প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২০:০৩
ভূমিদস্যু ইসমাইল খানের বিরুদ্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসীর মানববন্ধন

চাঁদপুরে ভূমিদস্যু ইসমাইল খানের অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর ২০২৫) দুপুরে চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের উত্তর মৈশাদী খন্দকার বাড়ির সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
|আরো খবর
‘শিলন্দিয়া এলাকার নিরীহ জনগণ’-এর ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে ভুক্তভোগী শতাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তারা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ভূমিদস্যু ইসমাইল খানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ভুক্তভোগী জাহাঙ্গীর খান বলেন, ভূমিদস্যু ইসমাইল খান পতিত আওয়ামী লীগের দোসর ছিলো। সে আওয়ামী লীগের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সহযোগী পরিচয় দিয়ে এলাকাবাসীর ওপর নানাভাবে অত্যাচার, জুলুম ও নির্যাতন চালাতো। আমি কারওয়ান বাজারে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতাম। চাঁদার জন্যে আমাকে সন্ত্রাসীদের দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। সেই ক্ষত আমি আজও বয়ে বেড়াচ্ছি।
শাহিনা বেগম নামে এক নারী বলেন, আমার ভাই ঢাকায় ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। ইসমাইল খান আমার ভাইকে ৫ লাখ টাকার চাঁদার জন্যে সন্ত্রাসীদের দিয়ে কুপিয়েছে। আমার ভাই বিএনপি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন—এটাই তার অপরাধ। আমি নিজের কানের দুল বিক্রি করে ভাইয়ের চিকিৎসা করিয়েছি। আমরা খুব অসহায়। আমি প্রশাসনের কাছে তার বিচারের দাবি করছি।
অভিযুক্ত ইসমাইল খানের আপন ভাই কাশেম খান বলেন, আমার ভাই সন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নানের ক্যাশিয়ার ছিলো। আমি কারওয়ান বাজারে ব্যবসা করতাম। সেখান থেকে সে আমাকে জোরজবরদস্তি করে বের করে দেয়। এলাকায় এসে আমার জমিজমা দখল করেছে। কিছু বললে সে আমাকে হত্যার হুমকি দিতো। সে এলাকার মানুষের ওপর অত্যাচার, জুলুম করেছে এবং অনেকের জমিজমা দখল করেছে। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।
স্থানীয় জামায়াত নেতা আবুল কালাম আজাদ বলেন, অভিযুক্ত ইসমাইল খান শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নানের ক্যাশিয়ার থাকাবস্থায় প্রায় ৮০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। কারওয়ান বাজার এলাকায় তার আধিপত্য ছিলো। তার অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কার্যক্রম এবং জমি দখল—এমন কোনো অপরাধ নেই যা সে করেনি। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের পতনের পরও সে অসহায় মানুষের ওপর জুলুম করে যাচ্ছে। তাই আজ এলাকার মানুষ তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করছে।
ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মনির হোসেন বলেন, বিগত ১৭ বছর স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ, বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মামলা ও জুলুম-নির্যাতন করেছে। আমি নিজেও ৩৪টি মামলার আসামি এবং শরীরে অসংখ্য গুলির ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছি। জুলাই অভ্যুত্থানের পর স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের পতন হলেও তাদের দোসররা এখনো বিভিন্ন এলাকায় দাপটের সঙ্গে বসবাস করছে। তেমনই একজন এই আওয়ামী দোসর ইসমাইল খান। সে এখনো এই এলাকার মানুষের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
মানববন্ধনে এলাকার মুরব্বি হানিফ খান, বাচ্চু মিজি, বরকত উল্লাহ খন্দকার, শহীদ খন্দকার, তারিক উল্লাহ খন্দকার, আনাস খন্দকার, মোনাম খান, খোকন খান, জসিম খান, হানিফ খান, ইকবাল ডাক্তার, শাহজাহান ডাক্তার-সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শতাধিক নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।