প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৩৬
কাজী ফজলুল করিমের জন্যে শুভ কামনা

দীর্ঘ ১৬ বছর পর পুলিশ অধিদফতরের ডিআইজি থেকে পুলিশের অতিরিক্ত আইজি পদে পদোন্নতি পেয়েছেন কচুয়া উপজেলার কৃতী সন্তান কাজী মো. ফজলুল করিম। ১৫তম বিসিএস ক্যাডারের এই কর্মকর্তা কচুয়ার অশ্রাফপুর ইউনিয়নের পিপলকরা গ্রামের মাওলানা মো. আব্দুল করিমের জ্যেষ্ঠ পুত্র । শিক্ষাজীবনে তিনি চট্টগ্রামে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করেন। ২০০৯ সালের ১৪ মার্চ থেকে তাঁকে ওএসডি করে রাখা হয়েছিল। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তাঁকে ডিআইজি পদে পদোন্নতি দেয়া হয়। পরবর্তীতে সোমবার (১১ আগস্ট ২০২৫) পুলিশ অধিদফতরের ডিআইজি কাজী মো. ফজলুল করিমসহ পুলিশের সাত কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়ে অতিরিক্ত আইজিপি করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত আইজি কাজী মো. ফজলুল করিমের কর্মজীবনে ‘সৎ ও নিষ্ঠাবান’ কর্মকর্তা হিসেবে পুলিশ বিভাগে ও সরকারের কাছে তাঁর সুনাম রয়েছে।
|আরো খবর
সৎ ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা হলেই কেউ তরতর করে পদোন্নতি পেয়ে শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছে যাবেন-এটা আমাদের দেশে আশা করা যায় না। ক্ষমতাসীন দলের প্রিয়ভাজন/ অনুরাগভাজন হলেই আমাদের দেশে দ্রুত পদোন্নতি মিলে ও ভালো জায়গায় পোস্টিং হয়-এটা ওপেন সিক্রেট। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে কাজী মো. ফজলুল করিম বাংলাদেশ পুলিশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ অতিরিক্ত আইজিপি হতে পেরেছেন-সেটা কম কিসের। অবসরগ্রহণের কতোদিন পূর্বে তাঁর এই পদোন্নতি হলো জানি না। যদি সেটা ৩-৪ বছর পূর্বে হয়, তাহলে তিনি আইজিপি হবার সম্ভাবনা আছে-এমনটি প্রত্যাশা করলে দোষের কিছু নেই।
স্বাধীন বাংলাদেশে মহকুমা চাঁদপুর জেলায় উন্নীত হবার পূর্বে যিনি চাঁদপুরের শাহরাস্তির গর্বিত বাসিন্দা হিসেবে আইজিপি (১৯৭৬-১৯৭৮) হয়েছেন, তিনি হলেন শাহরাস্তির হোসেন আহমেদ। তারপর শাহরাস্তির যিনি আইজিপি হবার সমূহ সম্ভাবনায় উজ্জ্বল ছিলেন, তিনি রায়শ্রী ইউনিয়নের রওশন আরা বেগম। কিন্তু অতিরিক্ত আইজিপি থাকাবস্থায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের আওতায় আফ্রিকার কঙ্গোতে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ২০১৯ সালের ৪ মে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম নারী পুলিশ সুপার, যিনি মুন্সিগঞ্জে দায়িত্ব পালনকালীন সাহসিকতার সাথে ডাকাত দলকে পাকড়াও করে রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) পেয়েছিলেন। দুর্ভাগ্য তাঁকে তাড়া করে ফেরায় তিনি বেঁচে না থাকায় আইজিপি হতে পারেন নি। তবে সৌভাগ্য ও রাজনৈতিক আনুকূল্যে তাঁর সিনিয়র, চাঁদপুর সদর উপজেলার মান্দারী গ্রামের বাসিন্দা ড. মো. জাভেদ পাটোয়ারী আইজিপি (১ জানুয়ারি ২০১৮ থেকে ১৫ এপ্রিল ২০২০) হতে পেরেছেন এবং এ পদ থেকে অবসরগ্রহণের পর সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূতও হতে পেরেছিলেন। চাঁদপুর জেলার কৃতী সন্তানদের মধ্যে আরো ক’জন অতিরিক্ত আইজিপি হলেও তাঁরা আইজিপি হতে পারেন নি। কাজী মো. ফজলুল করিম চাঁদপুর জেলার কৃতী সন্তান হিসেবে সর্বশেষ অতিরিক্ত আইজিপি হলেন। তিনি সব ধরনের আনুকূল্য পেয়ে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) হন সেটা মনেপ্রাণে প্রত্যাশা করি। তাঁর জন্যে নিরন্তর শুভ কামনা থাকলো।