শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮:৪৬

নিয়তির নিষ্ঠুরতা

কবুল পড়ার সময়ে জানাজা হলো রনির

কামরুজ্জামান টুটুল
কবুল পড়ার সময়ে জানাজা হলো রনির

নিয়তি নিষ্ঠুর এটাই সত্য। যখন বসবে বিয়ের পিঁড়িতে, কাজী কবুল বলতে বলবে, ঠিক সেই সময়ে জানাজা পড়া হলো রনি মিজি (১৯) নামের এক যুবকের। কলেজ জীবনের সহপাঠীর সাথে প্রেমের সম্পর্কের কারণে পারিবারিকভাবে এ বিয়ের আয়োজন চলছিলো। ঠিক যখন ছেলে ও মেয়ের বাড়িতে একই সময় গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান চলছিলো, তখন ঘটে বিপত্তি। নিজ বাড়িতে নিজের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে স্ট্রোকের শিকার হয় রনি। তাৎক্ষণিক তাকে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান রনি। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫) জুম্মার নামাজের পর তার বিয়ে হওয়ার কথা। ঠিক যে সময় কবুল পড়ার কথা ঠিক সে সময়ে জানাজা হলো রনির।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫) রাতে হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটে হাজীগঞ্জের দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নের কাপাইকাপ গ্রামের মিজি বাড়িতে। রনি এ বাড়ির প্রবাসী বিল্লাল মিজির ছেলে। হবু বধূ প্রেমিক সহপাঠী পাশের শাহরাস্তি উপজেলার দেবকরা গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয় কাপাইকাপ গ্রামের একাধিক লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বছর রনি হাজীগঞ্জ মডেল সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে। কলেজের এক সহপাঠীর সাথে কলেজে পড়াকালীন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমের সম্পর্ক এবং পরবর্তীতে দু পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের তারিখ নির্ধারিত হয় শুক্রবার । নিকট আত্মীয়-স্বজনকে বিয়ের আমন্ত্রণ সহ সকল প্রস্তুতি ছিলো সম্পন্ন। পুরো বাড়িতে বিরাজ করছিলো উৎসবের আমেজ। গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে হলুদে বসে রনি। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন রনি। সবাই তাৎক্ষণিক তাকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে রওনা দেয়। পথিমধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে রনি। এ খবরে কনের বাড়ি আর রনির রাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে। শুক্রবার বাদ জুম্মা জনাজাশেষে রনিকে নিজ বাড়ির পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হয়। জানাজাতে কনের আত্মীয়স্বজনরা যোগ দেন।

রনির পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রনির মৃত্যুর খবরে বিয়ের পরিবর্তে উভয় বাড়িসহ এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। এতে করে প্রবাসে রনির বাবা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আর কনে ও কনের বাবাকে কুমিল্লার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কনে হাসপাতালে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তাহের প্রধানীয়া চাঁদপুর কণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রনি মিজির দাফন-কাফনে আমি উপস্থিত ছিলাম। রনির মতো তরতাজা যুবকের মৃত্যুতে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়