প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০৮
চাঁদপুরে কৃতী শিক্ষার্থীদের মাঝে ত্রুটিপূর্ণ সাইকেল বিতরণ

চাঁদপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কৃতী শিক্ষার্থীদের মাঝে সাইকেল বিতরণ করা হলেও নিম্নমানের সাইকেল পাওয়ায় শিক্ষার্থী-শিক্ষক-অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চাঁদপুর সদর উপজেলা অডিটোরিয়ামে ১২৫ জন কৃতী শিক্ষার্থীর হাতে বাইসাইকেল তুলে দেওয়া হয়। প্রথমে শিক্ষার্থীদের চোখেমুখে আনন্দের ঝলক ফুটে উঠলেও সাইকেল হাতে নিয়েই সেই আনন্দ ম্লান হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বিতরণকৃত সাইকেলগুলোতে একাধিক ত্রুটি রয়েছে। ১২৫টি সাইকেলের একটিতেও নেই বেল। চাকা, ব্রেক, চেইন, প্যাডেল, মাডগার্ড এমনকি স্ট্যান্ড পর্যন্ত নিম্নমানের হওয়ায় সেগুলো ব্যবহার উপযোগী নয়। সবচেয়ে বড় বিড়ম্বনা ছিলো—একটি সাইকেলেও হাওয়া দেওয়া হয়নি। ফলে সাইকেল হাতে পেয়েই শিক্ষার্থীদের বিপাকে পড়তে হয়।
|আরো খবর
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, আমরা সাইকেল পেয়ে খুশি হলেও এতে কোনো মান নেই। চাকার হাওয়া নেই, ঠেলে নিতে হচ্ছে। সরঞ্জাম এতো নড়বড়ে যে, খুলে পড়ার উপক্রম। একটিতেও বেল দেওয়া হয়নি। এখন দোকানে নিয়ে মেরামত করাতে হবে। শিক্ষকরা বিষয়টিকে 'উদ্যোগের অপব্যবহার' ও 'অবহেলার চরম দৃষ্টান্ত' বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাদের মতে, এভাবে অব্যবহারযোগ্য সাইকেল বিতরণ করলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হওয়ার বদলে বিড়ম্বনার শিকার হবে এবং উৎসাহ হারাবে। দ্রুত তদন্ত করে প্রকৃত চিত্র উন্মোচন ও মানসম্মত সাইকেল প্রদানের দাবি জানান তারা।
সাইকেল বিতরণ কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মো. মনিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সাইকেল ঠিকাদারির কাজে আমি ছিলাম না। তবে কারা এই কাজ করেছেন সে বিষয়ে কোনো উত্তর দেননি। পরবর্তীতে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি আর রিসিভ করেননি। অন্যদিকে সদর উপজেলা প্রকৌশলী রাহাত আমিনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরে ফোনে জানান, কতোটি সাইকেল দেওয়া হয়েছে এবং সাইকেলের বরাদ্দ সম্পর্কে তিনি অবগত নন। অফিসে এসে ফাইল দেখে জানাবেন বললেও সন্ধ্যা পর্যন্ত তার কাছ থেকে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়াত জামিল সৈকত বলেন, নিয়মতান্ত্রিকভাবে নীতিমালা অনুসারে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে সাইকেল টেন্ডারের কাজ দেওয়া হয়েছে। কাজে কোনো গাফিলতি প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ঘটনায় শিক্ষার্থী-শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে অব্যবহারযোগ্য সাইকেল বিতরণের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।