নবী বলেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞার পর থেকে ঘাটে ইলিশের পাশাপাশি পাঙ্গাশও আসছে। এখন কেজি ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঘাটের আরেক মাছ বিক্রেতা এয়াকুব বলেন, এখন ৪ থেকে ৫ কেজি ওজনের পাঙ্গাশ উঠছে। এসব মাছ কেজিপ্রতি ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, জাটকা মৌসুমে পাঙাশগুলো ছোট ছিলো। সে সময় অভিযান চালিয়ে পোনামাছ রক্ষা করা হয়েছে। ছোট মাছগুলো বেড়ে ওঠার সুযোগ পেলে জেলেরা ভবিষ্যতে আরও বেশি লাভবান হবেন। সূত্র : ঢাকা পোস্ট।