বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৪৬

ভাঙ্গারি দোকানে অভিযান নেই কেন?

অনলাইন ডেস্ক
ভাঙ্গারি দোকানে অভিযান নেই কেন?

চাঁদপুর শহরের ট্রাক রোড গাজী সড়কে বৈদ্যুতিক মেইন লাইনের তার চুরির ঘটনায় ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (১৩ অক্টোবর ২০২৫) রাতে চাঁদপুর সদর মডেল থানার একটি চৌকস টিম অভিযান পরিচালনা করে। চিহ্নিত চোরদের আটক করায় এলাকার মানুষের মাঝে স্বস্তি নেমে আসে। আটককৃতরা হলো : চাঁদপুর শহরের নিউ ট্রাক রোড গাজী সড়ক এলাকার দেলোয়ার হোসেন ঢালীর ছেলে শরীফ ঢালী (৩৩) ও একই এলাকার শামু গাজীর ছেলে জীবন আহমেদ (২২)।

জানা যায়, চাঁদপুর শহরের ট্রাক রোড গাজী সড়কে গত বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর ২০২৫) রাতে চাঁদপুর জমিন হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেইন লাইনের প্রায় ২০ ফুট বৈদ্যুতিক তার চুরি করে নিয়ে যায় চোরচক্র। এছাড়া একই এলাকার আলম, শাহাবুদ্দিন বকাউল, নুপুর ও শফিউল্লাহ গাজীসহ কয়েকটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। শুক্রবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর মডেল থানার ওসি মো. বাহার মিয়ার নির্দেশে এএসআই মো. সুমনসহ সঙ্গীয় সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে ১২ অক্টোবর (রোববার) পুনরায় চাঁদপুর জমিন হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ কয়েকটি বাড়িতে চুরি হয়। বিষয়টি পুনরায় চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশকে অবগত করলে সোমবার রাতে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আব্দুর রকিবের নির্দেশনায় ও ওসি মো. বাহার মিয়ার তত্ত্বাবধানে মডেল থানার একটি চৌকস টিম অভিযান চালায়। এ সময় শরীফ ঢালী ও জীবন আহমেদ নামের ২ জনকে আটক করে পুলিশ।

স্থানীয়রা জানান, চাঁদপুর শহরের ট্রাক রোড গাজী সড়কে বেড়েছে চোরের উপদ্রব। চোরচক্র বৈদ্যুতিক মেইন লাইনের তার চুরি করে শহরের বিভিন্ন ভাঙ্গারি দোকানে তার ও তারের তামা বিক্রি করে। এছাড়া এই এলাকার কয়েকটি বাড়িতেও চুরির ঘটনা ঘটে। আগে এই এলাকায় পুলিশ নিয়মিত টহল দেওয়ায় চুরির ঘটনা কম ছিলো। বর্তমানে টহল কমে যাওয়ায় মাদক, চুরি সহ নানা অপকর্ম বৃদ্ধি পেয়েছে। উঠতি বয়সী কিশোর ও বহিরাগতদের আনাগোনাও বেড়েছে। দ্রুত অভিযানের মাধ্যমে ২ চোরকে আটক করায় চাঁদপুরের পুলিশ সুপার ও চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

চাঁদপুর শহরে একেক সময় একেক ধরনের চুরির প্রবণতা বাড়ে। রাতের বেলা টিনের চাল কেটে চুরি ও দিনের বেলা বাসা-বাড়িতে তালা খুলে চুরির ঘটনায় কিছুদিন আগেও চাঁদপুর শহরবাসী ছিলো আতঙ্কে। গত বেশ ক’মাস ধরে চলছে বৈদ্যুতিক তার চুরির হিড়িক। কিন্তু পুলিশ এমন চোরদের ধরতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলছে। দুটি দৈনিক পত্রিকার মালিকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে একের পর এক চুরির ঘটনায় এই মালিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলে অভিযোগ জানালে চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপারের চাপে চাঁদপুর মডেল থানা কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। তারা ক’জনকে আটক করতে বাধ্য হয়। অন্যথায় বৈদ্যুতিক তার চুরির বিষয়ে মডেল থানা পুলিশ সক্রিয় হতো কিনা সন্দেহ।

বিদ্যুতের খুঁটি থেকে যে বৈদ্যুতিক তারে বিভিন্ন স্থাপনায় গ্রাহককে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে, সেটি উন্নত তামার বিদ্যমানতায় বেশ দামী। সেজন্যে এই তার চুরিতে চোরেরা বেশ আগ্রহী। তারা সুযোগ পেলেই এ তার চুরি করে এবং ভাঙ্গারি দোকানের মালিকদের মধ্যে যারা অসাধু তাদের নিকট সে তার বিক্রি করে। চাঁদপুর শহরে ওয়্যারলেস এলাকাসহ অন্য কিছু স্থানে এমন মালিকের দোকান আছে বলে বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে। উল্লেখ্য, চাঁদপুর জেলার পার্শ্ববর্তী লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলায় বৈদ্যুতিক তার চুরির হিড়িক লাগলে সেখানে ক্ষতিগ্রস্তদের চাপে পুলিশ ভাঙ্গারি দোকানে অভিযান চালিয়ে সফলতা খুঁজে পায়। তাহলে চাঁদপুরে ভাঙ্গারি দোকানে গোপন নজরদারির মাধ্যমে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে না কেন?

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়