শনিবার, ০৭ জুন, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পরপরই তার্কিশ এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনে আগুন

প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২৫, ১৬:৫৮

সেবার ব্রত নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারাই প্রকৃত মানবতা--বললেন অ্যাড. তাপস

নিজস্ব প্রতিবেদক
সেবার ব্রত নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারাই প্রকৃত মানবতা--বললেন অ্যাড. তাপস

অ্যাড. তাপস চন্দ্র সরকার কুমিল্লা আদালত অঙ্গনে এক পরিচিত মুখ। আইন পেশায় ভাল করার পাশাপাশি গণমাধ্যমকর্মী হিসেবেও সুনাম কুড়িয়েছেন। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ও চঞ্চল স্বভাবের তাপস বিভিন্ন খেলাধুলা ও প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন।

এই কর্মযোগী মানুষটি চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলার খাদেরগাঁও ইউনিয়নস্থিত লামচরীর এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৮০ সালের ৫ এপ্রিল পিতা নিখিল চন্দ্র সরকার ও মাতা যোগমায়া সরকারের ঘর আলোকিত করে জন্ম নেন। তাঁর পিতা ছিলেন একজন আইনজীবী সহকারী। তিনি ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি ইহলোকের মায়ামমতা ত্যাগ করে পরলোকগমন করেন (দিব্যান্ লোকান্ স্ব গচ্ছুত)। তাঁর পিতার স্বপ্ন ছিলো সন্তান একজন আইনজীবী হবে। সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় অবশেষে পিতার স্বপ্ন বায়স্তবায়ন হলেও আইনজীবী হিসেবে সন্তানকে দেখে যেতে পারেননি।

শিক্ষাজীবনে তাপস চন্দ্র সরকারকে স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা খুব ভালোবাসতেন। তিনি মতলব উপজেলার প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ ইন্দুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৯৫ সালে মাধ্যমিক পাস এবং কুমিল্লা অজিতগুহ মহাবিদ্যালয় থেকে ১৯৯৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক উর্ত্তীণ হয়ে কুমিল্লা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন নিমসার জুনাব আলী ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০০০ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তারপর বাবার অনুপ্রেরণায় কুমিল্লা আইন কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করে ২০১৬ সালের ১৪ মে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল হতে সনদপ্রাপ্ত হয়ে মানব সেবার ব্রত নিয়ে ৯ জুন মানব সেবার ব্রত নিয়ে কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতিতে যোগদান করে পেশাগত জীবনে আত্ম প্রকাশ করেন। হাঁটি হাঁটি পা পা করে আইন পেশায় সফলতার নবম বর্ষ পেরিয়ে দশম বর্ষে পদার্পণ করেছেন তিনি।

অ্যাড. তাপস আইন পেশায় যোগদানের পর একজন সিনিয়রের জুনিয়র হিসেবে পাঁচ বছরের অধিক সময় ধরে এই চ্যালেঞ্জিং পেশায় নিজের সর্বোচ্চ বিকাশ ঘটাতে দিন-রাত কাজ করেছেন দক্ষতার সাথে। এছাড়াও সনদপ্রাপ্তির পূর্বে সাংবাদিকতার পাশাপাশি প্রতিদিন সন্ধ্যায় সিনিয়র আইনজীবী মো. নূরুল আমিন ভূঁইয়ার সেরেস্তায় সততা, নিষ্ঠা ও প্রজ্ঞার সঙ্গে জুনিয়র হিসেবে কাজ করে দেওয়ানী মামলা বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেন।

আইন পেশায় যোগদানের গৌরবময় নয় বছর পেরিয়ে তাপস চন্দ্র সরকার তার স্বপ্ন ও সফলতার গল্প শুনিয়েছেন। তিনি বলেন, বাবার অনুপ্রেরণায় মানব সেবার ব্রত নিয়ে সাংবাদিক থেকে আইনজীবী পেশায় এসেছি। সবাই স্বপ্ন দেখে বড় হয়ে একটি সম্মানজনক পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করে ক্যারিয়ারকে উজ্জ্বল করবো। মানুষ ভেদে স্বপ্নও থাকে আলাদা আলাদা। তদুপরি যতোগুলো সম্মানজনক পেশা আছে তার মধ্যে আইনজীবী হলো একটি। দক্ষ আইনজীবী হতে চাইলে এ পেশার সাথে লেগে থাকতে হবে।

