প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৫, ১৬:১৩
চাঁদপুরে নানা আয়োজনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালিত
জুলাই চেতনা ধারণ করতে হবে : জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন

জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নানা আয়োজনে চাঁদপুর জেলায় পালিত হয়েছে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’।
|আরো খবর
জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ, জুলাই শহীদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের সংবর্ধনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ম্যারাথন দৌড় এবং বিজয় র্যালিসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে মুখর ছিলো চাঁদপুর শহরসহ জেলার সর্বত্র।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট, ২০২৫--৩৬ জুলাই)
সকালে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের কবর জিয়ারত ও পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। পরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়
আলোচনা সভা এবং শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।'জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা-২০২৫'
চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে জুলাই-শহিদ পরিবার ও জুলাই-যোদ্ধাদের সম্মিলন অনুষ্ঠানে প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ সহ সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আব্দুর রকিব, পিপিএম।
চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাখাওয়াত জামিল সৈকতের অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ চাঁদপুর জেলা আমীর মো. বিল্লাল হোসেন মিয়াজী ও গণফোরাম চাঁদপুর জেলা সভাপতি অ্যাড. মো. সেলিম আকবর। আরো বক্তব্য রাখেন জুলাই-যোদ্ধা নাজিম হোসেন, শহীদ সাজ্জাদ হোসেনের পিতা জসিম মিয়া, চাঁদপুর জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সদস্য সাইফুর রহমান গাজী, গণ অধিকার পরিষদ চাঁদপুর জেলা আহ্বায়ক কাজী রাসেল, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বাহার, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইসমাঈল পাটোয়ারী, সদর উপজেলা শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুর রহমান প্রমুখ।
নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. এরশাদ উদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সুপ্রিয় রঞ্জন দাস, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি রহিম বাদশাসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীবৃন্দ এবং যাদের জন্যে এই আয়োজন, জুলাই-যোদ্ধা আহতরা ও শহীদ পরিবারের সদস্যগণ এবং অন্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় সভাপ্রধানের বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, ২০২৪ সালের এই দিনে অর্থাৎ জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণ এবং সুশাসন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিশ্চিতে এ আন্দোলন সকল মুক্তিকামী মানুষের পাথেয় হয়ে থাকবে।জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ২০২৪-এর প্রথম বর্ষপূর্তিতে আমি সকল শহীদকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।
জেলা প্রশাসক বলেন, আমাকে আপনাকে ব্যাখ্যা করে বলতে হবে না জুলাই চেতনা কী। আমাদেরকে জুলাই চেতনা ধারণ করতে হবে। চাঁদপুরের মানুষ খুবই ভালো। কাজ করতে এসে সবার সহযোগিতা পাচ্ছি। যতোদিনই কাজ করবো, এক সঙ্গে ভালো-মন্দ মিলিয়ে কাজ করবো।
অন্য বক্তারা বলেন, ২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিলো বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদের এক ঐতিহাসিক অধ্যায়। এই আন্দোলনের শহীদদের আত্মত্যাগের কারণেই আজ আমরা ন্যায় ও অধিকার নিয়ে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছি।জুলাই অভ্যুত্থানে চাঁদপুর জেলাতে একত্রিশ জন মারা গেছেন। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির মারা গেছে ২২ জন। অনেকে বুলেট বিদ্ধসহ আহত হয়েছেন। এই জুলাই অভ্যুত্থান একদিনে হয় নি। ২০০৬ সালে শেখ হাসিনা লগ্গি এবং বৈঠা নিয়ে ঢাকার রাজপথে মানুষ হত্যা করে লাশের ওপর নৃত্য করেছিলো। এসব হত্যাযজ্ঞ মানুষ ভুলে যায়নি।
অনুষ্ঠান শেষে শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। পরে স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে চাঁদপুর শিল্পকলা একাডেমির পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
দিবসটি উপলক্ষে সকালে চাঁদপুর শহরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস এবং বিকেলে জেলা জামায়াত পৃথকভাবে বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালি করেছে। উপজেলা ও পৌর এলাকায় বিজয় র্যালি করে বিএনপি।