বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫  |   ২৯ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৩ জুলাই ২০২৫, ০৯:০৩

হৃদয়ে রক্তক্ষরণ : প্রবল শোক

অনলাইন ডেস্ক
হৃদয়ে রক্তক্ষরণ : প্রবল শোক

সোমবার (২১ জুলাই ২০২৫) দুপুর ১টার পর রাজধানীর উত্তরায় দুর্ঘটনায় পড়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান। বিমানটি উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে গিয়ে পড়ে এবং বিধ্বস্ত হয়। সঙ্গে সঙ্গে বিমান ও স্কুল ভবনটিতে আগুন ধরে যায়। যে ভবনে এটি বিধ্বস্ত হয় সেখানে বহু স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থী ছিলো বলে জানা গেছে। যাদের বেশিরভাগই হতাহত হয়েছে। দুর্ঘটনার পরপর উদ্ধার অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। উত্তরাসহ আশপাশের ৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং হতাহতদের উদ্ধার করা শুরু করে। পরে উদ্ধার অভিযানে যোগ দেয় বিজিবি ও সেনাবাহিনী। বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে হতাহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় দগ্ধ বহুজনকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। যারা সবাই গুরুতর দগ্ধ হয়েছে। এছাড়া উত্তরা এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে আরও বহু দগ্ধ ও আহত শিক্ষার্থী ভর্তি আছে। এ ঘটনায় শোক জানিয়ে বার্তা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।

বাংলাদেশের স্মরণাতীতকালের ইতিহাসে উত্তরায় সংঘটিত প্রশিক্ষণ বিমানের দুর্ঘটনাটিই অনেক বড়ো ট্র্যাজেডি বললে ভুল হবে না। এর আগে প্রশিক্ষণ বিমানের যেসব দুর্ঘটনা হয়েছে, তাতে হতাহতের সংখ্যা ছিলো সামান্য। বড়োজোর পাইলট ও সহযাত্রী প্রাণ হারিয়েছে। কিন্তু এবার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস চলাকালীন বিধ্বস্ত হওয়ায় শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীরা যেভাবে হতাহত হয়েছে, তাতে পুরো দেশ শোকস্তব্ধ হয়েছে। সংবেদনশীল প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে হয়েছে রক্তক্ষরণ। এ দুর্ঘটনার মর্মান্তিকতায় পাষাণ হৃদয়ও বিগলিত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হয়েছে। চাঁদপুর কণ্ঠ পরিবারও প্রবলভাবে শোকার্ত। সমভাবে ক্ষুব্ধও।

অসংখ্য মানুষের ক্ষোভতাড়িত কথা : প্রশিক্ষণ বিমানের রুট নির্ধারণ করেছে কারা? এরা কি সুস্থ মস্তিষ্কের কিংবা যোগ্যতা বা অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মানুষ? এরা কি রাজধানীর মতো কোনো জনবহুল শহরের ওপর দিয়ে প্রশিক্ষণ বিমান চালানোর রুট নির্ধারণ করতে পারে? শোক-সমবেদনা জানিয়ে, আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়ে, জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে কি বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রশিক্ষণ বিমানের রুট নির্ধারণের ভুলের মাশুল দিতে পারবে? প্রশিক্ষণ কাজের দায়িত্বশীলদের মধ্যে যাদের ভুলের কারণে এতো প্রাণ ঝরে গেলো, তাদেরকে প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ড দিয়েও কি ক্ষোভ প্রশমিত করা সম্ভব হবে? নিশ্চয়ই নয়। তবে এ ভুল থেকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে চিরদিনের জন্যে নিতে হবে চূড়ান্ত শিক্ষা। সাগর, হাওড়, বাঁওড়, বিল ও পাহাড়ের যেসব এলাকা মনুষ্যহীন, বিমানের রূট করতে হবে সেসব এলাকাকে, যাতে দুর্ঘটনা ঘটলেও হতাহত কম হয়।

আমরা রাজধানীর উত্তরায় প্রশিক্ষণ বিমানের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় হতাহতদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। যারা মারা গেছে, তাদের আত্মার মাগফেরাত এবং আহতদের আশু আরোগ্য কামনা করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়