প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৫, ২২:৪১
রায়পুরে প্রধান ডাকঘরের নূতন ভবন নির্মাণের ৭ মাসেই দুরবস্থা
ছাদ চুইয়ে পানি পড়ছে।। সুপেয় পানি নেই, ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই

ডিজিটালভাবে আধুনিক ভবনে চিঠি আদান-প্রদানসহ বিভিন্ন সেবা দিতে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে প্রধান ডাকঘর ভবন নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়। একতলাবিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হলো, সাত মাস হতে চলছে। আজও সুপেয় পানি নেই ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাই করা হয়নি। একটি চাপ কল বসানো হয়েছে, তা দিয়ে আয়রন বের হচ্ছে। বৃষ্টি হলে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন ভবনের ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। সকল মালামাল নষ্ট হয়।
|আরো খবর
কর্মকর্তা ও সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ, ঠিকাদারের নিম্নমানের কাজ ও ডাক বিভাগের প্রকৌশলের সঠিক তদারকির অবহেলার কারণে এই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে নোয়াখালির ঠিকাদার শাকিল হোসেন বলেন, ভবনটি নির্মাণের সময় প্রকৌশলীরা আমাকে সঠিক সময়ে সঠিকভাবে টাকা দিয়ে সহযোগিতা দেননি। তাই ভবন নির্মাণে কিছুটা অনিয়ম হয়েছে। তবে চট্টগ্রামের দুই প্রকৌশলী বলেছেন, পরপর তিনজন ঠিকাদারের অনিয়মের কারণেই ডাকঘর ভবন নির্মাণ কাজ তিন বছরে শেষ করা হয়েছিলো।
রায়পুরে শহরের মাছবাজার সংলগ্ন উপজেলা পোস্ট অফিসসহ তাদের দুটি শাখা অফিস রয়েছে রাখালিয়া ও হায়দরগঞ্জ বাজারে। তাদের ১০ ইউনিয়নে উপশাখা রয়েছে ১৫টি। সংশ্লিষ্টরা জানান, আধুনিকভাবে ডিজিটাল সেন্টার তৈরিতে নতুন ভবন তৈরির লক্ষ্যে ২০১৯-২০ সালে প্রকল্পে রায়পুর উপজেলায় শুরু হয় পোস্ট অফিস ভবন নির্মাণ । এই ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলো ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফনেক্স ইন্টারন্যাশনাল।
ভবন নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছিলো ৯৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। কিন্তু ৪ বছর পর ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করা হয়। এ কাজের জন্যে ঢাকার ডাক বিভাগ থেকে সৈকত নামে ফেনীর এক ঠিকাদার কাজ শুরু করেছিলেন। এই ঠিকাদার নিম্নমানের কংকর (ইট, সিমেন্ট ও রড) দিয়ে ছাদ ঢালাই দিয়ে কাজ করে বন্ধ করে দিয়েছিলো। তৃতীয়বারের মতো শাকিল নামের নোয়াখালীর খলিফারহাট এলাকার এক ঠিকারদারকে দিয়ে ভবনের কাজ করানো হয়। কিন্তু ৬ মাস কিছু কাজ করার পর সেও চলে যায়।
ঠিকাদার শাকিল জানান, মূলত কাজটি পায় কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন কোটি টাকায়। পরে সাব-কন্ট্রাক্ট নেয় সৈকত নামের ফেনীর আরেক ঠিকাদার। তাদের টাকা না দেওয়ায় কাজ ফেলে চলে গিয়েছিলো।
ডাক বিভাগের চট্টগ্রাম সার্কেলের তৎকালীন প্রকৌশলী শাকিল আহম্মেদ বলেন, ভবনটি নির্মাণে ঠিকারদের অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছিলাম। পরে কাজটি শেষ করা হয়।
লক্ষ্মীপুর জেলা পোস্ট মাস্টার অমল কৃন্ষ দাশ ও রায়পুরের পোস্ট মাস্টার গিয়াস উদ্দিন বলেন, প্রায় কোটি টাকা ব্যায়ে ডাক ভবনটি নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। এক তলাবিশিষ্ট ভবনের কাজ প্রায় ৪ বছরে শেষ হলেও এখন সুপেয় পানি নেই (কল) ও ড্রেনেজ ব্যাবস্থা করা হয়নি। বৃষ্টি হলে নতুন ভবনের ছাদ চুইয়ে পানি পড়ছে ও নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়। ঠিকাদারের নিম্নমানের কাজ ও ডাক বিভাগের প্রকৌশলের তদারকির অবহেলার কারণে গত সাত মাস ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছি।