বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের ঢল

প্রকাশ : ১৩ মে ২০২৫, ২০:০২

জনস্বার্থে আলীম পাড়া-গাঙ্গুলী পাড়া নতুন সংযোগ সড়ক বাস্তবায়ন জরুরি

মাঝপথে সড়ক নির্মাণ বন্ধ হওয়ায় এলাকাবাসীর ক্ষোভ

বিশেষ প্রতিনিধি
জনস্বার্থে আলীম পাড়া-গাঙ্গুলী পাড়া নতুন সংযোগ সড়ক বাস্তবায়ন জরুরি

চাঁদপুর শহরের প্রতাপসাহা এলাকার আলীম পাড়া-গাঙ্গুলী পাড়া নতুন সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ মাঝপথে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সম্পূর্ণ নতুনভাবে নির্মিতব্য এই সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাজার হাজার মানুষের উপকার হতো এই সড়কটি হলে। চাঁদপুর শহরের নতুন বাজার এলাকার উকিল পাড়া, গাঙ্গুলি পাড়া, নতুন আলিম পাড়া এবং প্রতাপ সাহা রোড এলাকার কয়েক শ' পরিবারের কয়েক হাজার মানুষ এবং চাঁদপুর শহরের মেয়েদের বিখ্যাত স্কুল আল-আমিন একাডেমি ছাত্রী শাখা ও লেডী দেহলভী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এই সড়কটির সুফল ভোগ করতো। জনস্বার্থে এই সুবিধা বিবেচনায় চাঁদপুর পৌরসভার বিগত পৌর পরিষদ সাবেক ছায়াবাণী সিনেমা হল সংলগ্ন রেলক্রসিং থেকে দক্ষিণ দিকে সিএসডি গোডাউনের গেট পর্যন্ত গাঙ্গুলী পাড়া-প্রতাপ সাহা রোড নামে একটি নতুন সড়ক নির্মাণ করার প্রকল্প হাতে নেয়। টেন্ডার কাজও সম্পন্ন হয়। কিন্তু ২০২৪-এর পটপরিবর্তনের ফলে সড়কটির নির্মাণ কাজ ধরা সম্ভব হয়নি। এরপর বর্তমান পৌর পরিষদ এসে এর গুরুত্ব অনুধাবন করে এই সড়ক নির্মাণ কাজে হাত দেয়। কাজও অনেক দূর এগিয়ে যায় । কিন্তু কোনো এক অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে এই সড়ক নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। শহরের এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থানে নতুনভাবে নির্মিতব্য সড়কটির কাজ মাঝপথে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা এবং মেয়েদের দুটি স্কুলের হাজার হাজার শিক্ষার্থী। তাদের দাবি, দ্রুত যেনো সড়কটির কাজ সম্পন্ন করা হয়।

জানা যায়, প্রায় ৪/৫ মাস পূর্বে চাঁদপুর পৌরসভার অর্থায়নে চাঁদপুর সিএসডি গোডাউনের রেলপথের প্রবেশ মুখ (লেডী দেহলভী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনের গেট) হতে ছায়াবাণী রেলগেট পর্যন্ত নতুন একটি সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। সড়কটি নির্মাণ হওয়ার স্বার্থে স্থানীয়রা যার যার নিজ খরচে তাদের বাউন্ডারি ভেঙ্গে, বিভিন্ন গাছ গাছালি কেটে এবং কারো কারো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিজ উদ্যোগে সরিয়ে নিয়ে রাস্তার জন্যে প্রশস্ত করে দেয়।

সরজমিনে দেখা যায়, প্রায় ৪ মাস পূর্বে নির্মাণ কাজ শুরু করে সড়কটির প্রায় ৬০ ভাগ ঢালাই কাজ সম্পন্ন করা হয়। আর বাকি প্রায় ৪০ ভাগ কাজ সম্পন্ন করা হলেই শহরের আলীম পাড়া-গাঙ্গুলী পাড়া নতুন এই সংযোগ সড়কটির কাজ সমাপ্ত হয়ে যাওয়ার কথা।

স্থানীয়রা জানান, গত ২০/২৫ দিন পূর্বে দুই দফা রেলওয়ের লোকজন গিয়ে সড়কের চলমান কাজটি বন্ধ করে দেয়।

তাই তাদের মনে প্রশ্ন : সড়কটির ৬০ ভাগ কাজ সম্পন্ন করা হলেও এতোদিন পরে এসে কেনো রেলওয়ের লোকজন রহস্যজনকভাবে এই সড়কটির বাকি কাজ শেষ না হতেই সেটি বন্ধ করে দিলো!?

এতে অনেকেই ধারণা করছেন এখানে কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থে রেলের কাছে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে অভিযোগ দিয়েছেন। ফলে শেষ সময়ে রেল কর্তৃপক্ষ এসে কাজে বাধা দিচ্ছে। ওই ব্যক্তি একক ব্যক্তি স্বার্থে হাজার হাজার মানুষের স্বার্থের বিপক্ষে গিয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে ব্যবহার করে সড়কটির কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। তা না হলে ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার এতোদিন পর হঠাৎ রেল কর্তৃপক্ষ এসে সড়কটির কাজ বন্ধ করে দেবে কেন? বিষয়টি রহস্যজনক।

প্রতাপসাহা এলাকার বাসিন্দা ফজলে মাহমুদ, মো. মাজহারুল ইসলাম দাদন, দেলোয়ার হোসেন, অ্যাড. শিবলু আলম, শামীম, মোরশেদ আলম মন্টু, সুমন, হাসান, আহসান হাবিবসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন সকাল-বিকাল আল-আমিন স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্রী শাখা, লেডী দেহলভী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, লেডী দেহলভী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শহীদ জাবেদ উচ্চ বিদ্যালয় এবং নতুন বাজার মাদরাসাসহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থীরা চলাচল করে থাকে। এছাড়া এই সড়ক দিয়ে আলীম পাড়া, পালপাড়া, গাঙ্গুলী পাড়া, উকিল পাড়া, নতুন বাজারের অনেক বাসিন্দাও চলাচল করে থাকেন। সড়কটির কাজ মাঝপথে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বাসিন্দাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ না হলে আসছে বর্ষায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়তে হবে এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারীদের।

তারা বলেন, দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত রেললাইনের পাশ দিয়ে যাতায়াত করতে আমাদের অনেক দুর্ভোগে পড়তে হয়। তাই আমরা আমাদের সুবিধার্থে এই সড়কটি নির্মাণ হওয়ার জন্যে নিজ নিজ খরচে নিজেদের জায়গা ছেড়ে দিয়েছি। আমাদের বাউন্ডারি ভেঙ্গে, বিভিন্ন গাছ গাছালি কেটে এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে জায়গা প্রশস্ত করে দিয়েছি। আমরা চাই আমাদের সুবিধার্থে এবং শহরবাসী ও শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে এই সড়কটির নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হোক। তা না হলে আমরা যে জায়গা ছেড়ে দিয়েছি সেটি যেনো চাঁদপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ আবার পূর্বের জায়গায় ফিরিয়ে দেয়। কারো একক ব্যক্তিস্বার্থে যেনো এই সড়কের চলমান নির্মাণ কাজ একেবারে বন্ধ হয়ে না যায় সেজন্যে চাঁদপুর পৌরসভা ও জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়