এ পেশায় যারা আসতে চান তাদের উদ্দেশ্যে তাপস চন্দ্র সরকার বলেন, "যারা শর্টকাট পথ খোঁজেন তাদের জন্যে আইন পেশা নয়। কোর্টের বারান্দায় এসে কিছু করতে পারছি না বলে অল্পতে হতাশ হয়ে পড়লে তাকে দিয়ে আইন পেশা হবে না। এ পেশায় লেগে থাকতে হবে। শুরুতেই কোনো টাকা পয়সা হবে না--এমন ধারণা নিয়ে পেশাকে ভালোবেসে শুরু করতে হবে। লেগে থাকলে টাকা পিছু ছুটবে। টাকা আপনার অজান্তেই যখন আসবে, তখন টাকা রাখার জায়গা পাওয়া যাবে না। ভালো আইনজীবী হতে পারলে টাকা আপনাকে অনুসরণ করবে।"

তিনি আরও বলেন, আইন পেশা সাধনার বিষয়; ধৈর্য থাকতে হবে। দেশে-বিদেশে সবচেয়ে পরিচিত ও চ্যালেঞ্জিং পেশাগুলোর একটি হলো আইন পেশা। জ্ঞান, প্রজ্ঞা, মেধা, বিচক্ষণতা, বিচার বিশ্লেষণী ক্ষমতা, পেশাদারিত্ব, দায়িত্ববোধ, সততা, পরিচ্ছন্ন আচরণ-ভূষণ দ্বারা নিজ পেশার মর্যাদা উজ্জ্বল করাটাই একজন আইনজীবীর দায়িত্ব। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায়, সমাজ ও রাষ্ট্রের মঙ্গলে দেশের কল্যাণমুখী রাজনীতিতে অ্যাডভোকেটদের সক্রিয় প্রতিনিধিত্ব থাকবে--এটি স্বাভাবিক চিন্তা। আইন নিয়ে জীবিকা একটি মহান পেশা। তবে সেবার মনোভাব নিয়ে আইন পেশায় কাজ করতে হবে। এই পেশা একটি মহৎ পেশা। এর মাধ্যমে অধিকার বঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রাপ্তির বিষয়ে সহায়তা করা যায়। সেবার ব্রত নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারাই প্রকৃত মানবতা। সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে ধর্ম-বর্ণ, ধনী-দরিদ্র, বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণি পেশার মানুষ বিবেচনা করা যায় না। মানবিক মূল্যবোধ উজ্জীবিত হয়ে যে কোনো পরিস্থিতিতে অধিকার বঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রাপ্তির বিষয়ে সহায়তা করার সুযোগ একজন আইনজীবীর রয়েছে।

অ্যাড. তাপস বলেন, আত্মনির্ভরকেন্দ্রিক পেশার মধ্যে আইন পেশা হলো সবার পরিচিত একটি গুরুত্বপূর্ণ পেশা। সবাই স্বপ্ন দেখে বড়ো হয়ে একটি সম্মানজনক পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করে ক্যারিয়ারকে উজ্জ্বল করবে। মানুষ ভেদে স্বপ্নও থাকে আলাদা আলাদা। তদুপরি যতোগুলো সম্মানজনক পেশা আছে তার মধ্যে আইজীবী হলো একটি।

যারা এ পেশায় আসতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন- মানসিক প্রস্তুতিই হচ্ছে আইন পেশার প্রধান হাতিয়ার। আইন পেশার শুরুটা একটু চ্যালেঞ্জের, একটু দুর্গম। প্রথমে আয়-রোজগারের দিকে না তাকিয়ে কাজের প্রতি মনোযোগী হওয়া বাঞ্ছনীয়। একাডেমিক ফলের চেয়ে আইন পেশায় পেশাজীবনের মেধা, আইন সম্পর্কে খুঁটিনাটি জানাশোনা, পরিচিত, পরিশ্রম ও ধৈর্যই এনে দেবে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। এই পেশার চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনাকে উপলব্ধি করেই এগিয়ে যেতে হবে আগামীর সাফল্য পেতে।

এই তরুণ অ্যাড. তাপস চন্দ্র সরকারের ব্যক্তিগত জীবন সুখসমৃদ্ধময়। তাঁর সহধর্মিণী রিতা রাণী মজুমদার কুমিল্লা চান্দিনা উপজেলার ডুমুরিয়া মজুমদার বাড়ির সন্তান। তাহাদের একটি পুত্র ও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তিনি দীর্ঘ তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে কুমিল্লা কালিয়াজুরীতে ভাড়া বাসায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন।

এদিকে, তাপস চন্দ্র সরকার কুমিল্লা ভিত্তিক পাক্ষিক 'বিবর্তন' পত্রিকার মাধ্যমে সংবাদকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করে স্থানীয় দৈনিক আমাদের কুমিল্লায় ১০ বছরের অধিক সময় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন পত্রিকায় তাঁর লেখা সংবাদ ও আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে। তিনি দুই যুগেরও বেশি সময় জুড়ে সংবাদকর্মী হিসেবে সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে সংবাদ জগতে বিচরণ করছেন। তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়